ভারতের সঙ্গে চলমান উত্তেজনা ও গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে কারাবন্দী সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফের সঙ্গে সংলাপে বসার পথে আরও একধাপ এগিয়েছে পাকিস্তানের শেহবাজ শরীফের সরকার। আদিয়ালা কারাগার থেকেই সরকার পক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি হয়েছেন খোদ ইমরান খান। এছাড়া, ভারতের প্রধানমন্ত্রীর পাকিস্তান বিদ্বেষের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে ইসলামাবাদকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। এদিকে, সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে কারামুক্ত করতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সহায়তা চেয়েছেন ইমরান পুত্র কাসিম ও সুলেমান খান।
ভারতের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানে সাফল্যের পর অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেও নিয়ন্ত্রণ আনার চেষ্টা করছে ক্ষমতাসীন শেহবাজ শরীফ প্রশাসন। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে দেশটির সরকারের সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাবে রাজি হয়েছেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের প্রতিষ্ঠাতা এবং কারাবন্দী সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ নিশ্চিত করেছে, পিটিআই চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার গোহর আলি খানের সঙ্গে আদিয়ালা কারাগারে সাক্ষাতের পর আলোচনার জন্য সবুজ সংকেত দিয়েছেন ইমরান। তবে ফলপ্রসূ আলোচনার জন্য চূড়ান্ত গোপনীয়তা ও টিভি ক্যামেরা না আনার শর্ত দিয়েছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী। পিটিআইয়ের পক্ষ থেকেও বলা হচ্ছে, অতীতে এমন অনেক আলোচনার প্রচেষ্টা মিডিয়ার নজরদারিতে ব্যর্থ হয়েছিল।
পিটিআই সূত্র বলছে, অচিরেই পাকিস্তান সরকারকে সংলাপের বিষয়ে কিছু প্রস্তাবনা পাঠাবে তেহরিক-ই-ইনসাফ। এরআগে, জাতীয় পরিষদের ভাষণে পিটিআইকে সংলাপে বসার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ। পিটিআই চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার গোহর প্রস্তাবটি স্বাগত জানালেও কারাবন্দী নেতার সম্মতি ছাড়া এই আলোচনা সম্ভব নয় বলে দাবি দেশটির স্থানীয় গণমাধ্যমের।
ভারতের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যে পাকিস্তানে রাজনৈতিক সমঝোতার দাবি বাড়ছে। তাই আসন্ন সংলাপ শেষ পর্যন্ত কোনো সফল সমাধানের পথ দেখাবে কী না সেদিকেই নজর দেশটির সাধারণ মানুষের।
এদিকে, আদিয়ালা কারাগার থেকে কাশ্মীর ইস্যুতে ইসলামাবাদকে সতর্ক বার্তা দিয়েছেন ইমরান খান। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাতের পর তার বোন আলীমা খান সাংবাদিককের বলেছেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পাকিস্তান বিদ্বেষ ভাবিয়ে তুলছে ইমরানকে। নয়াদিল্লির গতিবিধি আমলে নিয়ে সরকারকে বিচক্ষণ আচরণের পরামর্শ দিচ্ছেন কারাবন্দী এই নেতা।
অন্যদিকে, উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ইমরান খানকে আটকে রাখায় সামাজিক মাধ্যমে ক্ষোভ জানিয়েছে তার দুই পুত্র কাসিম ও সুলেমান খান। একটি পডকাস্টে অংশ নিয়ে তারা অভিযোগ করেন কারাগারে প্রতিদিন ইমরানের সঙ্গে অমানবিক আচরণ করা হচ্ছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী নিঃশর্ত মুক্তির জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সহায়তাও চেয়েছেন ইমরান পুত্রদ্বয়।