ঢাকা ০৬:৩১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১২ মে ২০২৫, ২৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

যুদ্ধবিরতির মধ্যে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ ভারতের

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১২:১৮:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ মে ২০২৫
  • / ৩৫১ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

যুদ্ধবিরতির মধ্যে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সীমান্তবর্তী অঞ্চলে ড্রোন ও আর্টিলারি শেল হামলার অভিযোগ ভারতের। যদিও যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পরপরই সীমান্তের দুই প্রান্তে চলে মিষ্টি বিতরণ ও আনন্দ মিছিল। পাক প্রধানমন্ত্রী মার্কিন প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ জানালেও এখনো প্রতিক্রিয়া দেননি ভারতের সরকার প্রধান। এদিকে, ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি মেনে চললেও, তাদের সেনাবাহিনী সবসময় প্রস্তুত থাকবে।

ইতোমধ্যে কাশ্মীর ও রাজস্থানের বেশ কয়েকটি স্থানে পাকিস্তানের ড্রোন ভূপাতিতের দাবি করেছে ভারতীয় বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম। লাইন অফ কন্ট্রোলে আর্টিলারি শেল হামলার অভিযোগ মিলেছে। সীমান্তবর্তী ৪ রাজ্যের বেশ কয়েকটি জায়গায় দেখা গেছে ব্ল্যাকআউট। ভেরিফাইড এক্স হ্যান্ডেলে জম্মু কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ হামলার ভিডিও পোস্ট করে জানান, সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ রেখায় মানা হচ্ছে না যুদ্ধবিরতি।

অথচ যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পরপরই ফুল দিয়ে বরণ করা হয় সেনাদের। উর্দি ভিন্ন হলেও সবার অনুভূতি ছিল এক। শত্রুর বিরুদ্ধে দেশকে রক্ষায় বীরত্বের পরিচয় রাখায় ভারত ও পাকিস্তান দুই দেশের সেনাবাহিনী কুড়ায় জনসাধারণের প্রশংসা। টিভি, মুঠোফোন, রাস্তায় মিষ্টি বিতরণ কিংবা আনন্দ মিছিল, যার যার অবস্থান থেকে স্বস্তির মুহূর্তটি উদযাপন করেন সীমান্তের দুই প্রান্তের মানুষ।

বাসিন্দাদের একজন বলেন, ‘যুদ্ধ কখনো সমাধানের পথ হতে পারে না। সব সমাধান বৈঠকের মাধ্যমেই আসে।’

আরেকজন বলেন, ‘ট্রাম্প খুবই ভালো উদ্যোগ নিয়েছেন। পরিস্থিতি আরো খারাপ হবার আগেই তিনি যুদ্ধবিরতিতে দুপক্ষকে রাজি করিয়েছেন।’

উপমহাদেশের দুই পরাশক্তির মধ্যে টানা ৪ দিনের হামলা পাল্টা হামলার মধ্যে শনিবার বিকালে আসে কাঙ্ক্ষিত ঘোষণা। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতিতে দুইপক্ষের সম্মতির তথ্য নিশ্চিত করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রুথ সোশ্যালে দেয়া এক পোস্টে দুই দেশকে অভিনন্দন জানান তিনি। নেতৃত্ব ও সক্রিয় ভূমিকার মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখায় ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন পাক প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ৪৮ ঘণ্টা ধরে ভারত ও পাকিস্তানের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন তিনি। এতে সঙ্গ দিয়েছেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট। অস্ত্রবিরতির রূপরেখা নিয়ে দু’দেশের সরকার প্রধানকে বৈঠকে বসার আহ্বান জানান মার্কো রুবিও।

পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দাবি, যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব ও তুরস্কসহ যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতা করেছে ৩ ডজন দেশ। বিপরীতে ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব জানান, শনিবার স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা থেকে আকাশ, নৌ ও স্থল সীমায় একযোগে যুদ্ধ বন্ধ করার সিদ্বান্ত নিয়েছে নয়াদিল্লি ও ইসলামাবাদ। অস্ত্রবিরতি নিয়ে পরবর্তী আলোচনার উদ্দেশে সোমবার দু’দেশের প্রতিনিধির মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে বৈঠক।

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি বলেন, ‘ভারতের স্থানীয় সময় শনিবার (১০ মে) বিকেল ৫টা থেকে দুই পক্ষই স্থল, নৌ ও আকাশসীমায় সামরিক সংঘাত থেকে সরে আসতে সম্মত হয়েছে। দুই পক্ষকেই প্রয়োজনীয় নির্দেশনা সরবরাহ করা হয়েছে। সোমবার (১২ মে) দুপুর ১২টায় আবারও আলোচনায় বসবে দুই পক্ষ।’

যুদ্ধবিরিতি মেনে চললেও যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকবে ভারতীয় সেনাবাহিনী। যুদ্ধবিরতি নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানায় দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। গত ২২ এপ্রিল ভারতে জম্মু-কাশ্মীরে পেহেলগাম হত্যাকাণ্ডের জবাব দিতে পাকিস্তানে অপারেশনে সিন্দুর নামে অভিযান চালায় ভারত। এর জবাবে একাধিকবার ভারত ভূ-খণ্ডে মিসাইল ও ড্রোন হামলা চালায় পাকিস্তান।

নিউজটি শেয়ার করুন

যুদ্ধবিরতির মধ্যে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ ভারতের

আপডেট সময় : ১২:১৮:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ মে ২০২৫

যুদ্ধবিরতির মধ্যে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সীমান্তবর্তী অঞ্চলে ড্রোন ও আর্টিলারি শেল হামলার অভিযোগ ভারতের। যদিও যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পরপরই সীমান্তের দুই প্রান্তে চলে মিষ্টি বিতরণ ও আনন্দ মিছিল। পাক প্রধানমন্ত্রী মার্কিন প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ জানালেও এখনো প্রতিক্রিয়া দেননি ভারতের সরকার প্রধান। এদিকে, ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি মেনে চললেও, তাদের সেনাবাহিনী সবসময় প্রস্তুত থাকবে।

ইতোমধ্যে কাশ্মীর ও রাজস্থানের বেশ কয়েকটি স্থানে পাকিস্তানের ড্রোন ভূপাতিতের দাবি করেছে ভারতীয় বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম। লাইন অফ কন্ট্রোলে আর্টিলারি শেল হামলার অভিযোগ মিলেছে। সীমান্তবর্তী ৪ রাজ্যের বেশ কয়েকটি জায়গায় দেখা গেছে ব্ল্যাকআউট। ভেরিফাইড এক্স হ্যান্ডেলে জম্মু কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ হামলার ভিডিও পোস্ট করে জানান, সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ রেখায় মানা হচ্ছে না যুদ্ধবিরতি।

অথচ যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পরপরই ফুল দিয়ে বরণ করা হয় সেনাদের। উর্দি ভিন্ন হলেও সবার অনুভূতি ছিল এক। শত্রুর বিরুদ্ধে দেশকে রক্ষায় বীরত্বের পরিচয় রাখায় ভারত ও পাকিস্তান দুই দেশের সেনাবাহিনী কুড়ায় জনসাধারণের প্রশংসা। টিভি, মুঠোফোন, রাস্তায় মিষ্টি বিতরণ কিংবা আনন্দ মিছিল, যার যার অবস্থান থেকে স্বস্তির মুহূর্তটি উদযাপন করেন সীমান্তের দুই প্রান্তের মানুষ।

বাসিন্দাদের একজন বলেন, ‘যুদ্ধ কখনো সমাধানের পথ হতে পারে না। সব সমাধান বৈঠকের মাধ্যমেই আসে।’

আরেকজন বলেন, ‘ট্রাম্প খুবই ভালো উদ্যোগ নিয়েছেন। পরিস্থিতি আরো খারাপ হবার আগেই তিনি যুদ্ধবিরতিতে দুপক্ষকে রাজি করিয়েছেন।’

উপমহাদেশের দুই পরাশক্তির মধ্যে টানা ৪ দিনের হামলা পাল্টা হামলার মধ্যে শনিবার বিকালে আসে কাঙ্ক্ষিত ঘোষণা। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতিতে দুইপক্ষের সম্মতির তথ্য নিশ্চিত করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রুথ সোশ্যালে দেয়া এক পোস্টে দুই দেশকে অভিনন্দন জানান তিনি। নেতৃত্ব ও সক্রিয় ভূমিকার মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখায় ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন পাক প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ৪৮ ঘণ্টা ধরে ভারত ও পাকিস্তানের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন তিনি। এতে সঙ্গ দিয়েছেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট। অস্ত্রবিরতির রূপরেখা নিয়ে দু’দেশের সরকার প্রধানকে বৈঠকে বসার আহ্বান জানান মার্কো রুবিও।

পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দাবি, যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব ও তুরস্কসহ যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতা করেছে ৩ ডজন দেশ। বিপরীতে ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব জানান, শনিবার স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা থেকে আকাশ, নৌ ও স্থল সীমায় একযোগে যুদ্ধ বন্ধ করার সিদ্বান্ত নিয়েছে নয়াদিল্লি ও ইসলামাবাদ। অস্ত্রবিরতি নিয়ে পরবর্তী আলোচনার উদ্দেশে সোমবার দু’দেশের প্রতিনিধির মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে বৈঠক।

ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি বলেন, ‘ভারতের স্থানীয় সময় শনিবার (১০ মে) বিকেল ৫টা থেকে দুই পক্ষই স্থল, নৌ ও আকাশসীমায় সামরিক সংঘাত থেকে সরে আসতে সম্মত হয়েছে। দুই পক্ষকেই প্রয়োজনীয় নির্দেশনা সরবরাহ করা হয়েছে। সোমবার (১২ মে) দুপুর ১২টায় আবারও আলোচনায় বসবে দুই পক্ষ।’

যুদ্ধবিরিতি মেনে চললেও যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকবে ভারতীয় সেনাবাহিনী। যুদ্ধবিরতি নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানায় দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। গত ২২ এপ্রিল ভারতে জম্মু-কাশ্মীরে পেহেলগাম হত্যাকাণ্ডের জবাব দিতে পাকিস্তানে অপারেশনে সিন্দুর নামে অভিযান চালায় ভারত। এর জবাবে একাধিকবার ভারত ভূ-খণ্ডে মিসাইল ও ড্রোন হামলা চালায় পাকিস্তান।