গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে: এ্যানি

- আপডেট সময় : ০৬:৪৩:৩৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫
- / ৩৫৭ বার পড়া হয়েছে

গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। কোনো ষড়যন্ত্রই এই যাত্রা রুখতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি। আজ শনিবার সকালে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ওয়ার্ড ভিত্তিক নেতা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ পরিদর্শন শেষে আয়োজিত সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের পূর্ব সৈয়দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও উত্তর জয়পুর ইউনিয়নের দক্ষিণ মাগুরি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নেতা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
ভোটগ্রহণ পরিদর্শন শেষে এ্যানী বলেন, ‘গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। ষড়যন্ত্রকারীরা দেশে-বিদেশে বসে নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে, যেন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠিত না হয়। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া যদি ধারাবাহিকভাবে চলতে থাকে, গণতন্ত্রের ভিত যদি শক্তিশালী হয়, তাহলে আপনার আমার গণতান্ত্রিক অধিকার সুরক্ষা পাবে, প্রতিষ্ঠিত হবে। সেটা যেন হয়, একটি গোষ্টি তৎপর রয়েছে। তাই সবাইকে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে, কোনো ষড়যন্ত্রই আমাদের এই যাত্রা রুখতে না পারে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘শেখ হাসিনা পালিয়েছে। কিন্তু শেখ হাসিনার সঙ্গে সবাই পালিয়ে যায়নি। কিন্তু তাদের এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি। হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে। গুম-খুন নির্যাতন চালিয়ে দেশের মানুষকে জিম্মি করে রেখেছিল এই স্বৈরাচার সরকার। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।’
শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি আরও বলেন, ‘জাতীয় ঐক্যমত্যের সরকার গঠন আমাদের টার্গেট। বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। পালিয়ে যাওয়া ফ্যাসিস্টরা বসে নাই। বর্তমান সরকারকে আন্দোলন সংগ্রামের পর আমরাই বসিয়েছি। এ সরকার আমাদেরই সরকার। জাতীয় ঐক্যমত্যের ভিত্তিতেই এই সরকার চলছে। আমরা সরকারকে সহযোগিতা করছি। প্রত্যেক উপদেষ্টাকে সতর্ক হতে হবে। আপনারা যদি সতর্ক না হন, দ্রুত হাসিনার বিচারের ব্যবস্থা যদি না হয়, দৃশ্যমান না হয়, ত্বরান্বিত যদি না হয়, তাহলে দেশের মানুষ খুব কষ্ট পাবে। বিপদে পড়বে।’
এ্যানী আরও বলেন, ‘বিচারের পাশাপাশি নির্বাচনও করতে হবে। একদিকে নির্বাচনের রোডম্যাপ দিতে হবে, আরেকদিকে দ্রুত সংস্কার করতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকার যে বলেছে, সংস্কার করতে ৩ মাস লাগবে, ৩ মাসের জায়গা ৬ মাস লাগবে, যাই হোক, এখনও দৃশ্যমান হয়নি। সবাই মিলে যদি দেশটাকে ঐক্যের মধ্যে না নিয়ে যেতে পারি, সুদৃঢ় ঐক্যের ওপর ভর করে না গড়তে পারি, সুযোগ কিন্তু তারা (ফ্যাসিস্ট) নেবে। ফ্যাসিস্ট কিন্তু থাবা মারার জন্য বসে আছে। পার্শ্ববর্তী দেশ (ভারত) তারাও কিন্তু ব্যাপকভাবে নাক গলাতে চায় এবং চেয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘দেশের প্রত্যেকটি মানুষকে এক এবং ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। এর মধ্যে ফাটল ধরানোর কোনো সুযোগ থাকতে পারবে না। যারা ফাটল ধরাতে চান, তারা পিছপা হয়ে যাবেন। বাংলাদেশ বিনির্মাণের ক্ষেত্রে, সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে কোনো ফাটল থাকবে ৫ আগস্টের পর তা আমরা বিশ্বাস করি না। আমাদের শ্রম-ঘাম-ত্যাগ, ১৭ বছর সাধারণ মানুষ-নেতাকর্মী ও রাজনৈতিক দল যেভাবে আত্মহুতি দিয়েছে, গুম-খুনের শিকার হয়েছে, সবশেষ জুলাই আন্দোলনে যেভাবে শহীদ হয়েছে, এই ত্যাগ বৃথা যাবে না। এখনও রক্তের দাগ শুকায়নি।’
এ্যানি বলেন, ‘খুনের বিচার খুব জরুরি। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে খুনির বিচার হতে হবে। হাসিনার দোসরদের বিচার হতে হবে। হাসিনার বিচার হতে হবে। আমরা তাড়াতাড়ি দৃশ্যমান বিচার দেখতে চাই। দেশের প্রয়োজনে, জাতির প্রয়োজনে বিএনপি যে দায়িত্ব নিয়ে সামনে এগিয়ে যাচ্ছে, এ দায়িত্বের ভিত্তিতে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের হাতকে আমরা শক্তিশালী করব। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার হাতকে আমরা শক্তিশালী করব। আগামীর বাংলাদেশটা অনেক সুন্দর হবে। সবাই মিলে আগামীর বাংলাদেশকে ঐক্যবদ্ধ রাখব, শক্তিশালী হব। শক্তিশালীর মধ্য দিয়ে আমাদের ঐক্যকে সুদৃঢ় রাখবে।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সহ-সভাপতি ওয়াহিদ উদ্দিন চৌধুরী হ্যাপি, জেলা বিএনপির সদস্য হাফিজুর রহমান, চন্দ্রগঞ্জ থানা বিএনপির আহ্বায়ক বেলাল হোসেন ও দিঘলী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম সারোয়ার প্রমুখ।