ঢাকা ০৪:৪৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫, ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

সন্তান বন্ধক রেখে ঋণ, অত:পর যা হলো

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১২:১৭:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫
  • / ৩৯১ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

মাত্র ২৫ হাজার টাকা ঋণ। তার মাশুল গুনতে হল একটা প্রাণ দিয়ে। ঘটনা অন্ধ্রপ্রদেশের তিরুপতির। আনাকাম্মা ও তার স্বামী চেঞ্চাইয়া, নিজের তিন সন্তানকে তিরুপতিরই এক হাস পালনকারীর কাছে কাজ করতেন। সেখানেই তাদের থাকা, সেখানেই খাওয়া। আনাকাম্মারা ছিলেন তিরুপতির আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ। ফলত, সামাজিক অস্পৃশ্যতা, কোথাও গিয়ে তাদের কাছে ছিল দৈনন্দিনের ব্যাপার।

নানা ভাবে দিন গুজরান করলেও, ফাঁড়া আসে চেঞ্চাইয়ার মৃত্যুর পর। স্বামীকে হারিয়ে যখন ওই কর্মস্থল ছাড়ার কথা ভাবছিলেন আনাকাম্মা। তখনই তাকে আটকে দেয় সেই হাঁস পালনকারী। তিনি আনাকাম্মাকে জানান, তার স্বামী মারা যাওয়ার আগে ২৫ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। কিন্তু সেই টাকা এখনও ফেরত দিয়ে উঠতে পারেনি সে। ফলত, তিন সন্তানকে নিয়ে তাকে সেখানেই থেকে যেতে হয় ও শ্রমের মাধ্যমেই শুরু হয় পরিশোধ।

প্রথম দিকে মহিলা রাজি হলেও, আসল ফাঁদটা বুঝতে পারে সে। দিন-রাত এক করে কাজ করে যাওয়া আর তার পরিবর্তে সামান্য কিছু মজুরি। তিনি বুঝতে পারেন, এই ভাবে চলতে থাকলে চিরজীবন দাসত্বই করে যেতে হবে তাদের। ফলত, ফের কাজ ছাড়ার দাবি জানান ওই আদিবাসী মহিলা।

আনাকাম্মার পরিস্থিতির ফায়দা তুলতে ২৫ হাজারের বদলে তার ঘাড়ে সুদ-সহ ৪৫ হাজারের বোঝা চাপিয়ে দেয় সেই হাঁস পালনকারী। এমনকি, সে যাতে দ্রুত ঋণ শোধ করে সেই জন্য তার তিন সন্তানের যে কোনও একজনকে সেখানে রেখে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। ফলত, বাধ্য হয়েই এক সন্তান ছাড়া ঋণের টাকা পরিশোধ করতে রোজগারের জন্য নেমে পড়েন মহিলা। এরপর কেটে যায় দশ দিন।

এপ্রিল মাসের শেষ সপ্তাহে কষ্টার্জিত ৪৫ হাজার টাকা নিয়ে হাজির হন আনাকাম্মা। কিন্তু ফিরে দেখেন, তার ছেলের কোনও হদিশ নেই। সেই হাঁস পালককে জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান, সে নাকি জন্ডিসে মারা গিয়েছে। এরপরই পুলিশে দ্বারস্থ হন ওই মহিলা। শুরু হয় তদন্ত। জেরার মুখে পড়ে সব ফাঁস করে হাঁস পালক। জানান, অতিরিক্ত কাজের কারণে মৃত্যু হয়েছে সেই খুদেটির। তাই খবর চাপতে এলাকা থেকে বহুদূরে গিয়ে তার দেহ মাটি চেপে দিয়ে এসেছে। এই বয়ানের পরেই সেই হাঁস পালককে গ্রেফতার করে পুলিশ।

নিউজটি শেয়ার করুন

সন্তান বন্ধক রেখে ঋণ, অত:পর যা হলো

আপডেট সময় : ১২:১৭:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫

মাত্র ২৫ হাজার টাকা ঋণ। তার মাশুল গুনতে হল একটা প্রাণ দিয়ে। ঘটনা অন্ধ্রপ্রদেশের তিরুপতির। আনাকাম্মা ও তার স্বামী চেঞ্চাইয়া, নিজের তিন সন্তানকে তিরুপতিরই এক হাস পালনকারীর কাছে কাজ করতেন। সেখানেই তাদের থাকা, সেখানেই খাওয়া। আনাকাম্মারা ছিলেন তিরুপতির আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ। ফলত, সামাজিক অস্পৃশ্যতা, কোথাও গিয়ে তাদের কাছে ছিল দৈনন্দিনের ব্যাপার।

নানা ভাবে দিন গুজরান করলেও, ফাঁড়া আসে চেঞ্চাইয়ার মৃত্যুর পর। স্বামীকে হারিয়ে যখন ওই কর্মস্থল ছাড়ার কথা ভাবছিলেন আনাকাম্মা। তখনই তাকে আটকে দেয় সেই হাঁস পালনকারী। তিনি আনাকাম্মাকে জানান, তার স্বামী মারা যাওয়ার আগে ২৫ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। কিন্তু সেই টাকা এখনও ফেরত দিয়ে উঠতে পারেনি সে। ফলত, তিন সন্তানকে নিয়ে তাকে সেখানেই থেকে যেতে হয় ও শ্রমের মাধ্যমেই শুরু হয় পরিশোধ।

প্রথম দিকে মহিলা রাজি হলেও, আসল ফাঁদটা বুঝতে পারে সে। দিন-রাত এক করে কাজ করে যাওয়া আর তার পরিবর্তে সামান্য কিছু মজুরি। তিনি বুঝতে পারেন, এই ভাবে চলতে থাকলে চিরজীবন দাসত্বই করে যেতে হবে তাদের। ফলত, ফের কাজ ছাড়ার দাবি জানান ওই আদিবাসী মহিলা।

আনাকাম্মার পরিস্থিতির ফায়দা তুলতে ২৫ হাজারের বদলে তার ঘাড়ে সুদ-সহ ৪৫ হাজারের বোঝা চাপিয়ে দেয় সেই হাঁস পালনকারী। এমনকি, সে যাতে দ্রুত ঋণ শোধ করে সেই জন্য তার তিন সন্তানের যে কোনও একজনকে সেখানে রেখে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। ফলত, বাধ্য হয়েই এক সন্তান ছাড়া ঋণের টাকা পরিশোধ করতে রোজগারের জন্য নেমে পড়েন মহিলা। এরপর কেটে যায় দশ দিন।

এপ্রিল মাসের শেষ সপ্তাহে কষ্টার্জিত ৪৫ হাজার টাকা নিয়ে হাজির হন আনাকাম্মা। কিন্তু ফিরে দেখেন, তার ছেলের কোনও হদিশ নেই। সেই হাঁস পালককে জিজ্ঞাসা করলে তিনি জানান, সে নাকি জন্ডিসে মারা গিয়েছে। এরপরই পুলিশে দ্বারস্থ হন ওই মহিলা। শুরু হয় তদন্ত। জেরার মুখে পড়ে সব ফাঁস করে হাঁস পালক। জানান, অতিরিক্ত কাজের কারণে মৃত্যু হয়েছে সেই খুদেটির। তাই খবর চাপতে এলাকা থেকে বহুদূরে গিয়ে তার দেহ মাটি চেপে দিয়ে এসেছে। এই বয়ানের পরেই সেই হাঁস পালককে গ্রেফতার করে পুলিশ।