গাজায় চলমান সংঘাত বন্ধ করার জন্য ইসরাইলের ওপর চাপ বাড়ছে। যুক্তরাজ্য, কানাডা ও ফ্রান্স স্পষ্টভাবে ইসরাইলকে নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুঁশিয়ারি দিয়েছে। একইসঙ্গে এই তিনটি দেশ গাজা উপত্যকায় মানবিক সহায়তা প্রবেশের ক্ষেত্রে ইসরাইলের ওপর জোর দিচ্ছে। তাদের ভাষ্য, অবরুদ্ধ গাজার জনগণের জন্য জরুরি ত্রাণ সরবরাহ নিশ্চিত করা ইসরাইলের দায়িত্ব।
তবে, ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আন্তর্জাতিক মহলের এই চাপকে উপেক্ষা করে গাজায় তাদের সামরিক অভিযান অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি স্পষ্ট করে জানিয়েছেন যে, যতক্ষণ না তাদের লক্ষ্য অর্জিত হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত গাজায় অভিযান চলবে।
দীর্ঘ প্রায় আড়াই মাস পর গাজায় ৯ ট্রাক জরুরি ত্রাণ প্রবেশ করেছে। তবে জাতিসংঘ এই সীমিত পরিসরের খাদ্য সাহায্যকে ‘মহাসমুদ্রে এক ফোঁটা জল’ বলে অভিহিত করেছে। তাদের মতে, গাজার বিপুল সংখ্যক মানুষের খাদ্য ও অন্যান্য জরুরি প্রয়োজন মেটাতে প্রতিদিন গড়ে ৫০০ ট্রাক ত্রাণ সামগ্রীর প্রয়োজন। বর্তমানে যে পরিমাণ ত্রাণ প্রবেশ করেছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই নগণ্য।
এদিকে, গাজা উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত খান ইউনিস শহরে ইসরাইলের বোমা হামলায় নিহতের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, এই হামলায় ৮৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। জাতিসংঘের দাবি, ইসরাইলের ব্যাপক bombing-এর কারণে গত চার দিনে শুধুমাত্র খান ইউনিস এলাকা থেকেই প্রায় এক লাখ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। এতে সেখানকার মানবিক পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার এবং সেখানে পর্যাপ্ত পরিমাণে মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর জন্য ইসরাইলের উপর আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বিবেচনা করছে। তবে ইসরাইলের অনড় অবস্থান এই অঞ্চলের ভবিষ্যৎকে আরও অনিশ্চিত করে তুলেছে।
উল্লেখ্য, গাজায় হামাস নির্মূলের নামে নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চলছেই। ইসরাইলি বাহিনীর অপারেশন ‘গিডিয়নস চ্যারিয়টে’ গেল তিন দিনে প্রায় ৫০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। সোমবার (১৯ মে) এক ঘণ্টার ব্যবধানে উপত্যকাটিতে ৩০ বারের বেশি বিমান হামলা চালায় আইডিএফ।
তাণ্ডব চালানো হয় দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিস শহরের আল নাসের হাসপাতালেও। এরমধ্যেই আন্তর্জাতিক চাপে পড়ে গাজায় সীমিত পরিসরে ত্রাণ সহায়তা প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে ইসরাইল।