ঢাকা ১১:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫, ৩১ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

যুক্তরাজ্যে কঠোর অভিবাসন নীতি; সেবাখাতে বিপর্যয়ের আশঙ্কা

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৪:০১:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫
  • / ৩৫৭ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

যুক্তরাজ্যে অভিবাসন নীতি কঠোর হওয়ায় সেবামূলক প্রতিষ্ঠান, দাতব্য সংস্থা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করেছে কর্মী সংগঠনগুলো। সোমবার (১২ মে) ক্ষমতাসীন লেবার পার্টি নতুন অভিবাসন নীতি ঘোষণা করার পরপরই এ নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়।

নতুন নিয়ম অনুসারে, যুক্তরাজ্যে বসতি স্থাপন ও নাগরিকত্ব অর্জনের জন্য দেশটিতে বসবাসের সময়কাল ৫ বছর থেকে বাড়িয়ে ১০ বছর করা হয়েছে। নতুন এই নীতিমালার একটি শ্বেতপত্রও প্রকাশ করেছে যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

সাম্প্রতিক স্থানীয় নির্বাচনে অভিবাসন বিরোধী রিফর্ম পার্টির জয়ের পর অভিবাসী ইস্যুতে চাপের মুখে পড়েন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। অনিয়ন্ত্রিত সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে আনার বিষয়টি গেল বছর নিজের নির্বাচনী ইশতেহারেও যোগ করেছিলেন ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির এই নেতা।

অবশেষে গেল সোমবার নতুন অভিবাসন নীতিমালার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। নতুন নীতিমালা অনুসারে, যুক্তরাজ্যে কমপক্ষে ১০ বছর বসবাস করার আগে কেউ নাগরিকত্ব অর্জন করতে পারবেন না। পূর্বের নীতিতে এই সময়সীমা ছিল পাঁচ বছর।

পাশাপাশি, ইংরেজি ভাষায় দক্ষতার মানদণ্ডও আরও কঠোর করার ঘোষণা দিয়েছেন স্টারমার। নতুন নীতিতে, পোষ্য কোটায় প্রাপ্তবয়স্করা যুক্তরাজ্যে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে চাইলে তাদেরকেও ইংরেজি ভাষার প্রাথমিক জ্ঞানের প্রমাণ দিতে হবে।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বলেন, ‘অভিবাসন ব্যবস্থার প্রতিটি ক্ষেত্র অর্থাৎ কাজ, পরিবার এবং পড়াশোনার মতো বিষয়গুলোর নীতি আরও কঠোর করা হবে যাতে আমাদের নিয়ন্ত্রণ থাকে। দক্ষতার প্রমাণ দিতে ডিগ্রি আনতে হবে। ইংরেজি ভাষার দক্ষতা অর্জন করতে হবে প্রত্যেক আবেদনকারীকে। এছাড়াও, স্থায়ী মর্যাদা অর্জনের জন্য নির্ধারিত সময় ৫ বছর থেকে বাড়িয়ে ১০ বছর করা হয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণায় অভিবাসন-বিরোধীরা সন্তুষ্ট হলেও এ নিয়ে বিভাজন আছে। স্কটল্যান্ডের ডেপুটি ফার্স্ট মিনিস্টার কেইট ফোর্বস বিবিসিকে জানিয়েছেন, নতুন অভিবাসন নীতির কারণে সেবামূলক সংগঠন, দাতব্য সংস্থার মতো প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বিঘ্নিত হতে পারে।

তিনি মনে করেন, নতুন কৌশলের অংশ হিসেবে সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানে বিদেশি কর্মীদের নিয়োগ কমানোর পরিকল্পনা করছে যুক্তরাজ্যের শ্রম প্রশাসন । চলতি বছর কম-দক্ষ কর্মীদের ক্ষেত্রে ৫০ হাজার ভিসা কমানোর লক্ষ্য হাতে নিয়েছে প্রশাসন। এতেই চটেছে কর্মী সংগঠনগুলোও।

শ্রম ভিসা কঠিন করা ছাড়াও নতুন নীতি অনুযায়ী দণ্ডপ্রাপ্ত বিদেশিদের ওপর কড়া নজর রাখবে সরকার। যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইভেট কুপার নিশ্চিত করেছেন, নতুন নীতিতে যুক্তরাজ্যের মাটিতে কোনো বিদেশি নাগরিক ফৌজদারি অপরাধ করলে তাকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর বিধানও যুক্ত করা হবে।

এছাড়াও, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের কাছ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যে টিউশন ফি নিয়ে আসছে তার ওপরেও কর আরোপের বিষয়টি বিবেচনা করছে স্টারমার প্রশাসন।

যুক্তরাজ্যের সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গেল জুলাইয়ের নির্বাচনের পর থেকে অন্তত ২৪ হাজার জনকে নিজ দেশে ফেরত পাঠিয়েছে স্টারমার প্রশাসন। যাদের একজনেরও আইনগতভাবে যুক্তরাজ্যে থাকার অনুমতি ছিল না।

নিউজটি শেয়ার করুন

যুক্তরাজ্যে কঠোর অভিবাসন নীতি; সেবাখাতে বিপর্যয়ের আশঙ্কা

আপডেট সময় : ০৪:০১:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫

যুক্তরাজ্যে অভিবাসন নীতি কঠোর হওয়ায় সেবামূলক প্রতিষ্ঠান, দাতব্য সংস্থা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করেছে কর্মী সংগঠনগুলো। সোমবার (১২ মে) ক্ষমতাসীন লেবার পার্টি নতুন অভিবাসন নীতি ঘোষণা করার পরপরই এ নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়।

নতুন নিয়ম অনুসারে, যুক্তরাজ্যে বসতি স্থাপন ও নাগরিকত্ব অর্জনের জন্য দেশটিতে বসবাসের সময়কাল ৫ বছর থেকে বাড়িয়ে ১০ বছর করা হয়েছে। নতুন এই নীতিমালার একটি শ্বেতপত্রও প্রকাশ করেছে যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

সাম্প্রতিক স্থানীয় নির্বাচনে অভিবাসন বিরোধী রিফর্ম পার্টির জয়ের পর অভিবাসী ইস্যুতে চাপের মুখে পড়েন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। অনিয়ন্ত্রিত সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে আনার বিষয়টি গেল বছর নিজের নির্বাচনী ইশতেহারেও যোগ করেছিলেন ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির এই নেতা।

অবশেষে গেল সোমবার নতুন অভিবাসন নীতিমালার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। নতুন নীতিমালা অনুসারে, যুক্তরাজ্যে কমপক্ষে ১০ বছর বসবাস করার আগে কেউ নাগরিকত্ব অর্জন করতে পারবেন না। পূর্বের নীতিতে এই সময়সীমা ছিল পাঁচ বছর।

পাশাপাশি, ইংরেজি ভাষায় দক্ষতার মানদণ্ডও আরও কঠোর করার ঘোষণা দিয়েছেন স্টারমার। নতুন নীতিতে, পোষ্য কোটায় প্রাপ্তবয়স্করা যুক্তরাজ্যে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে চাইলে তাদেরকেও ইংরেজি ভাষার প্রাথমিক জ্ঞানের প্রমাণ দিতে হবে।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বলেন, ‘অভিবাসন ব্যবস্থার প্রতিটি ক্ষেত্র অর্থাৎ কাজ, পরিবার এবং পড়াশোনার মতো বিষয়গুলোর নীতি আরও কঠোর করা হবে যাতে আমাদের নিয়ন্ত্রণ থাকে। দক্ষতার প্রমাণ দিতে ডিগ্রি আনতে হবে। ইংরেজি ভাষার দক্ষতা অর্জন করতে হবে প্রত্যেক আবেদনকারীকে। এছাড়াও, স্থায়ী মর্যাদা অর্জনের জন্য নির্ধারিত সময় ৫ বছর থেকে বাড়িয়ে ১০ বছর করা হয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণায় অভিবাসন-বিরোধীরা সন্তুষ্ট হলেও এ নিয়ে বিভাজন আছে। স্কটল্যান্ডের ডেপুটি ফার্স্ট মিনিস্টার কেইট ফোর্বস বিবিসিকে জানিয়েছেন, নতুন অভিবাসন নীতির কারণে সেবামূলক সংগঠন, দাতব্য সংস্থার মতো প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বিঘ্নিত হতে পারে।

তিনি মনে করেন, নতুন কৌশলের অংশ হিসেবে সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানে বিদেশি কর্মীদের নিয়োগ কমানোর পরিকল্পনা করছে যুক্তরাজ্যের শ্রম প্রশাসন । চলতি বছর কম-দক্ষ কর্মীদের ক্ষেত্রে ৫০ হাজার ভিসা কমানোর লক্ষ্য হাতে নিয়েছে প্রশাসন। এতেই চটেছে কর্মী সংগঠনগুলোও।

শ্রম ভিসা কঠিন করা ছাড়াও নতুন নীতি অনুযায়ী দণ্ডপ্রাপ্ত বিদেশিদের ওপর কড়া নজর রাখবে সরকার। যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইভেট কুপার নিশ্চিত করেছেন, নতুন নীতিতে যুক্তরাজ্যের মাটিতে কোনো বিদেশি নাগরিক ফৌজদারি অপরাধ করলে তাকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর বিধানও যুক্ত করা হবে।

এছাড়াও, আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের কাছ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যে টিউশন ফি নিয়ে আসছে তার ওপরেও কর আরোপের বিষয়টি বিবেচনা করছে স্টারমার প্রশাসন।

যুক্তরাজ্যের সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গেল জুলাইয়ের নির্বাচনের পর থেকে অন্তত ২৪ হাজার জনকে নিজ দেশে ফেরত পাঠিয়েছে স্টারমার প্রশাসন। যাদের একজনেরও আইনগতভাবে যুক্তরাজ্যে থাকার অনুমতি ছিল না।