ঢাকা ০৪:২৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৬ মে ২০২৫, ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

দায়িত্ব সম্পূর্ণ করেই সরকারকে যেতে হবে : জোনায়েদ সাকি

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১১:৩২:৫৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫
  • / ৩৪৭ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যে দায়িত্ব রয়েছে, তা সম্পূর্ণ করেই সরকারকে যেতে হবে। এর অন্যথায় কোনো সুযোগ নেই।

রোববার (২৫ মে) রাতে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে সংস্কার ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ওপর জোর দিয়েছেন বলে জানান জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে তাদের ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করতে হবে। একদিকে হত্যাকারীদের বিচার এবং অন্যদিকে জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত করার জন্য গণতান্ত্রিক সংস্কারে যেতে হবে। এই দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে, অন্যথায় আর কোনো সুযোগ নেই।

জোনায়েদ সাকি বলেন, ডক্টর ইউনূসকে যেহেতু জনগণ একটা ভরসার জায়গায় রেখেছে, সে কারণেই তাকে এই দায়িত্ব পালন করতে হবে। তার ওপর যত চাপই থাকুক না কেন, তিনি যেন তার ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।

তিনি আরো বলেন, এখন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, নানা জায়গায় যে অস্থিরতা এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে দূরত্ব তৈরি হচ্ছে, তা একটি স্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে। এই দূরত্ব কমাতে আলাপ-আলোচনা দরকার। এখানে পরস্পর পরস্পরের সঙ্গে আলোচনা করে বোঝা যায়, কে কী চায়।

গণসংহতি আন্দোলনের পক্ষ থেকে প্রধান উপদেষ্টাকে জনগণের দৃশ্যমান বিচারের প্রত্যাশার কথা জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা বিচার বিভাগকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, বিচারব্যবস্থা যেন দ্রুত ও আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে এগিয়ে যায়।

সংস্কারের বিষয়ে জোনায়েদ সাকি বলেন, ঐকমত্য কমিশন যেহেতু ১৫ জুলাই পর্যন্ত সময় নিয়েছে, তাই এই সময়ের মধ্যে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক আলোচনার মাধ্যমে যে ঐক্যগুলো হবে, সেগুলোকে জাতীয় সনদ আকারে দ্রুত প্রকাশ করতে হবে। এটাই সংস্কারের পদ্ধতি। প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, এর বাইরে অন্য কোনো পদ্ধতি গ্রহণের সুযোগ নেই। এখানে কোনো কণ্ঠ সৃষ্টি হলে সংস্কারের ক্ষেত্রে অনেক বাধা আসবে।

নির্বাচনের বিষয়ে সরকার ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচনের কথা বললেও, গণসংহতি আন্দোলন একটি সুনির্দিষ্ট সময় ঘোষণার দাবি জানিয়েছে।

জোনায়েদ সাকি বলেন, একটি সুনির্দিষ্ট সময় ঘোষণা করা হলে রাজনৈতিক দলগুলো প্রস্তুতি নিতে পারবে এবং বিনিয়োগ পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়ন করা সহজ হবে।

প্রধান উপদেষ্টা জুনের ৩০ তারিখের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং নির্বাচন পরিচালনার জন্য প্রতিষ্ঠানগুলো পূর্ণাঙ্গভাবে কাজ শুরু করলে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন।

গণসংহতি আন্দোলনের পক্ষ থেকে জুলাই অভ্যুত্থানের বিষয়েও আলোচনা করা হয়েছে। জোনায়েদ সাকি বলেন, জুলাইয়ের অবস্থান সবার সম্মিলিত অবদানে তৈরি হয়েছে। তবে কোনো একটি পক্ষ যদি এর কৃতিত্ব দাবি করে, তবে সরকার যেন সে বিষয়ে সচেতন থাকে।

তিনি আরো বলেন, ন্যূনতম ঐকমত্য ছাড়া গণতান্ত্রিক উত্তরণ সম্ভব নয়। প্রশাসনসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর বিষয়ে আরও স্বচ্ছতা প্রয়োজন। নির্বাচন বিলম্বিত হচ্ছে বলে যে ধারণা তৈরি হয়েছে, তা সরকার মানতে নারাজ।

বিএনপির তিনজন উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবি প্রসঙ্গে জোনায়েদ সাকি বলেন, জুলাই আন্দোলনের প্রতিনিধিত্বকারী তিনজন উপদেষ্টা ছিলেন। তাদের মধ্যে একজন রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। বাকি দুইজন উপদেষ্টার যদি কোনো রাজনৈতিক পরিকল্পনা থাকে, তবে তাদের সরে যাওয়া উচিত। রাজনৈতিক মোটিভ নিয়ে এখানে থাকা নিয়ম অনুযায়ী ঠিক হবে না।

গণসংহতি আন্দোলন মনে করে, বাংলাদেশ একটি জাতীয় পুনর্গঠনের কালে আছে। জাতীয় নির্বাচনই মুখ্য এবং এ বিষয়ে একটি রোডম্যাপ প্রয়োজন। স্থানীয় নির্বাচন পরে হলেও সমস্যা নেই বলে তারা মনে করেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

দায়িত্ব সম্পূর্ণ করেই সরকারকে যেতে হবে : জোনায়েদ সাকি

আপডেট সময় : ১১:৩২:৫৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যে দায়িত্ব রয়েছে, তা সম্পূর্ণ করেই সরকারকে যেতে হবে। এর অন্যথায় কোনো সুযোগ নেই।

রোববার (২৫ মে) রাতে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে সংস্কার ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ওপর জোর দিয়েছেন বলে জানান জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে তাদের ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করতে হবে। একদিকে হত্যাকারীদের বিচার এবং অন্যদিকে জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত করার জন্য গণতান্ত্রিক সংস্কারে যেতে হবে। এই দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে, অন্যথায় আর কোনো সুযোগ নেই।

জোনায়েদ সাকি বলেন, ডক্টর ইউনূসকে যেহেতু জনগণ একটা ভরসার জায়গায় রেখেছে, সে কারণেই তাকে এই দায়িত্ব পালন করতে হবে। তার ওপর যত চাপই থাকুক না কেন, তিনি যেন তার ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।

তিনি আরো বলেন, এখন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, নানা জায়গায় যে অস্থিরতা এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে দূরত্ব তৈরি হচ্ছে, তা একটি স্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে। এই দূরত্ব কমাতে আলাপ-আলোচনা দরকার। এখানে পরস্পর পরস্পরের সঙ্গে আলোচনা করে বোঝা যায়, কে কী চায়।

গণসংহতি আন্দোলনের পক্ষ থেকে প্রধান উপদেষ্টাকে জনগণের দৃশ্যমান বিচারের প্রত্যাশার কথা জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা বিচার বিভাগকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, বিচারব্যবস্থা যেন দ্রুত ও আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে এগিয়ে যায়।

সংস্কারের বিষয়ে জোনায়েদ সাকি বলেন, ঐকমত্য কমিশন যেহেতু ১৫ জুলাই পর্যন্ত সময় নিয়েছে, তাই এই সময়ের মধ্যে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক আলোচনার মাধ্যমে যে ঐক্যগুলো হবে, সেগুলোকে জাতীয় সনদ আকারে দ্রুত প্রকাশ করতে হবে। এটাই সংস্কারের পদ্ধতি। প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, এর বাইরে অন্য কোনো পদ্ধতি গ্রহণের সুযোগ নেই। এখানে কোনো কণ্ঠ সৃষ্টি হলে সংস্কারের ক্ষেত্রে অনেক বাধা আসবে।

নির্বাচনের বিষয়ে সরকার ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচনের কথা বললেও, গণসংহতি আন্দোলন একটি সুনির্দিষ্ট সময় ঘোষণার দাবি জানিয়েছে।

জোনায়েদ সাকি বলেন, একটি সুনির্দিষ্ট সময় ঘোষণা করা হলে রাজনৈতিক দলগুলো প্রস্তুতি নিতে পারবে এবং বিনিয়োগ পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়ন করা সহজ হবে।

প্রধান উপদেষ্টা জুনের ৩০ তারিখের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং নির্বাচন পরিচালনার জন্য প্রতিষ্ঠানগুলো পূর্ণাঙ্গভাবে কাজ শুরু করলে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন।

গণসংহতি আন্দোলনের পক্ষ থেকে জুলাই অভ্যুত্থানের বিষয়েও আলোচনা করা হয়েছে। জোনায়েদ সাকি বলেন, জুলাইয়ের অবস্থান সবার সম্মিলিত অবদানে তৈরি হয়েছে। তবে কোনো একটি পক্ষ যদি এর কৃতিত্ব দাবি করে, তবে সরকার যেন সে বিষয়ে সচেতন থাকে।

তিনি আরো বলেন, ন্যূনতম ঐকমত্য ছাড়া গণতান্ত্রিক উত্তরণ সম্ভব নয়। প্রশাসনসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর বিষয়ে আরও স্বচ্ছতা প্রয়োজন। নির্বাচন বিলম্বিত হচ্ছে বলে যে ধারণা তৈরি হয়েছে, তা সরকার মানতে নারাজ।

বিএনপির তিনজন উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবি প্রসঙ্গে জোনায়েদ সাকি বলেন, জুলাই আন্দোলনের প্রতিনিধিত্বকারী তিনজন উপদেষ্টা ছিলেন। তাদের মধ্যে একজন রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। বাকি দুইজন উপদেষ্টার যদি কোনো রাজনৈতিক পরিকল্পনা থাকে, তবে তাদের সরে যাওয়া উচিত। রাজনৈতিক মোটিভ নিয়ে এখানে থাকা নিয়ম অনুযায়ী ঠিক হবে না।

গণসংহতি আন্দোলন মনে করে, বাংলাদেশ একটি জাতীয় পুনর্গঠনের কালে আছে। জাতীয় নির্বাচনই মুখ্য এবং এ বিষয়ে একটি রোডম্যাপ প্রয়োজন। স্থানীয় নির্বাচন পরে হলেও সমস্যা নেই বলে তারা মনে করেন।