ঢাকা ০৩:২৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

ইউক্রেনের দখলকৃত অঞ্চল হাতছাড়া করবেনা রাশিয়া: পুতিন

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৯:১৬:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫
  • / ৩৫৬ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

রাশিয়া ইউক্রেনের দখলকৃত অঞ্চল হাতছাড়া করবেন না বলে স্পষ্ট করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। আজ (বুধবার, ২১ মে) কুরস্ক সফরে এটি জানিয়েছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, ইউক্রেনে রাশিয়ার দখলকৃত অঞ্চলের মালিকানা কার থাকবে সে ইস্যুতেই আটকে আছে অস্ত্রবিরতি। এ অবস্থায় যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা বাড়ালেও ঝুলন্ত অবস্থানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

২৪ ঘণ্টায় শতাধিক এলাকায় সম্মুখ লড়াইয়ে জড়ায় ইউক্রেন-রাশিয়ার সেনারা। সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয় পোক্রোভস্ক অঞ্চলে। ইউক্রেনের একটি সামরিক বিমানবন্দরে হামলা চালায় রাশিয়া। বেশ কিছু রুশ সামরিক ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করে ইউক্রেনীয় সেনারা। যুদ্ধের তিন বছর পেরিয়ে গেলেও সংঘাত বন্ধের কোনো আশা দেখছে না কোনো পক্ষ।

গত (সোমবার, ১৯ মে) ইউক্রেন ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলাদাভাবে ফোনালাপ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানান, কয়েকদিনের মধ্যেই একটি শান্তি পরিকল্পনা উপস্থাপন করতে পারেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এদিন একদিনে ইউক্রেনের যুদ্ধে বন্ধে ট্রাম্পের আশ্বাসসহ নানা ইস্যুতে মার্কিন কংগ্রেসে সিনেটরদের তোপের মুখে পড়েন রুবিও। পাল্টা জবাবে বলেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার দখলকৃত অঞ্চলের মালিকানা কার থাকবে, সে ইস্যুকে কেন্দ্র করেই আটকে আছে অস্ত্রবিরতি।

যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর ক্রিস ভ্যান হোলেন বলেন, ‘সুদান-দক্ষিণ আফ্রিকায় জাতিগত নিধন প্রচেষ্টা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন আপনি। আর এখন ইউক্রেনের মানুষকে চলন্ত বাসের নিচে ছুড়ে ফেলতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাথে দল বেঁধেছেন। ভ্লাদিমির পুতিন বেহালার মতো বাজাচ্ছে আপনাকে। ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন যে ক্ষমতার প্রথম দিনে ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধ করে দেবেন তিনি, গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করে দেবেন। সরাসরি এবং ব্যক্তিগতভাবে আপনাকে বলছি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী পদে আপনাকে ভোট দিয়ে আমি অনুতপ্ত।’

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, ‘প্রথমত, আমাকে ভোট দিয়ে আপনার পস্তানোই প্রমাণ যে আমি সঠিক কাজ করছি। ইউক্রেনের বিষয়ে বলবো, আমরা সবাই এ বিষয়ে একমত যে এ সংকটের সামরিক সমাধান বলে কিছু নেই। আলোচনার মাধ্যমেই এ সমস্যার সমাধান করতে হবে। ইউক্রেন ইস্যুতে মৌলিক যে বাধার মুখে আমরা রয়েছি সেটা হলো- রাশিয়া এমন কিছু চায়, যা তাদের বর্তমানে নেই এবং তাদের অধিকারও নেই, আর ইউক্রেন এমন কিছু চায় যা সামরিকভাবে ফিরে পাওয়া তাদের পক্ষে সম্ভব নয়।’

ইউক্রেনের দখলকৃত অঞ্চল যে হাতছাড়া করবেন না, পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই বুধবার কুরস্কের পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিদর্শন করে যেন সেটিই প্রমাণ করলেন রুশ প্রেসিডেন্ট। অন্যদিকে ইউরোপের দুই দেশ ফিনল্যান্ড আর নরওয়ের সীমান্তে রাশিয়া সামরিক ঘাঁটি তৈরি করছে বলে সম্প্রতি স্যাটেলাইট ছবিতে ধরা পড়ে। মার্কিন প্রতিরক্ষা জোট ন্যাটো তথ্যটি নিশ্চিত করলেও এ নিয়ে চিন্তিত নন বলে জানান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা বাড়াতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির অনুরোধ বিবেচনা করছেন কি না, সে প্রশ্নের জবাবেও দেননি কোনো স্পষ্ট উত্তর।

ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘সে সিদ্ধান্ত আমি নেবো। অন্য কারো সিদ্ধান্তে এমন কিছু ঘটবে না। আমরা রাশিয়ার আচরণ পর্যবেক্ষণ করবো। দেখবো কী ঘটে। বর্তমানে বেশ জটিল এক সময় আমরা পার করছি। গতকাল আড়াই ঘণ্টা আমি প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে কথা বলেছি। ইউরোপের সব নেতা এবং আরও অনেক নেতার সাথেও কথা বলেছি।’

এদিকে, ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের জেরে রাশিয়ার আরো ১০০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাজ্য। রাশিয়ার বিরুদ্ধে ১৮তম বারের মতো নিষেধাজ্ঞা বাড়িয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নও।

নিউজটি শেয়ার করুন

ইউক্রেনের দখলকৃত অঞ্চল হাতছাড়া করবেনা রাশিয়া: পুতিন

আপডেট সময় : ০৯:১৬:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ মে ২০২৫

রাশিয়া ইউক্রেনের দখলকৃত অঞ্চল হাতছাড়া করবেন না বলে স্পষ্ট করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। আজ (বুধবার, ২১ মে) কুরস্ক সফরে এটি জানিয়েছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, ইউক্রেনে রাশিয়ার দখলকৃত অঞ্চলের মালিকানা কার থাকবে সে ইস্যুতেই আটকে আছে অস্ত্রবিরতি। এ অবস্থায় যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা বাড়ালেও ঝুলন্ত অবস্থানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

২৪ ঘণ্টায় শতাধিক এলাকায় সম্মুখ লড়াইয়ে জড়ায় ইউক্রেন-রাশিয়ার সেনারা। সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয় পোক্রোভস্ক অঞ্চলে। ইউক্রেনের একটি সামরিক বিমানবন্দরে হামলা চালায় রাশিয়া। বেশ কিছু রুশ সামরিক ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করে ইউক্রেনীয় সেনারা। যুদ্ধের তিন বছর পেরিয়ে গেলেও সংঘাত বন্ধের কোনো আশা দেখছে না কোনো পক্ষ।

গত (সোমবার, ১৯ মে) ইউক্রেন ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলাদাভাবে ফোনালাপ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানান, কয়েকদিনের মধ্যেই একটি শান্তি পরিকল্পনা উপস্থাপন করতে পারেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এদিন একদিনে ইউক্রেনের যুদ্ধে বন্ধে ট্রাম্পের আশ্বাসসহ নানা ইস্যুতে মার্কিন কংগ্রেসে সিনেটরদের তোপের মুখে পড়েন রুবিও। পাল্টা জবাবে বলেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার দখলকৃত অঞ্চলের মালিকানা কার থাকবে, সে ইস্যুকে কেন্দ্র করেই আটকে আছে অস্ত্রবিরতি।

যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর ক্রিস ভ্যান হোলেন বলেন, ‘সুদান-দক্ষিণ আফ্রিকায় জাতিগত নিধন প্রচেষ্টা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন আপনি। আর এখন ইউক্রেনের মানুষকে চলন্ত বাসের নিচে ছুড়ে ফেলতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাথে দল বেঁধেছেন। ভ্লাদিমির পুতিন বেহালার মতো বাজাচ্ছে আপনাকে। ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন যে ক্ষমতার প্রথম দিনে ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধ করে দেবেন তিনি, গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করে দেবেন। সরাসরি এবং ব্যক্তিগতভাবে আপনাকে বলছি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী পদে আপনাকে ভোট দিয়ে আমি অনুতপ্ত।’

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, ‘প্রথমত, আমাকে ভোট দিয়ে আপনার পস্তানোই প্রমাণ যে আমি সঠিক কাজ করছি। ইউক্রেনের বিষয়ে বলবো, আমরা সবাই এ বিষয়ে একমত যে এ সংকটের সামরিক সমাধান বলে কিছু নেই। আলোচনার মাধ্যমেই এ সমস্যার সমাধান করতে হবে। ইউক্রেন ইস্যুতে মৌলিক যে বাধার মুখে আমরা রয়েছি সেটা হলো- রাশিয়া এমন কিছু চায়, যা তাদের বর্তমানে নেই এবং তাদের অধিকারও নেই, আর ইউক্রেন এমন কিছু চায় যা সামরিকভাবে ফিরে পাওয়া তাদের পক্ষে সম্ভব নয়।’

ইউক্রেনের দখলকৃত অঞ্চল যে হাতছাড়া করবেন না, পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই বুধবার কুরস্কের পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিদর্শন করে যেন সেটিই প্রমাণ করলেন রুশ প্রেসিডেন্ট। অন্যদিকে ইউরোপের দুই দেশ ফিনল্যান্ড আর নরওয়ের সীমান্তে রাশিয়া সামরিক ঘাঁটি তৈরি করছে বলে সম্প্রতি স্যাটেলাইট ছবিতে ধরা পড়ে। মার্কিন প্রতিরক্ষা জোট ন্যাটো তথ্যটি নিশ্চিত করলেও এ নিয়ে চিন্তিত নন বলে জানান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা বাড়াতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির অনুরোধ বিবেচনা করছেন কি না, সে প্রশ্নের জবাবেও দেননি কোনো স্পষ্ট উত্তর।

ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘সে সিদ্ধান্ত আমি নেবো। অন্য কারো সিদ্ধান্তে এমন কিছু ঘটবে না। আমরা রাশিয়ার আচরণ পর্যবেক্ষণ করবো। দেখবো কী ঘটে। বর্তমানে বেশ জটিল এক সময় আমরা পার করছি। গতকাল আড়াই ঘণ্টা আমি প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে কথা বলেছি। ইউরোপের সব নেতা এবং আরও অনেক নেতার সাথেও কথা বলেছি।’

এদিকে, ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের জেরে রাশিয়ার আরো ১০০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাজ্য। রাশিয়ার বিরুদ্ধে ১৮তম বারের মতো নিষেধাজ্ঞা বাড়িয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নও।