সাংবাদিকদের নেতিবাচক ভূমিকা পর্যালোচনায় জাতিসংঘকে চিঠি দেবে সরকার

- আপডেট সময় : ০৩:৪৭:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ মে ২০২৫
- / ৩৪৫ বার পড়া হয়েছে

গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের সাংবাদিকদের নেতিবাচক ভূমিকা পর্যালোচনা করতে জাতিসংঘকে চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
সোমবার (১২ মে) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) আয়োজিত ‘মিট দ্য রিপোর্টার্স’ অনুষ্ঠানে প্রেস সচিব মোহাম্মদ শফিকুল আলম এ তথ্য জানান।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেন, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে আমরা জাতিসংঘকে চিঠি দেব। যাতে তাদের একটি বিশেষজ্ঞ টিম এসে বাংলাদেশের নেতিবাচক সাংবাদিকতা নিয়ে পর্যালোচনা করেন।
২০০৩ সালে আমেরিকার যেসব সাংবাদিক দেশটির সরকারকে প্ররোচিত করে ইরাকে আক্রমণে পাঠিয়েছে তাদেরকে নিয়ে অনেক লেখালেখি হয়েছে উল্লেখ করে শফিকুল আলম বলেন, এটা ভাবার কারণ নেই যে শুধু বাংলাদেশে এমন হচ্ছে। তখন আমেরিকার অনেক সাংবাদিক চাকরি হারিয়েছেন।
তিনি বলেন, আজকে বাংলাদেশে অনেক সাংবাদিক সুশীল সাজেন। তারা গত ১৫ বছরে এই কাজগুলো করেছেন। সাংবাদিকতা কোথায়-কোথায় ব্যর্থ হয়েছে, এ বিষয়গুলো আমরা জানতে চাই। তার জন্য জাতিসংঘের কাছে চিঠি দেব তারা যেন স্বাধীন বিশেষজ্ঞ এনে গত ১৫ বছরে আমাদের সাংবাদিকতা কী রকম হয়েছে তা নিয়ে রিভিউ করে।
বিগত বছরগুলোতে সাংবাদিকদের সংগঠনগুলো বিশেষ করে সাংবাদিক ইউনিয়ন সাংবাদিকদের সমস্যা নিয়ে নয়, সাংবাদিক নেতারা পূর্বাচলে প্লট নেওয়া নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দালালি ব্যস্ত ছিলেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. ইউনূস তার শাসন চলাকালে গ্রামীণ বিশ্ববিদ্যালয়, গ্রামীণ এমপ্লয়মেন্ট এজেন্সিসহ বেশ কিছু সুবিধা নিয়েছেন এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম বলেন, আপনি দেখেন যে এখানে (এসব প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন পাওয়ার ক্ষেত্রে) অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ বা ভূমিকা আছে কিনা? আর যে-সব প্রতিষ্ঠানের কথা বলছেন সেগুলো কোনোটাই ড. ইউনূসের ব্যক্তিগত কি-না? এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে তার কোনো শেয়ার আছে? এসব প্রতিষ্ঠান থেকে তিনি কোনো সুবিধা পান? আসলে কী এগুলো ড. ইউনূসের প্রতিষ্ঠান? গ্রামীণ নামটা না হয় ড. ইউনূস দিয়েছেন। তিনি এসব প্রতিষ্ঠানের একটা শেয়ারের মালিক কি-না? উনার তো ব্যক্তিগত কোনো সম্পত্তি আছে কোথায়? কেউ দেখাতে পারবে?
তিনি আরও বলেন, আপনারা বের করে দেখান যে এসব প্রতিষ্ঠান পাওয়ার ক্ষেত্রে আমরা বা সরকার কোনো ভূমিকা রেখেছে। আমি সবাইকে এসব বিষয়ে তদন্ত করার অনুরোধ জানাই।
গ্রামীণ এমপ্লয়মেন্ট এজেন্সি ২০০৯ সালে আবেদন করেছিল। ওই সময়ে ড. ইউনূস সৌদি আবর গিয়েছিলেন, সেখানে সৌদি ও জার্মানের একটা হাসপাতালে চেইন তাকে বলেছেন আপনি নার্স এবং হাসপাতাল স্টাফ পাঠান। তারা বাংলাদেশের নিয়মিত কর্মী পাঠানো এজেন্সির মাধ্যমে নেবে না। কারণ ড.ইউনূসের মাধ্যমে নিলে খরচ একদম সীমিত পর্যায়ে থাকবে। সেই আলোকে শেখ হাসিনার সরকারের আমলে লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছিলেন। কিন্তু তারা অনুমোদন দেয়নি। এখন ২০২৪ সালের পর যদি লাইসেন্সের অনুমোদন পায় তাহলে দোষ কি? বাংলাদেশে এই রকম সাড়ে ৩ হাজার এজেন্সি আছে।
তিনি আরও বলেন, তিনি গ্রামীণ বিশ্ববিদ্যালয় করতে চেয়েছিলেন ২০১২-১৪ সালের মধ্যে। ২০১৪ সালে পূর্বাচলে তার ২-৩ শত বিঘা জমি কেনা হয়েছিল। তখন যতবারই বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন কাছে আবেদন নিয়ে গিয়েছিলেন, ততবারই তারা বলেছিলেন আবেদন জমা দিয়েন না। আমরা অনুমতি দিতে পারবো না। এখন গত ৬ মাস অডিট করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
শফিকুল আলম বলেন, তিনি পুরো বিশ্বের বিখ্যাত অধ্যাপকদের আনতে চেয়েছিলেন, যেটা বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় হবে।
তথ্য উপদেষ্টার বাকস্বাধীনতা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম বলেন, কেন তিনি তা করেছেন সেটা ওনাকে জিজ্ঞাসা করেন। ফেসবুক তার ব্যক্তিগত বিষয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- ডিআরইউ সভাপতি আবু সালেহ আকন, সহ-সভাপতি গাজী আনোয়ার ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল।