ভারতের জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগাম হত্যাকাণ্ডের জেরে ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের কয়েক সপ্তাহ না পেরোতেই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আরও উন্নত করতে এক হয়ে কাজ করার অঙ্গীকার করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ।
রোববার (২৫মে) তুরস্কের ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ অঙ্গীকার করেন তারা। এসময় আঞ্চলিক সন্ত্রাসবাদ দমনে পাকিস্তানের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করার কথাও জানান তুর্কি প্রেসিডেন্ট। সেসময় আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যুতে আলোচনা করেন দুই মুসলিম দেশের সরকার প্রধান।
ভারত ও পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা, জ্বালানি, যোগাযোগসহ বিভিন্ন খাতে দুই দেশের পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা করেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। এছাড়াও শিক্ষা, প্রযুক্তি ও আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি ও দেন তারা।
পাকিস্তানকে সহায়তা করার অভিযোগে ভারত ইতোমধ্যেই তুরস্কের বিরুদ্ধে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল জানান, তুরস্কের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন তারা।
এসময় পাকিস্তানের প্রতি সহায়তা বন্ধ করে ভারত-পাকিস্তান সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলোতে সন্ত্রাস দমনে নয়াদিল্লির পাশে থাকতে তুরস্কের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।এছাড়াও তুরস্কের তৈরি চকলেট, কফি, জ্যাম, কসমেটিক্সসহ বিভিন্ন পণ্য বয়কট শুরু করে ভারতীয়রা।
ফ্যাশন ওয়েবসাইট ফ্লিপকার্ট ও ধনকুবের মুকেশ আম্বানির রিলায়েন্স গ্রুপ তুরস্কের বেশ কয়েকটি ব্রান্ডের পণ্য নামিয়ে দিয়েছে। এতে ভারতে তুরস্কের পণ্য আমদানি কমেছে কয়েকগুণ।
একদিকে যখন ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের টানাপড়েন চলছে তুরস্কের, তখন পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়াতে তৎপর আঙ্কারা। পারস্পরিক সহযোগিতায় নিজেদের আরও শক্তিশালী করতে চায় দক্ষিণ এশিয়ার এই দুই পরাশক্তি।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে নয়াদিল্লির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে ইসলামাবাদকে অস্ত্র দিয়ে সহায়তার অভিযোগ ওঠে তুরস্কের বিরুদ্ধে। যুদ্ধের সময় ভারতের জম্মু-কাশ্মীর ও পাঞ্জাবে পাকিস্তান যে ড্রোন দিয়ে হামলা চালায়, তার বেশিরভাগই তুরস্ক ও চীনের বলে দাবি নয়াদিল্লির। অবশ্য ইসলামাবাদকে অস্ত্র দেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছে আঙ্কারা।