ঢাকা ০৭:৩১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৬ জুন ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

‘সরকার জনগণের আকাঙ্ক্ষা উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হচ্ছে’

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১১:৩৬:৪৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫
  • / ৩৬৯ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জনগণের আকাঙ্ক্ষা উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, সংস্কারের বিষয়ে কোনো দলের আপত্তি নেই। তবে, সংস্কারের নামে অযথা সময়ক্ষেপণে সব দলের আপত্তি রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৯ মে) রাজধানীর রমনা ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ‘বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা স্বাধীনতার ঘোষক, বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ ও আধুনিক স্বনির্ভর বাংলাদেশের রূপকার’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে সভার আয়োজন করে বিএনপি।

তারেক রহমান বলেন, গণতন্ত্রের পক্ষে প্রতিটি রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে সরকারের কাছে সংস্কার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এজন্য আমি মনে করি, প্রস্তাবিত সংস্কার শেষ করে যদি তাদের উদ্দেশ্য সঠিক থাকে, গণতন্ত্রের পক্ষে থাকে, আমরা দাবি করেছি ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দিতে। তবে, আমি এটাও মনে করি, বিভিন্ন বিষয় বিবেচনা করে সংস্কার প্রস্তাবনাগুলোর বিষয়ে অধিকাংশ দল একমত হয়েছে। তাই ডিসেম্বরের আগেও নির্বাচন করা সম্ভব। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই, জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করুন। অবিলম্বে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্দিষ্ট দিনক্ষণ ঠিক করে জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন। এখানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জয় বা পরাজয়ের কিছু নেই। বরং স্বাধীনতা প্রিয় জনগণকে একটি সুস্থ নির্বাচন উপহার দিয়ে গণতন্ত্রকে বিজয়ী করতে সাহায্য করুন।

তিনি আরও বলেন, হাজারও শহীদের রক্তস্নাত বাংলাদেশের দীর্ঘ দেড় দশকের ফ্যাসিবাদী শাসনের পতন হয়েছে। একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বর্তমানে দেশ পরিচালনা করছে। কোনও অভ্যুত্থানের পর বিশেষ পরিস্থিতিতে দায়িত্ব নেওয়া এই সরকার হয়তো বৈধ। তবে এই সরকার কোনোভাবেই জবাবদিহিমূলক নয়। জনগণের কাছে এই সরকারের জবাবদিহি করার কোনো সুযোগ নেই।

তারেক রহমান আরও বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দশ মাসেও জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেনি। ফলে রাষ্ট্র এবং রাজনীতিতে এক ধরনের অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে। এই অনিশ্চয়তার কারণে দেশে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে।

জনগণের ভোটে নির্দিষ্ট মেয়াদে একটি সরকার না থাকায় দেশে কাঙ্ক্ষিত বিনিয়োগও হচ্ছে না বলে মনে করেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, ব্যবসায়িক সংগঠনগুলো বলছে, ইতোমধ্যে শত শত কলকারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। আরও অনেক কলকারখানা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। বিভিন্ন খাতে এ ধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে। জনগণের অসুবিধার কথা সরকারের কাছে তুলে ধরার সুযোগ পাচ্ছে না। অন্যদিকে স্বাভাবিক কারণে জনগণের সঙ্গে সরকারের বিভিন্ন উপদেষ্টাদের কোনো যোগাযোগ নেই। জনগণের সমস্যা সম্পর্কে তারা ওয়াকিবহাল নন। তারা অফিসে বসে ফাইলপত্র দেখে জনগণের সমস্যা হয়তো সমাধানের চেষ্টা করছেন।

‘কিন্তু জনগণের সঙ্গে যোগাযোগ ছাড়া, প্রশাসন নির্ভর সব সমস্যার সমাধান যদি করা যেত, তাহলে নিশ্চয়ই রাজনৈতিক দল এবং রাজনীতির প্রয়োজন হতো না’ —বলেও উল্লেখ করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।

বক্তব্য শেষে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের বিদেহী আত্মার প্রতি মাগফিরাত কামনা করেন তারেক রহমান।

একই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এছাড়া আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আব্দুল মঈন খান, সালাহউদ্দিন আহমেদ, ইকবাল মাহমুদ টুকু, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রমুখ।

নিউজটি শেয়ার করুন

‘সরকার জনগণের আকাঙ্ক্ষা উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হচ্ছে’

আপডেট সময় : ১১:৩৬:৪৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জনগণের আকাঙ্ক্ষা উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেন, সংস্কারের বিষয়ে কোনো দলের আপত্তি নেই। তবে, সংস্কারের নামে অযথা সময়ক্ষেপণে সব দলের আপত্তি রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৯ মে) রাজধানীর রমনা ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ‘বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা স্বাধীনতার ঘোষক, বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ ও আধুনিক স্বনির্ভর বাংলাদেশের রূপকার’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে সভার আয়োজন করে বিএনপি।

তারেক রহমান বলেন, গণতন্ত্রের পক্ষে প্রতিটি রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে সরকারের কাছে সংস্কার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এজন্য আমি মনে করি, প্রস্তাবিত সংস্কার শেষ করে যদি তাদের উদ্দেশ্য সঠিক থাকে, গণতন্ত্রের পক্ষে থাকে, আমরা দাবি করেছি ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দিতে। তবে, আমি এটাও মনে করি, বিভিন্ন বিষয় বিবেচনা করে সংস্কার প্রস্তাবনাগুলোর বিষয়ে অধিকাংশ দল একমত হয়েছে। তাই ডিসেম্বরের আগেও নির্বাচন করা সম্ভব। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই, জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করুন। অবিলম্বে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্দিষ্ট দিনক্ষণ ঠিক করে জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন। এখানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জয় বা পরাজয়ের কিছু নেই। বরং স্বাধীনতা প্রিয় জনগণকে একটি সুস্থ নির্বাচন উপহার দিয়ে গণতন্ত্রকে বিজয়ী করতে সাহায্য করুন।

তিনি আরও বলেন, হাজারও শহীদের রক্তস্নাত বাংলাদেশের দীর্ঘ দেড় দশকের ফ্যাসিবাদী শাসনের পতন হয়েছে। একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বর্তমানে দেশ পরিচালনা করছে। কোনও অভ্যুত্থানের পর বিশেষ পরিস্থিতিতে দায়িত্ব নেওয়া এই সরকার হয়তো বৈধ। তবে এই সরকার কোনোভাবেই জবাবদিহিমূলক নয়। জনগণের কাছে এই সরকারের জবাবদিহি করার কোনো সুযোগ নেই।

তারেক রহমান আরও বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দশ মাসেও জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেনি। ফলে রাষ্ট্র এবং রাজনীতিতে এক ধরনের অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে। এই অনিশ্চয়তার কারণে দেশে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে।

জনগণের ভোটে নির্দিষ্ট মেয়াদে একটি সরকার না থাকায় দেশে কাঙ্ক্ষিত বিনিয়োগও হচ্ছে না বলে মনে করেন তারেক রহমান। তিনি বলেন, ব্যবসায়িক সংগঠনগুলো বলছে, ইতোমধ্যে শত শত কলকারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। আরও অনেক কলকারখানা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। বিভিন্ন খাতে এ ধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে। জনগণের অসুবিধার কথা সরকারের কাছে তুলে ধরার সুযোগ পাচ্ছে না। অন্যদিকে স্বাভাবিক কারণে জনগণের সঙ্গে সরকারের বিভিন্ন উপদেষ্টাদের কোনো যোগাযোগ নেই। জনগণের সমস্যা সম্পর্কে তারা ওয়াকিবহাল নন। তারা অফিসে বসে ফাইলপত্র দেখে জনগণের সমস্যা হয়তো সমাধানের চেষ্টা করছেন।

‘কিন্তু জনগণের সঙ্গে যোগাযোগ ছাড়া, প্রশাসন নির্ভর সব সমস্যার সমাধান যদি করা যেত, তাহলে নিশ্চয়ই রাজনৈতিক দল এবং রাজনীতির প্রয়োজন হতো না’ —বলেও উল্লেখ করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান।

বক্তব্য শেষে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের বিদেহী আত্মার প্রতি মাগফিরাত কামনা করেন তারেক রহমান।

একই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। এছাড়া আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আব্দুল মঈন খান, সালাহউদ্দিন আহমেদ, ইকবাল মাহমুদ টুকু, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রমুখ।