ঢাকা ০২:৫৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

‘দাবি মেনে নিয়েছে সরকার, আমরা ঘরে ফিরে যাব’

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১০:৪০:৩০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫
  • / ৩৪৪ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এখন আর কমপ্লিট শাটডাউনের দরকার নেই, কাল থেকে আমরা আমাদের ঘরে ফিরে যাব। জবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দিন এ কথা বলেন।

আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় সরকার দাবি মেনে নেওয়া আন্দোলন প্রত্যাহার করে গণমাধ্যমকে এসব কথা বলেন তিনি।

এ সময় তিনি বলেন, ‘আমাদের সুনির্দিষ্ট দাবি নিয়ে গত দুইদিন ধরে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে আলোচনা হয়েছে। গতকাল রাত আড়াইটার সময় আমাদের প্রতিনিধিকে ডাকা হয়েছিল। আমি আমার নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথা বলে সেখানে অংশ নিয়েছি। সেখানে কিছু বিষয় আমার কাছে অস্পষ্ট ছিল। আমি প্রশ্ন করেছি, আমি সন্তুষ্ট হতে পারি নাই। সেখান থেকে চলে এসেছি। পরে আমাদের অনড় অবস্থার কারণে সরকার আজ শুক্রবার সকাল ১১ টায় আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠক ডাকে। আমাদের প্রধান উপদেষ্টা দিক নির্দেশনা দিয়েছেন, তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। তাঁর দিকনির্দেশনার আলোকেই সংশ্লিষ্ট অর্থমন্ত্রণালয়, শিক্ষামন্ত্রণালয় ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় এবং ইউজিসি বৈঠক হয়। সেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আমাদেরকে ডাকা হয়েছিল। আমরা সেখানে তিনজন গিয়েছিলাম। সেখানে আমাদের বিস্তৃত আলোচনা হয়েছে।’

জবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমাদের যে দাবি ছিল সরকার সে দাবির প্রতি সহমত পোষণ করেছে। তবে আমরা অনেক দেখেছি করবো, করা হবে। আমরা দাবির বাস্তবিক প্রতিফলন ঘটাতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের প্রত্যকটি দাবি পূরণ হয়েছে। যারা এই দাবি আদায়ে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন তাদের নাম ইতিহাসে লেখা থাকবে।’

অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দিন বলেন, ‘আমরা সামনের জুনের বাজেটে সেই প্রতিফলন দেখব। আমাদের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অতি দ্রুত বাস্তবায়ন হবে। আমরা আমাদের ছাত্রপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা সবাই সন্তুষ্ট। আমরা ঘরে ফিরে যাব। সুস্পষ্ট বাস্তবায়ন হয়েছে, আমরা সন্তুষ্ট প্রকাশ করেছি তবে পরবর্তীতে গরিমসি দেখলে আবার রাস্তায় নামবে ছাত্র-শিক্ষকরা। এবং এর ধারাবাহিকতা পরবর্তী বাজেটগুলোতে যাতে অব্যহত থাকে আমরা সেই দাবি জানিয়ে এসেছি। আমাদের সেটাও আশ্বস্ত করা হয়েছে। আগামী সাত দিনের মধ্যে এসব দাবির বিষয়ে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

ড. মো. রইছ উদ্দিন জানান, অর্থ মন্ত্রণালয় ও উপদেষ্টার কার্যালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। আলোচনার পর জানানো হয়, বিভিন্ন দাবি মেনে নিয়েছে সরকার। আলোচনায় সরকারের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালন বাজেট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত আসে। বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের প্রথম দাবির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একই সাথে আবাসন সংকট নিরসনে খুব দ্রুত অস্থায়ী হল নির্মাণের কাজ শুরু করা হবে। দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অতি দ্রুত বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে বলেও জানানো হয়।

এর আগে গত মঙ্গলবার (১৩ মে) দুপুরে দাবি আদায়ে শিক্ষার্থী ও শিক্ষক প্রতিনিধির সমন্বয়ে একটি প্রতিনিধিদল ইউজিসিতে যান। কিন্তু ইউজিসি থেকে আশানুরূপ কোনো ঘোষণা না আসায় ‘লংমার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা। সেদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত ‘জুলাই ঐক্য’ সংগঠনের পক্ষ থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হয়।

পরে বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মৎস্যভবন পার হয়ে কাকরাইল মসজিদের ক্রসিংয়ে এলেই শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের লংমার্চে পুলিশের সংঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় পুলিশের টিয়ারগ্যাস ও লাঠিচার্জে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নেন অনেকে।

আজ টানা তৃতীয় দিন রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পরে বিকেল থেকে কাকরাইলে গণঅনশনের ঘোষণা দেয় শিক্ষার্থীরা। এরপর সন্ধ্যায় সরকার দাবি মেনে নেওয়ায় আন্দোলন প্রত্যাহার করল শিক্ষক–শিক্ষার্থীরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

‘দাবি মেনে নিয়েছে সরকার, আমরা ঘরে ফিরে যাব’

আপডেট সময় : ১০:৪০:৩০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এখন আর কমপ্লিট শাটডাউনের দরকার নেই, কাল থেকে আমরা আমাদের ঘরে ফিরে যাব। জবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দিন এ কথা বলেন।

আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় সরকার দাবি মেনে নেওয়া আন্দোলন প্রত্যাহার করে গণমাধ্যমকে এসব কথা বলেন তিনি।

এ সময় তিনি বলেন, ‘আমাদের সুনির্দিষ্ট দাবি নিয়ে গত দুইদিন ধরে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে আলোচনা হয়েছে। গতকাল রাত আড়াইটার সময় আমাদের প্রতিনিধিকে ডাকা হয়েছিল। আমি আমার নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথা বলে সেখানে অংশ নিয়েছি। সেখানে কিছু বিষয় আমার কাছে অস্পষ্ট ছিল। আমি প্রশ্ন করেছি, আমি সন্তুষ্ট হতে পারি নাই। সেখান থেকে চলে এসেছি। পরে আমাদের অনড় অবস্থার কারণে সরকার আজ শুক্রবার সকাল ১১ টায় আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠক ডাকে। আমাদের প্রধান উপদেষ্টা দিক নির্দেশনা দিয়েছেন, তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। তাঁর দিকনির্দেশনার আলোকেই সংশ্লিষ্ট অর্থমন্ত্রণালয়, শিক্ষামন্ত্রণালয় ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় এবং ইউজিসি বৈঠক হয়। সেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আমাদেরকে ডাকা হয়েছিল। আমরা সেখানে তিনজন গিয়েছিলাম। সেখানে আমাদের বিস্তৃত আলোচনা হয়েছে।’

জবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমাদের যে দাবি ছিল সরকার সে দাবির প্রতি সহমত পোষণ করেছে। তবে আমরা অনেক দেখেছি করবো, করা হবে। আমরা দাবির বাস্তবিক প্রতিফলন ঘটাতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের প্রত্যকটি দাবি পূরণ হয়েছে। যারা এই দাবি আদায়ে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন তাদের নাম ইতিহাসে লেখা থাকবে।’

অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দিন বলেন, ‘আমরা সামনের জুনের বাজেটে সেই প্রতিফলন দেখব। আমাদের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অতি দ্রুত বাস্তবায়ন হবে। আমরা আমাদের ছাত্রপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলেছি। আমরা সবাই সন্তুষ্ট। আমরা ঘরে ফিরে যাব। সুস্পষ্ট বাস্তবায়ন হয়েছে, আমরা সন্তুষ্ট প্রকাশ করেছি তবে পরবর্তীতে গরিমসি দেখলে আবার রাস্তায় নামবে ছাত্র-শিক্ষকরা। এবং এর ধারাবাহিকতা পরবর্তী বাজেটগুলোতে যাতে অব্যহত থাকে আমরা সেই দাবি জানিয়ে এসেছি। আমাদের সেটাও আশ্বস্ত করা হয়েছে। আগামী সাত দিনের মধ্যে এসব দাবির বিষয়ে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

ড. মো. রইছ উদ্দিন জানান, অর্থ মন্ত্রণালয় ও উপদেষ্টার কার্যালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। আলোচনার পর জানানো হয়, বিভিন্ন দাবি মেনে নিয়েছে সরকার। আলোচনায় সরকারের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালন বাজেট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত আসে। বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের প্রথম দাবির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একই সাথে আবাসন সংকট নিরসনে খুব দ্রুত অস্থায়ী হল নির্মাণের কাজ শুরু করা হবে। দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অতি দ্রুত বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে বলেও জানানো হয়।

এর আগে গত মঙ্গলবার (১৩ মে) দুপুরে দাবি আদায়ে শিক্ষার্থী ও শিক্ষক প্রতিনিধির সমন্বয়ে একটি প্রতিনিধিদল ইউজিসিতে যান। কিন্তু ইউজিসি থেকে আশানুরূপ কোনো ঘোষণা না আসায় ‘লংমার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা। সেদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত ‘জুলাই ঐক্য’ সংগঠনের পক্ষ থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হয়।

পরে বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মৎস্যভবন পার হয়ে কাকরাইল মসজিদের ক্রসিংয়ে এলেই শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের লংমার্চে পুলিশের সংঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় পুলিশের টিয়ারগ্যাস ও লাঠিচার্জে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নেন অনেকে।

আজ টানা তৃতীয় দিন রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পরে বিকেল থেকে কাকরাইলে গণঅনশনের ঘোষণা দেয় শিক্ষার্থীরা। এরপর সন্ধ্যায় সরকার দাবি মেনে নেওয়ায় আন্দোলন প্রত্যাহার করল শিক্ষক–শিক্ষার্থীরা।