বড় পরিসরে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছে ইরাক। এরই অংশ হিসেবে ১৯ হাজারের বেশি বন্দীকে মুক্তি দিয়েছে দেশটি, যার লক্ষ্য ছিল সশস্ত্র গোষ্ঠী আইএসআইএলের সদস্য হওয়ার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত বন্দীসহ অন্যান্য আসামি থাকা জনাকীর্ণ কারাগার ব্যবস্থার ওপর চাপ কমানো।
মঙ্গলবার (১৩ মে) বিচার বিভাগীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সন্ত্রাসবাদ সম্পর্কিত অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত কিছু ব্যক্তিকেও আইনি মুক্তি দেয়া হয়েছে।
নির্দেশনা অনুযায়ী, আইএসআইএলের প্রাক্তন সদস্যদেরসহ সকল মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করাও স্থগিত করেছে। ২০১৪ সালে দেশজুড়ে ব্যাপকভাবে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ার পর, মসুল, তিকরিত এবং ফালুজাসহ প্রধান শহরগুলো নিজেদের আয়ত্তে নিয়ে আইএসের শাখা সংগঠনটি একসময় ইরাকের প্রায় এক তৃতীয়াংশ ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণ করেছিল। তবে ২০১৭ সালে পরাজিত হয় তারা।
সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে পরিচিত গোষ্ঠীটি ইরাকের বিস্তৃত এলাকা নিয়ন্ত্রণের বছরগুলোতে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়। বাস্তুচ্যুত হয় লাখ লাখ মানুষ। সে সময় বিশাল এলাকা পরিণত হয়েছিল ধ্বংসস্তূপে। পরে ইরাকি বাহিনী আইএসআইএল-অধিষ্ঠিত অঞ্চলগুলো পুনরুদ্ধার করার সময় অনেক সদস্যকে গ্রেপ্তার করে।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে প্রণীত সাধারণ ক্ষমা আইনে সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত কিছু বন্দীকে মুক্তি, পুনর্বিচার অথবা তাদের মামলা খারিজ করার সুযোগ দেয়া হয়। তবে, "চরমপন্থার" সঙ্গে জড়িত হত্যাকাণ্ডের জন্য দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তিদের এ সুযোগ থেকে বাদ দেয়া হয়।
সুন্নি আইন প্রণেতারা এই আইনটিকে জোরালোভাবে সমর্থন করেছেন। তাদের অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে যুক্তি দিয়েছেন যে আইএসআইএলের বিরুদ্ধে ইরাকের কঠোর পদক্ষেপের পরের বছরগুলোতে সুন্নি সম্প্রদায়কে অপ্রতুলভাবে লক্ষ্যবস্তু করে তুলেছিল সন্ত্রাসবিরোধী আইন।
নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী হেফাজতে থাকাকালীন নির্যাতন বা বলপ্রয়োগের মাধ্যমে স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়েছে কিনা সে বিষয়টি এখন পুনর্বিচারের জন্য অনুরোধ করতে পারবেন আটক ব্যক্তিরা।
সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের সভাপতি ফায়েক জেইদানের সভাপতিত্বে বাগদাদে এক বৈঠকের পর, কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন যে জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত মুক্তি দেয়া হয়েছে ১৯ হাজার ৩৮১ জন বন্দীকে। সূত্র: আল জাজিরা