ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন হতে হবে: তারেক রহমান

- আপডেট সময় : ১১:০৫:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ মে ২০২৫
- / ৩৫৮ বার পড়া হয়েছে

নির্বাচন নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের টালবাহানার পেছনে ভিন্ন কোন উদ্দেশ্য থাকতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন দিতে হবে দাবি জানিয়ে, এখন থেকেই ভোটের প্রস্ততি নিতে সরকারের প্রতি আহ্বানও জানান তিনি।
আজ বুধবার নয়াপল্টনে তারুণ্যের সমাবেশে এসব কথা বলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় বিএনপির তিন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন, ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের এ সমাবেশ। যোগ দেন ঢাকা, সিলেট, ময়মনসিংহ ও সাংগঠনিক বিভাগ ফরিদপুরে নেতা-কর্মীরা।
বুধবার বেলা ২টায় সমাবেশ শুরুর কথা থাকলেও সকাল থেকেই বিভিন্ন ব্যানার প্ল্যাকার্ডসহ খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন সংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীরা।
কখন রোদ আবার কখন বৃষ্টি উপেক্ষা করেই নির্ধারিত সময়ে শুরু হয় তারুণ্যের এ সমাবেশ। শুরুতে বক্তব্য রাখেন তিন সংগঠনের নেতারা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান বলেন, বিএনপি ক্ষমতা গেলে প্রথম দিন থেকেই কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ মানুষের সেবায় বেশ কিছু উদ্যোগ নেবে। তাই নির্বাচিত সরকারের হাতে দ্রুত ক্ষমতা দিতে এ সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
তারেক রহমান বলেন, যারা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল তাদের কাছে সংস্কার আশা করা যায় না। এ সরকার রাজনৈতিক দলগুলোকে প্রতিপক্ষ মনে করছে বলেও মন্তব্য করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।
বেলা সাড়ে ৩টায় সমাবেশের মূল অংশ শুরু হয়। একে একে বক্তব্য দেন দলের শীর্ষ নেতারা। তরুণরা হবে রাষ্ট্রের মূল চালিকাশক্তি উল্লেখ করে স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ জানান, পদত্যাগের নাটক করা হয়েছে। আর আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী জানান, নির্বাচনে বিলম্ব হলে তরুণরাই জবাব দেবে।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘এ দেশে পরস্পরের মধ্যে বিবাদ সৃষ্টির মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদী শক্তি নতুন করে আবার পাঁয়তারা করছে এদের মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রবেশ করার জন্য। আমরা নির্বাচনের রোডম্যাপ চেয়েছিলাম। আমরা কারও পদত্যাগ চাইনি। পদত্যাগের নাটক দেখেছে বাংলাদেশের মানুষ।’
আমির খসরু বলেন, ‘বিচার আমরা করবো। তোমাদের ওপর কোনো ভরসা নাই। বিচার বিএনপি করবে আগামীতে।’
স্থায়ী কমিটির অন্য সদস্যরা দাবি করেন,সরকার সার্বভৌমত্বকে হুমকির মুখে ফেলেছে। শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের আহ্বান জানান তারা।
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘একজন তরুণ বেঁচে থাকতেও এদেশে ভৌগোলিক অখণ্ডতা বিঘ্নিত হতে দিবো না।’
শেষে বিকেলে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যুক্ত হয়ে জানান, নির্বাচন নিয়ে টালবাহানা চলছে। সংস্কার নিয়ে কালক্ষেপণের আড়ালে অন্তর্বর্তী সরকারের ভিন্ন উদ্দেশ্য রয়েছে।
তারেক রহমান বলেন, ‘দিল্লি নয়, পিণ্ডি নয়; নয় অন্য কোনো দেশ। সবার আগে বাংলাদেশ। আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে টালবাহানা চলছে। সংস্কার নিয়ে কালক্ষেপণের আড়ালে অন্তর্বর্তী সরকারের ভিন্ন উদ্দেশ্য রয়েছে।’
আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন হতে হবে উল্লেখ করে নেতাকর্মীদের প্রস্তুতি নেয়ার নির্দেশ দেন তারেক রহমান।
তিনি বলেন, ‘ইশরাকের শপথ গ্রহণে বাধা দিয়ে আবারও স্বৈরাচারের মনোভাব পরিলক্ষিত হয়েছে। জনগণের বিশ্বাস ভঙ্গ হয় এমন কোনো কাজ না করার আহ্বান সরকারের প্রতি। রাজনৈতিক দলগুলোকে প্রতিপক্ষ না বানানোর আহ্বান সরকারের প্রতি।’
দেশের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের পর রাজধানী দিয়ে শেষ হলো তারুণ্যের সমাবেশ। সমাবেশগুলোতে তরুণদের উপস্থিতি আশানুরূপ থাকায় প্রাথমিকভাবে আয়োজনটিকে সফল মনে করছে বিএনপি। তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, তরুণদের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের মাধ্যমে যদি তারুণ্যের ভোটব্যাংক নিজেদের পক্ষে নিতে পারে সেটিই হবে এই আয়োজন থেকে দলটির সত্যিকারের অর্জন।