ঢাকা ০৬:২২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫, ১৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

মার্কিন শুল্ক হুমকির মধ্যে আসিয়ানের সম্মেলনে ঐক্যের ডাক

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১০:৪৬:০০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ মে ২০২৫
  • / ৩৫৭ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বাণিজ্য-নির্ভর অর্থনীতিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ শুল্কের প্রভাব থেকে মুক্ত করার চেষ্টার মধ্যে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার নেতারা চীন এবং ছয় সদস্যের উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদের (জিসিসি) সঙ্গে প্রথম শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন। এতে ঐক্যের ডাক দিয়েছেন নেতারা। মঙ্গলবার এক প্রতিবেদেন এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।

মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে ১০ সদস্যের অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান নেশনসের (আসিয়ান) বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে মঙ্গলবার এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। মালয়েশিয়ার সভাপতিত্বে ব্রুনাই, কম্বোডিয়া, লাওস, মায়ানমার, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনাম এতে যোগ দিয়েছে।

প্রতিবেদন বলছে, আসিয়ান এবং জিসিসির নেতাদের মধ্যে পৃথক আলোচনার পর এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বাহরাইন, কুয়েত, ওমান, কাতার, সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত এতে অন্তর্ভুক্ত ছিল।

মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম আসিয়ান-জিসিসি শীর্ষ সম্মেলনের উদ্বোধন করে বলেন, সহযোগিতা বৃদ্ধি, স্থিতিস্থাপকতা তৈরি এবং টেকসই সমৃদ্ধি নিশ্চিত করার জন্য দুটি ব্লকের মধ্যে শক্তিশালী সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ হবে।

তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং ভূ-রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জের দ্বারা চিহ্নিত ক্রমবর্ধমান জটিল বৈশ্বিক দৃশ্যপট অতিক্রম করার সময় আসিয়ান-জিসিসি অংশীদারত্ব আজকের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল না।

বৈঠকের আগে লিখিত বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভূ-রাজনৈতিক শৃঙ্খলার একটি পরিবর্তন চলছে এবং সাম্প্রতিক মার্কিন একতরফা শুল্ক আরোপের ফলে বিশ্ব বাণিজ্য ব্যবস্থা আরও চাপের মধ্যে রয়েছে। সংরক্ষণবাদের উত্থানের সাথে সাথে বিশ্ব বহুপাক্ষিকতা ভেঙে যাওয়ার সাক্ষীও হচ্ছে।

মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে আনোয়ার ইব্রাহিম আরও বলেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় নেতারা এই সমঝোতায় পৌঁছেছেন যে, বাণিজ্য শুল্ক নিয়ে তারা যেকোনো দ্বিপাক্ষিক চুক্তি করতে পারেন, তা একে অপরের অর্থনীতির ক্ষতি করবে না।

তিনি আরও বলেন, দ্বিপাক্ষিক আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার সময় … আসিয়ানের সাথে একমত হয়েছেন, সিদ্ধান্তগুলো অন্য কোনো দেশের জন্য নেওয়া উচিত নয়। সুতরাং আমাদের ৬৫০ বা ৬৬ কোটি মানুষের ভূমি রক্ষা করতে হবে।

এরআগে সোমবার কুয়ালালামপুরে পৌঁছানো চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং মঙ্গলবার আসিয়ান এবং জিসিসির প্রথম বৈঠকে যোগ দেন। সোমবার তিনি আনোয়ার ইব্রাহিমের সাথে দেখা করেন এবং বেইজিং, আসিয়ান এবং জিসিসির মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক সম্প্রসারণের আহ্বান জানান।

লি বলেন, যখন একতরফাবাদ এবং সুরক্ষাবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বিশ্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি মন্থর, তখন চীন, আসিয়ান এবং জিসিসি দেশগুলোর সমন্বয় ও সহযোগিতা জোরদার করা উচিত। একইসঙ্গে যৌথভাবে উন্মুক্ত আঞ্চলিকতা এবং সত্যিকারের বহুপাক্ষিকতা বজায় রাখা উচিত।

লি আনোয়ারকে বলেন, তিনটি পক্ষের মধ্যে ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক সহযোগিতা প্রচার এবং বিশ্বব্যাপী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় চীন মালয়েশিয়ার সাথে কাজ করতে ইচ্ছুক।

প্রতিবেদন বলছে, আসিয়ান নিরপেক্ষতার নীতি বজায় রেখেছে। বেইজিং এবং ওয়াশিংটন উভয়কেই সম্পৃক্ত করেছে এটি। কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্যাপক শুল্ক আরোপের হুমকি একটি ধাক্কা হিসেবে এসেছে। ব্লকের ছয় সদস্য সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৩২ শতাংশ থেকে ৪৯ শতাংশের মধ্যে শুল্ক আরোপ করা হয়েছে এদের ওপর। গত এপ্রিল মাসে ট্রাম্প বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের জন্য শুল্কের ওপর ৯০ দিনের বিরতি ঘোষণা করেন।

কুয়ালালামপুর থেকে আল জাজিরার রব ম্যাকব্রাইড বলেছেন, আসিয়ান সদস্যরা তাদের অর্থনৈতিক স্থিতিস্থাপকতা জোরদার করার জন্য বিশ্বের অন্যান্য অংশের সাথে বিশেষ করে চীনের সাথে, মধ্যপ্রাচ্যের সাথেও সম্পর্ক গড়ে তোলার দিকে খুব বেশি নজর দিচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

মার্কিন শুল্ক হুমকির মধ্যে আসিয়ানের সম্মেলনে ঐক্যের ডাক

আপডেট সময় : ১০:৪৬:০০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ মে ২০২৫

বাণিজ্য-নির্ভর অর্থনীতিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ শুল্কের প্রভাব থেকে মুক্ত করার চেষ্টার মধ্যে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার নেতারা চীন এবং ছয় সদস্যের উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদের (জিসিসি) সঙ্গে প্রথম শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন। এতে ঐক্যের ডাক দিয়েছেন নেতারা। মঙ্গলবার এক প্রতিবেদেন এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।

মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে ১০ সদস্যের অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান নেশনসের (আসিয়ান) বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে মঙ্গলবার এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। মালয়েশিয়ার সভাপতিত্বে ব্রুনাই, কম্বোডিয়া, লাওস, মায়ানমার, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনাম এতে যোগ দিয়েছে।

প্রতিবেদন বলছে, আসিয়ান এবং জিসিসির নেতাদের মধ্যে পৃথক আলোচনার পর এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বাহরাইন, কুয়েত, ওমান, কাতার, সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত এতে অন্তর্ভুক্ত ছিল।

মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম আসিয়ান-জিসিসি শীর্ষ সম্মেলনের উদ্বোধন করে বলেন, সহযোগিতা বৃদ্ধি, স্থিতিস্থাপকতা তৈরি এবং টেকসই সমৃদ্ধি নিশ্চিত করার জন্য দুটি ব্লকের মধ্যে শক্তিশালী সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ হবে।

তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং ভূ-রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জের দ্বারা চিহ্নিত ক্রমবর্ধমান জটিল বৈশ্বিক দৃশ্যপট অতিক্রম করার সময় আসিয়ান-জিসিসি অংশীদারত্ব আজকের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল না।

বৈঠকের আগে লিখিত বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভূ-রাজনৈতিক শৃঙ্খলার একটি পরিবর্তন চলছে এবং সাম্প্রতিক মার্কিন একতরফা শুল্ক আরোপের ফলে বিশ্ব বাণিজ্য ব্যবস্থা আরও চাপের মধ্যে রয়েছে। সংরক্ষণবাদের উত্থানের সাথে সাথে বিশ্ব বহুপাক্ষিকতা ভেঙে যাওয়ার সাক্ষীও হচ্ছে।

মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে আনোয়ার ইব্রাহিম আরও বলেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় নেতারা এই সমঝোতায় পৌঁছেছেন যে, বাণিজ্য শুল্ক নিয়ে তারা যেকোনো দ্বিপাক্ষিক চুক্তি করতে পারেন, তা একে অপরের অর্থনীতির ক্ষতি করবে না।

তিনি আরও বলেন, দ্বিপাক্ষিক আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার সময় … আসিয়ানের সাথে একমত হয়েছেন, সিদ্ধান্তগুলো অন্য কোনো দেশের জন্য নেওয়া উচিত নয়। সুতরাং আমাদের ৬৫০ বা ৬৬ কোটি মানুষের ভূমি রক্ষা করতে হবে।

এরআগে সোমবার কুয়ালালামপুরে পৌঁছানো চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং মঙ্গলবার আসিয়ান এবং জিসিসির প্রথম বৈঠকে যোগ দেন। সোমবার তিনি আনোয়ার ইব্রাহিমের সাথে দেখা করেন এবং বেইজিং, আসিয়ান এবং জিসিসির মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক সম্প্রসারণের আহ্বান জানান।

লি বলেন, যখন একতরফাবাদ এবং সুরক্ষাবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বিশ্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি মন্থর, তখন চীন, আসিয়ান এবং জিসিসি দেশগুলোর সমন্বয় ও সহযোগিতা জোরদার করা উচিত। একইসঙ্গে যৌথভাবে উন্মুক্ত আঞ্চলিকতা এবং সত্যিকারের বহুপাক্ষিকতা বজায় রাখা উচিত।

লি আনোয়ারকে বলেন, তিনটি পক্ষের মধ্যে ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক সহযোগিতা প্রচার এবং বিশ্বব্যাপী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় চীন মালয়েশিয়ার সাথে কাজ করতে ইচ্ছুক।

প্রতিবেদন বলছে, আসিয়ান নিরপেক্ষতার নীতি বজায় রেখেছে। বেইজিং এবং ওয়াশিংটন উভয়কেই সম্পৃক্ত করেছে এটি। কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্যাপক শুল্ক আরোপের হুমকি একটি ধাক্কা হিসেবে এসেছে। ব্লকের ছয় সদস্য সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৩২ শতাংশ থেকে ৪৯ শতাংশের মধ্যে শুল্ক আরোপ করা হয়েছে এদের ওপর। গত এপ্রিল মাসে ট্রাম্প বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের জন্য শুল্কের ওপর ৯০ দিনের বিরতি ঘোষণা করেন।

কুয়ালালামপুর থেকে আল জাজিরার রব ম্যাকব্রাইড বলেছেন, আসিয়ান সদস্যরা তাদের অর্থনৈতিক স্থিতিস্থাপকতা জোরদার করার জন্য বিশ্বের অন্যান্য অংশের সাথে বিশেষ করে চীনের সাথে, মধ্যপ্রাচ্যের সাথেও সম্পর্ক গড়ে তোলার দিকে খুব বেশি নজর দিচ্ছে।