রাজনৈতিক অস্থিরতা, আলোচনায় প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ

- আপডেট সময় : ০৯:৫৬:১৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫
- / ৩৫৯ বার পড়া হয়েছে

ড. মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগের কথা বললেও প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকা থেকে সরে না আসলে বিএনপির সমর্থন পাবে না বলে জানিয়েছেন স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন। প্রধান উপদেষ্টার স্বাভাবিক কাজে বাধা দেশকে রাজনৈতিক সংকটে ফেলবে বলে মত জামায়াতে ইসলামীর। সংকট মোকাবেলায় রাজনৈতিক দলগুলোকে প্রধান উপদেষ্টার পাশে থাকার পরামর্শ রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।
একদিকে বিএনপি সমর্থিত ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনের মেয়রের শপথ গ্রহণ ইস্যু, বিএনপির দুই ছাত্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবি, সাথে সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা। অন্যদিকে এনসিপির পক্ষ থেকে তিন উপদেষ্টাকে বিএনপির মুখপাত্র আখ্যা দিয়ে পদত্যাগের দাবি। সেনা প্রধানের নির্বাচন নিয়ে মন্তব্যসহ নানাবিধ কারণে রাজনীতির অন্ধরে আলোচনায় আসে অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগের বিষয়।
প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগের আলোচনা গণমাধ্যমে প্রকাশ পেতেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছাত্র উপদেষ্টা থেকে শুরু করে, এনসিপি ও জুলাই বিপ্লবের একাধিক সংগঠক ভুলত্রুটি শুধরে সংকট মোকাবেলায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানায়।
রাজনীতির এমন পরিস্থিতিকে জাতীয় নাগরিক পার্টির এই নেতা দেখছেন আধিপত্যবাদী শক্তির চক্রান্ত হিসেবে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে সরিয়ে দেশকে যুদ্ধক্ষেত্রে বানানোই চক্রের লক্ষ্য বলে অভিযোগ তার।
জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম সদস্য সচিব জয়নাল আবেদীন শিশির বলেন, ভারত এখানে একটা ওয়ান ইলেভেন সরকার কায়েম করতে চাচ্ছে। তারা বিভিন্নভাবে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে বিরক্ত করছে, তারা বাংলাদেশে বিশৃঙ্ক্ষলা সৃষ্টি করতে চাচ্ছে। তারা বাংলাদেশকে রাজনৈতিকভাবে, সামাজিকভাবে, অর্থনৈতিকভাবে ধ্বংস করার জন্য একটি মহল পায়তারা করছে।
চলমান রাজনৈতিক জট নিয়ে জামায়াতের নায়েবে আমির আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলছেন, প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ গভীর রাজনৈতিক সংকট তৈরি করবে বলে তাদের দল ড. ইউনূসকে সর্বাত্মক সমর্থন জানাবে।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, ‘ওনার স্বাভাবিক কাজে কারোরি বাধা হয়ে দাঁড়ানো উচিত নয়। দ্বিতীয়ত হচ্ছে ড. মুহাম্মদ ইউনূস যদি রিজাইন করেন তাহলে দেশে বিশাল শূন্যতা তৈরি হবে। এ শূন্যতার পরিসমাপ্তি কী হবে সেটা খুবই অনিশ্চিত। তাই দেশকে আবার একটা ক্রাইসিসের মধ্যে ফেলে দেয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে না।’
আর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন সংকট মোকাবেলায় জাতীয় ঐক্যতে জোর দিয়ে বলেন, তবে, এত ঘটনাপ্রবাহের পরও সরকারের প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকা থেকে সরে না আসলে ও দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা না করলে বিএনপি সরকারের প্রতি সমর্থন উঠিয়ে নিবে।
ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘ইউনূস সাহেবের মতো লোক, এখানে তিনি নিজে বলছেন ব্যর্থতার দিকে যাচ্ছেন, তিনি কাজ করতে পারছেন না, তো সেটা আমরা চাই না। আমরা চাই উনি কাজ করুক এবং সেজন্য উপদেষ্টা পরিষদ আরো ছোট করুক তত্ত্ববধায়ক সরকারের আদলে। এবং অতি দ্রুত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুক।’
এমন রাজনৈতিক সংকটের পিছনে রাজনীতিবিদদের দায়িত্বহীনতাকেই দায়ী করছেন এই রাজনৈতিক বিশ্লেষক। এই মুহূর্তে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিদায় রাজনীতিতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে বলে দলগুলোকে প্রধান উপদেষ্টাকে সমর্থন জানানোর পরামর্শও দেন তিনি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. আব্দুল লতিফ মাসুম বলেন, প্রফেসর ইউনূসের কোনো বিকল্প নেই। প্রফেসর ইউনূসের ব্যক্তিত্ব, তার বিশ্বজোড়া খ্যাতি আমাদের একটা ক্যাপিটাল এবং প্রয়োজন হবে। যদি তাকে চলে যেতে দেয়া হয় আরো একটি বড় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে। তাই রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত হবে প্রফেসর ইউনূসকে বোঝানো তিনি যেন এমন অনাকাঙ্খিত পদত্যাগের সিদ্ধান্ত না নেন।’
আধিপত্যবাদী ষড়যন্ত্র মোকাবেলা ও দেশকে একটি সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক ধারায় যাত্রা করাতে ঐক্যবদ্ধ থাকার বিকল্প নেই বলে মনে করছেন রাজনৈতিক দলগুলো।