ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ড পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। গাজাজুড়ে হামলা আরও জোরদারের পর এমন অঙ্গীকারের ঘোষণা এল। বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।
নেতানিয়াহু টেলিগ্রামে প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘গাজায় তীব্র লড়াই চলছে এবং আমাদের অগ্রগতি হচ্ছে। আমরা পুরো ভূখণ্ডটির নিয়ন্ত্রণ নেব।’
সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানায়, গাজায় নতুন করে ইসরায়েলের হামলা জোরদারের পর গত দুই দিনে দুই শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে অনেকে। এ ছাড়া বাস্তুচ্যূত হয়েছে খান ইউনিসের ৯০ শতাংশ বাসিন্দা।
এদিকে দুই মাসের বেশি সময় পর প্রথমবারের মতো গাজায় কিছু ত্রাণ প্রবেশ করেছে। তবে জাতিসংঘ ও অন্যান্য সংস্থা বলছে, এই ত্রাণ সহায়তা প্রয়োজনের তুলনায় অতি সামান্য।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইও) জানিয়েছে, চলতি বছরের ২ মার্চ থেকে সম্পূর্ণ অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার প্রায় ২০ লাখ মানুষ অনাহারে ভুগছেন। জরুরি ভিত্তিতে খাবার, পানি, ওষুধ ও জ্বালানি না পৌঁছালে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে।
ডব্লিউএইও প্রধান তেদ্রোস আধানম গেব্রিয়েসুস বলেন, ‘বিপুল পরিমাণ খাবার অপেক্ষমাণ, অথচ কয়েক মিনিট দূরেই অবস্থানরত ক্ষুধার্ত মানুষদের কাছে পৌঁছানো যাচ্ছে না। মানবিক সহায়তা ইচ্ছাকৃতভাবে আটকে রাখার ফলে গাজাবাসীর দুর্ভিক্ষের ঝুঁকি বাড়ছে।’
এমন অবস্থায় ইসরায়েলের কঠোর সমালোচনা করেছেন যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও কানাডা। দেশগুলোর নেতারা গাজায় ইসরায়েলের অভিযান, ত্রাণ প্রবেশ বাধা এবং সাধারণ মানুষকে স্থানচ্যুত করার বিরোধিতা করেছেন।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, ‘নেতানিয়াহুর সরকার এসব কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে থাকলে আমরা চুপ করে থাকব না।’
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সংস্থা ওসিএইচআর জানিয়েছে, গাজায় ইসরায়েলের কার্যকলাপ আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের শামিল এবং জাতিগত নিধনের মতো অপরাধের কাছাকাছি। হামাসবিরোধী অভিযানে সাধারণ মানুষকে স্থানচ্যুত করা, বসতবাড়ি ও স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়া এবং ত্রাণ আটকে দেওয়ার ঘটনা উদ্বেগজনক।