ঢাকা ০৮:১২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৭ জুন ২০২৫, ২৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

আফ্রিকা মহাদেশে শীর্ষ স্বর্ণ উৎপাদনকারী দেশ ঘানা

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০১:১৫:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ জুন ২০২৫
  • / ৩৬০ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

২০২৫ সালে ঘানায় স্বর্ণের উৎপাদন ছয় দশমিক ২৫ শতাংশ বেড়ে ৫১ লাখ আউন্সে দাঁড়াবে। গেল বছর দেশটিতে রেকর্ড ৪৮ আউন্স স্বর্ণ উৎপাদন হয়েছিল। এরমধ্য দিয়ে আফ্রিকা মহাদেশে শীর্ষ স্বর্ণ উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে নিজেদের অবস্থান আরও সুদৃঢ় করলো ঘানা। মূল্যবান ধাতুটি দেশটির রপ্তানি আয় বৃদ্ধির পাশাপাশি তাদের মুদ্রাকে করেছে শক্তিশালী।

গেল কয়েক দশক ধরেই আফ্রিকা মহাদেশে শীর্ষ স্বর্ণ উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে পরিচিত ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি ও শ্রমিক অসন্তোষের কারণে দেশটিতে বিপর্যয়ের মুখে পড়ে শিল্পটি।

অন্যদিকে নতুন বিনিয়োগ এবং উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় ঘানায় দিন দিন বাড়ছে স্বর্ণ উৎপাদন। সেইসঙ্গে বড় পরিসরে কার্যক্রম চালু করায় প্রতি বছর দেশটিতে স্বর্ণের উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে ১০ শতাংশের বেশি। ২০১৯ সালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ছাড়িয়ে আফ্রিকা মহাদেশের শীর্ষ স্বর্ণ উৎপাদনকারী দেশে পরিণত হয় ঘানা।

ঘানার চেম্বার অফ মাইনস জানিয়েছে, ২০২৫ সালে দেশটিতে স্বর্ণের উৎপাদন ছয় দশমিক ২৫ শতাংশ বেড়ে ৫১ লাখ আউন্সে দাঁড়াবে। গত বছর এর পরিমাণ ছিল ৪৮ লাখ আউন্স। চলতি বছর প্রত্যাশার চেয়ে বেশি স্বর্ণ উৎপাদন করেবে দেশটি।

ঘানা চেম্বার অফ মাইনসের প্রেসিডেন্ট মাইকেল আকাফিয়া বলেন, ‘চলতি বছরে স্বর্ণ উৎপাদনের ভালো লক্ষণ এরইমধ্যে দেখা যাচ্ছে। যা আমাদের প্রত্যাশাকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে। মূল্যবান এই ধাতুটি বিক্রয় বাড়িয়ে তুলতে বোর্ড গঠন করে আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ায় স্বর্ণ ক্রয়-বিক্রয় করার চেষ্টা চলছে। এর মাধ্যমে বার্ষিক উৎপাদনের তথ্য আনুষ্ঠানিকভাবে সংগ্রহের ব্যবস্থা করা হবে। আপাতত এটিই মূল পরিকল্পনা।’

মূল্যবান ধাতুটির দামের ঊর্ধ্বগতির কারণে বাড়ছে ঘানার রপ্তানি আয়। পাশাপাশি ২০২৫ সালে মার্কিন ডলারের বিপরীতে দেশটির মুদ্রা সেডির মান বেড়েছে এক লাফে ৪০ শতাংশ। যা দেশটিকে চরম অর্থনৈতিক সংকট থেকে ঘুরে দাঁড়াতে সহায়তা করছে।

গেল বছর ঘানার মোট স্বর্ণ উৎপাদনে ছোট পরিসরের খনি শ্রমিকদের অবদান ছিল রেকর্ড প্রায় ৪০ শতাংশ। তাদের স্বর্ণ কেনা-বেচা সহজ, আয় বৃদ্ধি ও চোরাচালান ঠেকাতে বিদেশি স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের ঘানা ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেয় দেশটির সরকার। এছাড়া স্থানীয় স্বর্ণ ক্রয়ের ওপর থেকে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে হোল্ডিং ট্যাক্সও।

ঘানা ন্যাশনাল সোসিয়েশন অফ স্মল-স্কেল মাইনার্সের প্রেসিডেন্ট গডউইন আরমাহ বলেন, ‘ক্ষুদ্র পরিসরের খনি খাত দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অনেক বেশি অবদান রাখছে। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ১০ লাখ কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছে। এটি কাঁচা সোনার সরবরাহের অন্যতম একটি উৎস। আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম বেশি হওয়ায় ঘানায় উৎপাদনও বাড়ছে।’

ঘানার খনি খাতের ৭০ থেকে ৮০ শতাংশই লাইসেন্সবিহীন। পরিবেশগত হুমকি ও কোকো উৎপাদনে বিরূপ প্রভাবের কারণে নিষিদ্ধের আওতায় আছে স্বর্ণের বহু খনি। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভবিষ্যতে টেকসই উৎপাদন নিশ্চিতে একটি কাঠামোগত ও শক্তিশালী পদক্ষেপ প্রয়োজন।

স্বর্ণ ছাড়াও অন্যান্য খনিজ পদার্থ যেমন ম্যাঙ্গানিজের উৎপাদন এ বছর ৫০ থেকে ৮০ লাখ টনে উন্নীত করার পরিকল্পনা নিয়েছে ঘানা। এছাড়া, বক্সাইটের উৎপাদন ২০ লাখ টন এবং হীরার উৎপাদন চার লাখ ক্যারেটে উন্নীত করা হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আফ্রিকা মহাদেশে শীর্ষ স্বর্ণ উৎপাদনকারী দেশ ঘানা

আপডেট সময় : ০১:১৫:০৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ জুন ২০২৫

২০২৫ সালে ঘানায় স্বর্ণের উৎপাদন ছয় দশমিক ২৫ শতাংশ বেড়ে ৫১ লাখ আউন্সে দাঁড়াবে। গেল বছর দেশটিতে রেকর্ড ৪৮ আউন্স স্বর্ণ উৎপাদন হয়েছিল। এরমধ্য দিয়ে আফ্রিকা মহাদেশে শীর্ষ স্বর্ণ উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে নিজেদের অবস্থান আরও সুদৃঢ় করলো ঘানা। মূল্যবান ধাতুটি দেশটির রপ্তানি আয় বৃদ্ধির পাশাপাশি তাদের মুদ্রাকে করেছে শক্তিশালী।

গেল কয়েক দশক ধরেই আফ্রিকা মহাদেশে শীর্ষ স্বর্ণ উৎপাদনকারী দেশ হিসেবে পরিচিত ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি ও শ্রমিক অসন্তোষের কারণে দেশটিতে বিপর্যয়ের মুখে পড়ে শিল্পটি।

অন্যদিকে নতুন বিনিয়োগ এবং উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় ঘানায় দিন দিন বাড়ছে স্বর্ণ উৎপাদন। সেইসঙ্গে বড় পরিসরে কার্যক্রম চালু করায় প্রতি বছর দেশটিতে স্বর্ণের উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে ১০ শতাংশের বেশি। ২০১৯ সালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ছাড়িয়ে আফ্রিকা মহাদেশের শীর্ষ স্বর্ণ উৎপাদনকারী দেশে পরিণত হয় ঘানা।

ঘানার চেম্বার অফ মাইনস জানিয়েছে, ২০২৫ সালে দেশটিতে স্বর্ণের উৎপাদন ছয় দশমিক ২৫ শতাংশ বেড়ে ৫১ লাখ আউন্সে দাঁড়াবে। গত বছর এর পরিমাণ ছিল ৪৮ লাখ আউন্স। চলতি বছর প্রত্যাশার চেয়ে বেশি স্বর্ণ উৎপাদন করেবে দেশটি।

ঘানা চেম্বার অফ মাইনসের প্রেসিডেন্ট মাইকেল আকাফিয়া বলেন, ‘চলতি বছরে স্বর্ণ উৎপাদনের ভালো লক্ষণ এরইমধ্যে দেখা যাচ্ছে। যা আমাদের প্রত্যাশাকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে। মূল্যবান এই ধাতুটি বিক্রয় বাড়িয়ে তুলতে বোর্ড গঠন করে আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ায় স্বর্ণ ক্রয়-বিক্রয় করার চেষ্টা চলছে। এর মাধ্যমে বার্ষিক উৎপাদনের তথ্য আনুষ্ঠানিকভাবে সংগ্রহের ব্যবস্থা করা হবে। আপাতত এটিই মূল পরিকল্পনা।’

মূল্যবান ধাতুটির দামের ঊর্ধ্বগতির কারণে বাড়ছে ঘানার রপ্তানি আয়। পাশাপাশি ২০২৫ সালে মার্কিন ডলারের বিপরীতে দেশটির মুদ্রা সেডির মান বেড়েছে এক লাফে ৪০ শতাংশ। যা দেশটিকে চরম অর্থনৈতিক সংকট থেকে ঘুরে দাঁড়াতে সহায়তা করছে।

গেল বছর ঘানার মোট স্বর্ণ উৎপাদনে ছোট পরিসরের খনি শ্রমিকদের অবদান ছিল রেকর্ড প্রায় ৪০ শতাংশ। তাদের স্বর্ণ কেনা-বেচা সহজ, আয় বৃদ্ধি ও চোরাচালান ঠেকাতে বিদেশি স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের ঘানা ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেয় দেশটির সরকার। এছাড়া স্থানীয় স্বর্ণ ক্রয়ের ওপর থেকে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে হোল্ডিং ট্যাক্সও।

ঘানা ন্যাশনাল সোসিয়েশন অফ স্মল-স্কেল মাইনার্সের প্রেসিডেন্ট গডউইন আরমাহ বলেন, ‘ক্ষুদ্র পরিসরের খনি খাত দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অনেক বেশি অবদান রাখছে। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ১০ লাখ কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছে। এটি কাঁচা সোনার সরবরাহের অন্যতম একটি উৎস। আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম বেশি হওয়ায় ঘানায় উৎপাদনও বাড়ছে।’

ঘানার খনি খাতের ৭০ থেকে ৮০ শতাংশই লাইসেন্সবিহীন। পরিবেশগত হুমকি ও কোকো উৎপাদনে বিরূপ প্রভাবের কারণে নিষিদ্ধের আওতায় আছে স্বর্ণের বহু খনি। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভবিষ্যতে টেকসই উৎপাদন নিশ্চিতে একটি কাঠামোগত ও শক্তিশালী পদক্ষেপ প্রয়োজন।

স্বর্ণ ছাড়াও অন্যান্য খনিজ পদার্থ যেমন ম্যাঙ্গানিজের উৎপাদন এ বছর ৫০ থেকে ৮০ লাখ টনে উন্নীত করার পরিকল্পনা নিয়েছে ঘানা। এছাড়া, বক্সাইটের উৎপাদন ২০ লাখ টন এবং হীরার উৎপাদন চার লাখ ক্যারেটে উন্নীত করা হবে।