বার্ড ফ্লু, বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞায় ব্রাজিলের পোল্ট্রি শিল্প

- আপডেট সময় : ০১:৩৩:৪১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ মে ২০২৫
- / ৩৫৩ বার পড়া হয়েছে

বার্ড ফ্লুর হানায় চীনসহ বিভিন্ন দেশের সাময়িক বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়লো বিশ্বের শীর্ষ মুরগি রপ্তানিকারক দেশ ব্রাজিল। প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ সতর্কতা ও তৎপরতার দাবি ব্রাজিলের কৃষি মন্ত্রণালয়ের। হাঁস-মুরগির মাংস বা ডিম খাওয়ার মাধ্যমে এ রোগ ছড়ায় না বলে দাবি দেশটির কৃষিমন্ত্রীর। বার্ড ফ্লুর প্রাদুর্ভাবে ব্রাজিলের পোল্ট্রি শিল্প সংকটের মুখোমুখি বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
পোল্ট্রি খামারের পাশেই মাটি খনন করে গর্তে রাখা হচ্ছে ডিমের ট্রেসহ মুরগী লালন-পালনকারী সরঞ্জাম। আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে মাটি চাপা।
শুক্রবার দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য রিও গ্র্যান্ডে দো সুলের মন্টিনিগ্রো শহরের একটি বাণিজ্যিক ফার্মে বার্ড ফ্লু’র প্রাদুর্ভাব ধরা পরার পর তা নিয়ন্ত্রণে তৎপরতা শুরু করে কৃষি মন্ত্রণালয়।
ব্রাজিলের পোল্ট্রি উৎপাদন এবং রপ্তানির ১৫ শতাংশই হয় এ রাজ্য থেকে। তাই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে প্রাদুর্ভাব কবলিত এলাকায় আইসোলেশন কার্যক্রম শুরু করেছেন পশু চিকিৎসকরা। ১০ কিলোমিটার অঞ্চল জুড়ে চলছে রোগ নির্ণয় কাজ। প্রটোকল অনুযায়ী চলছে আক্রান্ত মুরগি নিধন প্রক্রিয়া।
ব্রাজিলের রিও গ্র্যান্ডে ডো সুলের কৃষি সচিব এডিভিলসন ব্রুম বলেন, ‘মন্টিনিগ্রোর একটি বাণিজ্যিক খামারে বার্ড ফ্লু হয়েছিল। প্রোটোকলের বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এই সমস্ত কাজ করার জন্য আমাদের দক্ষতা এবং প্রযুক্তিগত ক্ষমতা রয়েছে।’
বার্ড ফ্লুর হানায় ব্রাজিল থেকে এরইমধ্যে মুরগির মাংস আমদানিকারক চীন, ইউরোপসহ অন্যান্য দেশগুলো সাময়িকভাবে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এ অবস্থায় হাঁস-মুরগির মাংস বা ডিম খাওয়ার মাধ্যমে এই রোগ ছড়ায় না বলে দাবি দেশটির কৃষি মন্ত্রণালয়ের। এমনকি যেভাবে সতর্কতা জারি করা হয়েছে তাতে ভয় পাওয়ার কারণ নেই বলেও আশ্বস্ত করেন দেশটির কৃষিমন্ত্রী।
ব্রাজিলের কৃষিমন্ত্রী কার্লোস ফাভারো বলেন, ‘মুরগির মাংস এবং ডিম খাওয়ার ফলে মানুষের সংক্রামিত হওয়ার কোনও ঝুঁকি নেই। কোনও উদ্বেগ ছাড়াই এগুলো খেতে পারেন। যেহেতু মানুষ মুরগির মাংস স্বাভাবিক অবস্থায় খেতে পারে না, তাই ভয় পাওয়ার কারণ নেই।’
অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বার্ড ফ্লু প্রাদুর্ভাবের কারণে সংকটের মুখোমুখি ব্রাজিলের পোল্ট্রি শিল্প। বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার ফলে ব্রাজিলের উৎপাদনও ২৫ শতাংশ কমার শঙ্কা করা হচ্ছে। যা বিশ্বব্যাপী মুরগির বা মুরগির মাংসের দামকে প্রভাবিত করবে বলেও শঙ্কা বিশ্লেষকদের।
অর্থনৈতিক বিশ্লেষক গিলবার্তো ব্রাগা বলেন, ‘ব্রাজিলে বার্ড ফ্লুর কারণে বিশ্বব্যাপী মুরগির দাম ব্যয়বহুল হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রে বার্ড ফ্লুর কারণে এরইমধ্যে সমস্যা চলমান ছিল। যার কারণে আমরা দেখতে পেয়েছি যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। ফলে দেশটিতে ডিমের দামও খুব ব্যয়বহুল হয়েছে।’
২০২৪ সালে ব্রাজিল ১০ বিলিয়ন ডলারের মুরগির মাংস রপ্তানি করেছে। যা বৈশ্বিক মুরগির মাংস বাণিজ্যের ৩৫ শতাংশ। এই রপ্তানির বড় অংশই এসেছে প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রতিষ্ঠান বিআরএফ এবং কেবিএসের কাছ থেকে। প্রতিষ্ঠান দুটি বিশ্বের ১৫০টি দেশে মাংস রপ্তানি করে।