ঢাকা ০৭:১৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

দিনাজপুরে পচা গমের মজুদ, জেলা প্রশাসন কিছু জানেনা

দিনাজপুর প্রতিনিধি
  • আপডেট সময় : ১২:২৫:২৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫
  • / ৩৬৪ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

দিনাজপুরে জেলা প্রশাসন অভিযান চালিয়ে শহরের পুলহাট এলাকার হাজী অটো রাইস মিলের চাতালে ১২শ বস্তা পচা গম জব্দ করেছে। এ বিষয় কাউকে কোন জরিমানা করা হয়নি। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গম জব্দের বিষয় কোন কিছু জানানো হয়নি। ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক, সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং এডিসি জেনারেল কেউ এব্যাপারে কথা বলতে রাজি হয়নি।

গত সোমবার (২১ এপ্রিল) গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক বোরহান উদ্দিন, জেলা প্রশাসকের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অভ্র জ্যোতি বড়াল, অতিরিক্ত জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ড. মোঃ গোলাম কিবরিয়া, নিরাপদ খাদ্য অফিসার গৌতম কুমার সাহা, জেলা সহকারী খাদ্য নিয়ন্ত্রক ফারজানা ইসলাম সমন্বয়ে শহরে পুলহাট বিসিক এলাকায় অভিযান চালিয়ে হাজী অটো রাইছ মিলের চাতাল ১২শ বস্তা গম জব্দ করে।

এ সময় স্তুপ করে রাখা বস্তাগুলোর মুখ খুলতেই পচা ও দুর্গন্ধযুক্ত গম। যা কোনোভাবেই খাওয়ার উপযোগী নয়। স্থানীয় শ্রমিকরা জানায়, ভালো গমের আটার সাথে এই পচা গমগুলোর আটা মিশিয়ে বাজারে বিক্রির উদ্দেশ্যে শুকানো হচ্ছিল।

এ বিষয়ে দিনাজপুরে পাটোয়ারী বিজনেস হাউজের স্বত্বাধিকারী শহীদুর রহমান পাটোয়ারী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, যশোর জেলার নোয়াপাড়া থেকে ট্রাকে করে গম আনার সময় বৃষ্টির পানিতে ভিজে গিয়েছিল। ট্রাকের উপর ত্রিপল না থাকায় বৃষ্টিতে ভিজে গমগুলো পচে যায়।

অভিযান কালে এই ঘটনায় কোনো জরিমানা করা না হলেও তাৎক্ষনিকভাবে জব্দকৃত ১২শ বস্তা পঁচা গম পাটোয়ারী বিজনেস হাউসের ট্রাকে লোড করে পুর্নভবা নদীতে ফেলে দিয়ে ধ্বংস করা হয়। পরদিন ২২এপ্রিল পুনরায় অভিযান চালিয়ে মিলের গোডাউন থেকে ১৯ বস্তা পঁচা গম উদ্ধার করা হয়।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয় সুত্রে জানা যায়, দিনাজপুর জেলায় ৬ জন মিল ব্যবসায়ীর মাধ্যমে আটা সরবরাহ করা হয়। তারমধ্যে দিনাজপুর সদরে ২ জনের মধ্যে সহিদুর রহমান পাটোয়ারীর আটা সরবরাহ স্থগিত করা হয়। এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ওএমএস ডিলার জানায়, তার পয়েন্টে লাইন ধরে আটা নিতে আসা লোকজন পঁচা গমের আটার রুটি খেয়ে পেটের পীড়া ও ডাইরিয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে।

এ ব্যাপারে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক বোরহান উদ্দিনের মূঠোফোনে পঁচা গম জব্দের কোনো জরিমানা করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি জেলা প্রশাসকের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অভ্র জ্যোতি বড়াল এর নিকট যেতে বলেন।

সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অভ্র জ্যোতি বড়াল বলেন, আমি এব্যাপারে কোনো বক্তব্য দিতে পারবো না, আপনারা এডিসি জেনারেল এর কাছ থেকে বক্তব্য নেন।

এডিসি জেনারেল নুরে আলম বলেন, আমি পঁচা গমের অভিযান সম্পর্কে কিছুই জানিনা।

অভিযানে কোনো জরিমানা ছাড়াই জব্দকৃত গম ধ্বংস করার ঘটনা দিনাজপুর শহরে টক অব দ্যা টাউনে পরিনত হয়েছে। জেলার সচেতন মহল মনে করছেন,খাদ্য ব্যবসায়ীদের এই ধরনের অসাধু কার্যকলাপ জনস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর এবং এর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

নিউজটি শেয়ার করুন

দিনাজপুরে পচা গমের মজুদ, জেলা প্রশাসন কিছু জানেনা

আপডেট সময় : ১২:২৫:২৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫

দিনাজপুরে জেলা প্রশাসন অভিযান চালিয়ে শহরের পুলহাট এলাকার হাজী অটো রাইস মিলের চাতালে ১২শ বস্তা পচা গম জব্দ করেছে। এ বিষয় কাউকে কোন জরিমানা করা হয়নি। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গম জব্দের বিষয় কোন কিছু জানানো হয়নি। ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক, সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং এডিসি জেনারেল কেউ এব্যাপারে কথা বলতে রাজি হয়নি।

গত সোমবার (২১ এপ্রিল) গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক বোরহান উদ্দিন, জেলা প্রশাসকের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অভ্র জ্যোতি বড়াল, অতিরিক্ত জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ড. মোঃ গোলাম কিবরিয়া, নিরাপদ খাদ্য অফিসার গৌতম কুমার সাহা, জেলা সহকারী খাদ্য নিয়ন্ত্রক ফারজানা ইসলাম সমন্বয়ে শহরে পুলহাট বিসিক এলাকায় অভিযান চালিয়ে হাজী অটো রাইছ মিলের চাতাল ১২শ বস্তা গম জব্দ করে।

এ সময় স্তুপ করে রাখা বস্তাগুলোর মুখ খুলতেই পচা ও দুর্গন্ধযুক্ত গম। যা কোনোভাবেই খাওয়ার উপযোগী নয়। স্থানীয় শ্রমিকরা জানায়, ভালো গমের আটার সাথে এই পচা গমগুলোর আটা মিশিয়ে বাজারে বিক্রির উদ্দেশ্যে শুকানো হচ্ছিল।

এ বিষয়ে দিনাজপুরে পাটোয়ারী বিজনেস হাউজের স্বত্বাধিকারী শহীদুর রহমান পাটোয়ারী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, যশোর জেলার নোয়াপাড়া থেকে ট্রাকে করে গম আনার সময় বৃষ্টির পানিতে ভিজে গিয়েছিল। ট্রাকের উপর ত্রিপল না থাকায় বৃষ্টিতে ভিজে গমগুলো পচে যায়।

অভিযান কালে এই ঘটনায় কোনো জরিমানা করা না হলেও তাৎক্ষনিকভাবে জব্দকৃত ১২শ বস্তা পঁচা গম পাটোয়ারী বিজনেস হাউসের ট্রাকে লোড করে পুর্নভবা নদীতে ফেলে দিয়ে ধ্বংস করা হয়। পরদিন ২২এপ্রিল পুনরায় অভিযান চালিয়ে মিলের গোডাউন থেকে ১৯ বস্তা পঁচা গম উদ্ধার করা হয়।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয় সুত্রে জানা যায়, দিনাজপুর জেলায় ৬ জন মিল ব্যবসায়ীর মাধ্যমে আটা সরবরাহ করা হয়। তারমধ্যে দিনাজপুর সদরে ২ জনের মধ্যে সহিদুর রহমান পাটোয়ারীর আটা সরবরাহ স্থগিত করা হয়। এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ওএমএস ডিলার জানায়, তার পয়েন্টে লাইন ধরে আটা নিতে আসা লোকজন পঁচা গমের আটার রুটি খেয়ে পেটের পীড়া ও ডাইরিয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে।

এ ব্যাপারে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক বোরহান উদ্দিনের মূঠোফোনে পঁচা গম জব্দের কোনো জরিমানা করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি জেলা প্রশাসকের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অভ্র জ্যোতি বড়াল এর নিকট যেতে বলেন।

সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অভ্র জ্যোতি বড়াল বলেন, আমি এব্যাপারে কোনো বক্তব্য দিতে পারবো না, আপনারা এডিসি জেনারেল এর কাছ থেকে বক্তব্য নেন।

এডিসি জেনারেল নুরে আলম বলেন, আমি পঁচা গমের অভিযান সম্পর্কে কিছুই জানিনা।

অভিযানে কোনো জরিমানা ছাড়াই জব্দকৃত গম ধ্বংস করার ঘটনা দিনাজপুর শহরে টক অব দ্যা টাউনে পরিনত হয়েছে। জেলার সচেতন মহল মনে করছেন,খাদ্য ব্যবসায়ীদের এই ধরনের অসাধু কার্যকলাপ জনস্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর এবং এর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।