ঢাকা ০৪:৪৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

ইউক্রেনের ১১৭ ড্রোন হামলায় রাশিয়ার ৪১ যুদ্ধবিমান ধ্বংস

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১২:২৪:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ জুন ২০২৫
  • / ৩৭৮ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

রুশ ভূখণ্ডের ভেতর ড্রোন নিয়ে ৪টি বিমানঘাঁটিতে হামলা চালানোর জন্য দেড় বছর সময় নিয়েছে ইউক্রেনের নিরাপত্তা সংস্থা এসবিইউ। গতকাল (রোববার, ১ জুন) ১১৭টি ড্রোন দিয়ে চালানো হামলায় ৪১টি যুদ্ধবিমান ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আগে কিছুই টের পায়নি রাশিয়া। ক্ষতিগ্রস্ত বিমানগুলোর মধ্যে রয়েছে, টিইউ-৯৫, টিইউ-২২এম৩ এবং নজরদারি বিমান এ-৫। এতে রাশিয়ার আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সাত বিলিয়ন ডলার ছাড়াবে বলে দাবি ইউক্রেনের। এটিকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হিসেবে আখ্যা দিয়েছে মস্কো। এ অবস্থায় যুদ্ধবিরতি ইস্যুতে আজ (সোমবার, ২ জুন) তুরস্কে হতে যাওয়া বৈঠকের অগ্রগতি নিয়ে শঙ্কা বাড়ছে।

যুদ্ধ চলাকালে রুশ ভূখণ্ডে নজিরবিহীন এক ড্রোন হামলা চালালো ইউক্রেনের নিরাপত্তা সংস্থা এস.বি.ইউ। স্পাইডার ওয়েব নামের এই অভিযানে ব্যবহার করা হয়েছে ড্রোন। সাইবেরিয়াসহ চারটি অঞ্চলের সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোনগুলো আঘাত হানায় ৪০টিরও বেশি যুদ্ধবিমান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে দাবি কিয়েভের। ক্ষতিগ্রস্ত বিমানগুলোর মধ্যে রয়েছে, টিইউ-৯৫, টিইউ-২২এম৩ এবং নজরদারি বিমান এ-৫। এতে রাশিয়ার আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সাত বিলিয়ন ডলার ছাড়াবে বলে দাবি ইউক্রেনের।

চার হাজার কিলোমিটারেরও বেশি দূরে হামলা চালানো নিয়ে চাঞ্চ্যল্যকর তথ্যও প্রকাশ করেছে ইউক্রেন। জানা যায়, রুশ সেনাদের চোখ এড়িয়ে বিশেষভাবে প্রস্তুত ট্রাকে করে তাদের ভূখণ্ডেই নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ড্রোনগুলো। হামলার সময় দূর নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ট্রাকগুলোর ছাদ খুলে ১১৭টি ড্রোন দিয়ে নিখুঁতভাবে আঘাত হানা হয়। এর জন্য প্রস্তুত হতে দেড় বছরেরও বেশি সময় লেগেছে বলে দাবি করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।

তিনি বলেন, ‘আমাদের সেনাদের সফল আক্রমণে রাশিয়ার অনেক ক্ষতি হয়েছে। এটি ন্যায্যভাবেই তাদের প্রাপ্য ছিল। এই অপারেশনটি দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রস্তুত করা হয়েছিল। অভিযানে ১১৭টি ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছিল এবং সংশ্লিষ্ট সংখ্যক ড্রোন পাইলট ছিলেন। তারা নিরাপদে আছেন।’

ড্রোন অভিযানে রাশিয়ার যুদ্ধবিমানের ক্ষতি হওয়ায়, এটিকে মস্কোর জন্য এটি একটি কালো দিন বলে অভিহিত করছেন ইউক্রেনীয় এক বিমান চলাচল বিশেষজ্ঞ।

ইউক্রেনীয় বিমান চলাচল বিশেষজ্ঞ ভ্যালেরি রোমানেনকো বলেন, ‘প্রথমত, এটি রাশিয়ার উপর কটি শক্তিশালী আঘাত। কৌশলগত বিমান চলাচলের জন্যও। কমপক্ষে চারটি টিইউ-৯৫ এ আগুন লেগেছে, যা ভিডিওতে সবাই দেখেছে। যদিও আমার মনে হয় না ৪০টির বেশি সব ধ্বংস হয়েছে। এসবের মধ্যে হয়তো কিছু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’

এটাকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হিসেবে আখ্যা দিয়ে রাশিয়া দাবি করছে, রোববার পাঁচটি অঞ্চলে হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। বেশ কয়েকটি বিমান আগুনে কিছুটা ক্ষতি হলেও, প্রায় সব হামলাই প্রতিহতের দাবি রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের। এক ট্রাক চালককেও আটক করার দাবি করেছে রুশ বাহিনী।

এদিকে এক সাক্ষাৎকারে ইউক্রেনে মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিশেষ দূত কেইথ কেলগ পুতিনের সঙ্গে সুর মিলিয়ে এটিকে প্রক্সি যুদ্ধ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। ন্যাটোর পূর্বদিকে সম্প্রসারণ নিয়ে রাশিয়ার উদ্বেগ ন্যায্য এবং এই জোটে ইউক্রেনকে ওয়াশিংটন দেখতে চায় না বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

ইউক্রেনের জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিশেষ দূত কেইথ কেলগ বলেন, ‘পুতিন এটিকে ন্যাটোর দ্বারা একটি প্রক্সি যুদ্ধ বলে মনে করেন। এখন এটি স্পষ্ট। আপনি দেখেন ইউরোপীয় দেশগুলো সমর্থন দিয়ে আসলে কী করেছে। আমি বলতে চাইছি এটা স্পষ্ট এবং পুতিন সেদিকে তাকিয়ে আছেন। তাই সবাইকে একটু পিছিয়ে আসা উচিত।’

ইউক্রেন রাশিয়ায় হামলা চালানোর আগে, একটি প্রশিক্ষণ ঘাঁটিতে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ১২ জন ইউক্রেনীয় সেনা নিহত ও ৬০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। এ অবস্থায় যুদ্ধবিরতি ইস্যুতে সোমবার তুরস্কে হতে যাওয়া বৈঠকের অগ্রগতি নিয়ে শঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। যদিও উভয় দেশের প্রতিনিধি দল ইস্তাম্বুলে পৌঁছেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ইউক্রেনের ১১৭ ড্রোন হামলায় রাশিয়ার ৪১ যুদ্ধবিমান ধ্বংস

আপডেট সময় : ১২:২৪:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ জুন ২০২৫

রুশ ভূখণ্ডের ভেতর ড্রোন নিয়ে ৪টি বিমানঘাঁটিতে হামলা চালানোর জন্য দেড় বছর সময় নিয়েছে ইউক্রেনের নিরাপত্তা সংস্থা এসবিইউ। গতকাল (রোববার, ১ জুন) ১১৭টি ড্রোন দিয়ে চালানো হামলায় ৪১টি যুদ্ধবিমান ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আগে কিছুই টের পায়নি রাশিয়া। ক্ষতিগ্রস্ত বিমানগুলোর মধ্যে রয়েছে, টিইউ-৯৫, টিইউ-২২এম৩ এবং নজরদারি বিমান এ-৫। এতে রাশিয়ার আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সাত বিলিয়ন ডলার ছাড়াবে বলে দাবি ইউক্রেনের। এটিকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হিসেবে আখ্যা দিয়েছে মস্কো। এ অবস্থায় যুদ্ধবিরতি ইস্যুতে আজ (সোমবার, ২ জুন) তুরস্কে হতে যাওয়া বৈঠকের অগ্রগতি নিয়ে শঙ্কা বাড়ছে।

যুদ্ধ চলাকালে রুশ ভূখণ্ডে নজিরবিহীন এক ড্রোন হামলা চালালো ইউক্রেনের নিরাপত্তা সংস্থা এস.বি.ইউ। স্পাইডার ওয়েব নামের এই অভিযানে ব্যবহার করা হয়েছে ড্রোন। সাইবেরিয়াসহ চারটি অঞ্চলের সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোনগুলো আঘাত হানায় ৪০টিরও বেশি যুদ্ধবিমান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে দাবি কিয়েভের। ক্ষতিগ্রস্ত বিমানগুলোর মধ্যে রয়েছে, টিইউ-৯৫, টিইউ-২২এম৩ এবং নজরদারি বিমান এ-৫। এতে রাশিয়ার আর্থিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সাত বিলিয়ন ডলার ছাড়াবে বলে দাবি ইউক্রেনের।

চার হাজার কিলোমিটারেরও বেশি দূরে হামলা চালানো নিয়ে চাঞ্চ্যল্যকর তথ্যও প্রকাশ করেছে ইউক্রেন। জানা যায়, রুশ সেনাদের চোখ এড়িয়ে বিশেষভাবে প্রস্তুত ট্রাকে করে তাদের ভূখণ্ডেই নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ড্রোনগুলো। হামলার সময় দূর নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ট্রাকগুলোর ছাদ খুলে ১১৭টি ড্রোন দিয়ে নিখুঁতভাবে আঘাত হানা হয়। এর জন্য প্রস্তুত হতে দেড় বছরেরও বেশি সময় লেগেছে বলে দাবি করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।

তিনি বলেন, ‘আমাদের সেনাদের সফল আক্রমণে রাশিয়ার অনেক ক্ষতি হয়েছে। এটি ন্যায্যভাবেই তাদের প্রাপ্য ছিল। এই অপারেশনটি দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে প্রস্তুত করা হয়েছিল। অভিযানে ১১৭টি ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছিল এবং সংশ্লিষ্ট সংখ্যক ড্রোন পাইলট ছিলেন। তারা নিরাপদে আছেন।’

ড্রোন অভিযানে রাশিয়ার যুদ্ধবিমানের ক্ষতি হওয়ায়, এটিকে মস্কোর জন্য এটি একটি কালো দিন বলে অভিহিত করছেন ইউক্রেনীয় এক বিমান চলাচল বিশেষজ্ঞ।

ইউক্রেনীয় বিমান চলাচল বিশেষজ্ঞ ভ্যালেরি রোমানেনকো বলেন, ‘প্রথমত, এটি রাশিয়ার উপর কটি শক্তিশালী আঘাত। কৌশলগত বিমান চলাচলের জন্যও। কমপক্ষে চারটি টিইউ-৯৫ এ আগুন লেগেছে, যা ভিডিওতে সবাই দেখেছে। যদিও আমার মনে হয় না ৪০টির বেশি সব ধ্বংস হয়েছে। এসবের মধ্যে হয়তো কিছু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’

এটাকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হিসেবে আখ্যা দিয়ে রাশিয়া দাবি করছে, রোববার পাঁচটি অঞ্চলে হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। বেশ কয়েকটি বিমান আগুনে কিছুটা ক্ষতি হলেও, প্রায় সব হামলাই প্রতিহতের দাবি রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের। এক ট্রাক চালককেও আটক করার দাবি করেছে রুশ বাহিনী।

এদিকে এক সাক্ষাৎকারে ইউক্রেনে মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিশেষ দূত কেইথ কেলগ পুতিনের সঙ্গে সুর মিলিয়ে এটিকে প্রক্সি যুদ্ধ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। ন্যাটোর পূর্বদিকে সম্প্রসারণ নিয়ে রাশিয়ার উদ্বেগ ন্যায্য এবং এই জোটে ইউক্রেনকে ওয়াশিংটন দেখতে চায় না বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

ইউক্রেনের জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিশেষ দূত কেইথ কেলগ বলেন, ‘পুতিন এটিকে ন্যাটোর দ্বারা একটি প্রক্সি যুদ্ধ বলে মনে করেন। এখন এটি স্পষ্ট। আপনি দেখেন ইউরোপীয় দেশগুলো সমর্থন দিয়ে আসলে কী করেছে। আমি বলতে চাইছি এটা স্পষ্ট এবং পুতিন সেদিকে তাকিয়ে আছেন। তাই সবাইকে একটু পিছিয়ে আসা উচিত।’

ইউক্রেন রাশিয়ায় হামলা চালানোর আগে, একটি প্রশিক্ষণ ঘাঁটিতে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ১২ জন ইউক্রেনীয় সেনা নিহত ও ৬০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। এ অবস্থায় যুদ্ধবিরতি ইস্যুতে সোমবার তুরস্কে হতে যাওয়া বৈঠকের অগ্রগতি নিয়ে শঙ্কা করছেন বিশ্লেষকরা। যদিও উভয় দেশের প্রতিনিধি দল ইস্তাম্বুলে পৌঁছেছে।