ঢাকা ০৫:৩৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১০ মে ২০২৫, ২৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

বন্ধের পথে গাজায় বিনামূল্যে খাদ্য বিতরণ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১২:৫৫:২৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৯ মে ২০২৫
  • / ৩৫০ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

টানা দুই মাসের বেশি সময় ধরে ইসরাইল অবরোধে খাদ্য সামগ্রী ফুরিয়ে আসায় দু-এক দিনের মধ্যে বন্ধের পথে গাজায় উপত্যকায় বিনামূল্যে খাবার বিতরণ কার্যক্রম। প্রতিদিন ৪-৫ লাখ মানুষের মাঝে খাবার বিতরণ করা কমিউনিটির রান্নাঘরগুলো বন্ধের পথে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও, ক্ষুধায় মৃত্যুর হাত রক্ষায় নষ্ট-পঁচা খাবার মুখে তুলে নিচ্ছেন অনেক বাসিন্দা।

পোকায় ধরা নষ্ট আটা দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে রুটি। এমনকি ফেলনা পাস্তা গুড়ো করে রুটি তৈরি করছেন কেউ কেউ। এভাবেই ক্ষুধা নিবারণে লড়াই করছেন গাজাবাসী।

আগ্রাসনের মধ্যেই দুই মাসের বেশি সময় ধরে ইসরাইলি অবরোধে গাজায় কোনো ত্রাণ ও বাণিজ্যিক পণ্য না ঢোকায় এমন করুণ হাল অসহায় ফিলিস্তিনিদের। স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ যেনেও, ক্ষুধায় মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচার জন্য নষ্ট খাবার মুখে তুলে নিচ্ছেন তারা।

এক ফিলিস্তিনি অধিবাসী জানান, পোকামাকড় এবং বালিতে ভরা নষ্ট আটা-ময়দা খেতে হচ্ছে। বাধ্য হয়ে শিশুদেরও খাওয়াতে হচ্ছে। অথচ এগুলো গবাদি পশু এবং কোনো প্রাণী এটি খাবে না।

আরেকজন বলেন, ‘ইসরাইলি অবরোধে আজ আমরা দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি। যেটুকু নষ্ট ময়দা আছে তাও প্রায় শেষ। আমাদের শিশুদের কী দোষ, তারা কেনো ক্ষুধায় মারা যাবে?’

এমন খাদ্য সংকটের মধ্যেই জাতিসংঘের ২৫টি বেকারি বন্ধের পর, এবার ফিলিস্তিনের বেসরকারি সহায়তা সংস্থার ১৭০টি কমিউনিটি রান্নাঘরের খাদ্য মজুত ফুরিয়ে এসেছে।

একজন বলেন, ‘আমরা এখনও কমিউনিটি রান্নাঘরের কারণে বেঁচে আছি। সেখান থেকে খাবার এনে শুধু গরম করি। সেই পথও বন্ধের পথে। এখন ক্ষুধায় মারা যাওয়া ছাড়া হয়তো আর কোনো উপায় থাকবে না।’

কমিউনিটি রান্নাঘরে যতটুকু খাবার অবশিষ্ট আছে, তা দিয়ে ২-একদিনের বেশি যাবে না বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। এতে কমিউনিটি রান্নাঘরগুলো বন্ধের ঝুঁকিতে। আর এটি হলে ২৩ লাখ জনসংখ্যার গাজা উপত্যকায় প্রতিদিন ৪-৫ লাখ মানুষের মাঝে বিনামূল্যে খাবার বিতরণ বন্ধ হয়ে যাবে।

কমিউনিটি রান্নাঘর সংশ্লিষ্ট একজন জানান, খান ইউনিসের এ রান্নাঘরটি দশ হাজার বাস্তুচ্যুত পরিবারের জন্য খাবার সরবরাহ করে। টানা দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে ক্রসিং বন্ধ থাকার কারণে এটি বন্ধ হতে চলেছে। খাবার পর্যাপ্ত নেই।

খাদ্য সংকটে পরিস্থিতি প্রতিদিন আরও খারাপ হচ্ছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। প্রতিদিন অপুষ্টিতে ভোগা ৯-১০ হাজার শিশুর চিকিৎসার প্রয়োজন হলেও ওষুধের সংকটে তাও নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না। অবরুদ্ধ ভূখণ্ডে খাদ্য, পানি এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সাহায্যের অভাবে ২ মাসে অন্তত ৬০জন অনাহারে মারা গেছেন। নিহতদের বেশিরভাগই শিশু, অসুস্থ ও বয়স্ক ব্যক্তি।

নিউজটি শেয়ার করুন

বন্ধের পথে গাজায় বিনামূল্যে খাদ্য বিতরণ

আপডেট সময় : ১২:৫৫:২৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৯ মে ২০২৫

টানা দুই মাসের বেশি সময় ধরে ইসরাইল অবরোধে খাদ্য সামগ্রী ফুরিয়ে আসায় দু-এক দিনের মধ্যে বন্ধের পথে গাজায় উপত্যকায় বিনামূল্যে খাবার বিতরণ কার্যক্রম। প্রতিদিন ৪-৫ লাখ মানুষের মাঝে খাবার বিতরণ করা কমিউনিটির রান্নাঘরগুলো বন্ধের পথে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও, ক্ষুধায় মৃত্যুর হাত রক্ষায় নষ্ট-পঁচা খাবার মুখে তুলে নিচ্ছেন অনেক বাসিন্দা।

পোকায় ধরা নষ্ট আটা দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে রুটি। এমনকি ফেলনা পাস্তা গুড়ো করে রুটি তৈরি করছেন কেউ কেউ। এভাবেই ক্ষুধা নিবারণে লড়াই করছেন গাজাবাসী।

আগ্রাসনের মধ্যেই দুই মাসের বেশি সময় ধরে ইসরাইলি অবরোধে গাজায় কোনো ত্রাণ ও বাণিজ্যিক পণ্য না ঢোকায় এমন করুণ হাল অসহায় ফিলিস্তিনিদের। স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ যেনেও, ক্ষুধায় মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচার জন্য নষ্ট খাবার মুখে তুলে নিচ্ছেন তারা।

এক ফিলিস্তিনি অধিবাসী জানান, পোকামাকড় এবং বালিতে ভরা নষ্ট আটা-ময়দা খেতে হচ্ছে। বাধ্য হয়ে শিশুদেরও খাওয়াতে হচ্ছে। অথচ এগুলো গবাদি পশু এবং কোনো প্রাণী এটি খাবে না।

আরেকজন বলেন, ‘ইসরাইলি অবরোধে আজ আমরা দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি। যেটুকু নষ্ট ময়দা আছে তাও প্রায় শেষ। আমাদের শিশুদের কী দোষ, তারা কেনো ক্ষুধায় মারা যাবে?’

এমন খাদ্য সংকটের মধ্যেই জাতিসংঘের ২৫টি বেকারি বন্ধের পর, এবার ফিলিস্তিনের বেসরকারি সহায়তা সংস্থার ১৭০টি কমিউনিটি রান্নাঘরের খাদ্য মজুত ফুরিয়ে এসেছে।

একজন বলেন, ‘আমরা এখনও কমিউনিটি রান্নাঘরের কারণে বেঁচে আছি। সেখান থেকে খাবার এনে শুধু গরম করি। সেই পথও বন্ধের পথে। এখন ক্ষুধায় মারা যাওয়া ছাড়া হয়তো আর কোনো উপায় থাকবে না।’

কমিউনিটি রান্নাঘরে যতটুকু খাবার অবশিষ্ট আছে, তা দিয়ে ২-একদিনের বেশি যাবে না বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। এতে কমিউনিটি রান্নাঘরগুলো বন্ধের ঝুঁকিতে। আর এটি হলে ২৩ লাখ জনসংখ্যার গাজা উপত্যকায় প্রতিদিন ৪-৫ লাখ মানুষের মাঝে বিনামূল্যে খাবার বিতরণ বন্ধ হয়ে যাবে।

কমিউনিটি রান্নাঘর সংশ্লিষ্ট একজন জানান, খান ইউনিসের এ রান্নাঘরটি দশ হাজার বাস্তুচ্যুত পরিবারের জন্য খাবার সরবরাহ করে। টানা দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে ক্রসিং বন্ধ থাকার কারণে এটি বন্ধ হতে চলেছে। খাবার পর্যাপ্ত নেই।

খাদ্য সংকটে পরিস্থিতি প্রতিদিন আরও খারাপ হচ্ছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। প্রতিদিন অপুষ্টিতে ভোগা ৯-১০ হাজার শিশুর চিকিৎসার প্রয়োজন হলেও ওষুধের সংকটে তাও নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না। অবরুদ্ধ ভূখণ্ডে খাদ্য, পানি এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সাহায্যের অভাবে ২ মাসে অন্তত ৬০জন অনাহারে মারা গেছেন। নিহতদের বেশিরভাগই শিশু, অসুস্থ ও বয়স্ক ব্যক্তি।