উত্তর-পূর্ব ভারতে টানা দুর্যোগে মৃত ৩৬

- আপডেট সময় : ০৫:২৩:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ জুন ২০২৫
- / ৩৫৯ বার পড়া হয়েছে

গেল চার দিনে ভারতের উত্তর-পূর্বঞ্চলীয় রাজ্য আসাম, মণিপুর, ত্রিপুরা, সিকিম ও অরুণাচল প্রদেশে একটানা প্রবল বৃষ্টিপাত, আকস্মিক বন্যা ও তীব্র ঝড়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৬ জনে। সবচেয়ে বেশি আসামে ১১ জন নিহত হয়েছেন, অরুণাচল প্রদেশে ১০, মেঘালয়ে ৬ ও মিজোরামে ৫ ও সিকিমে ৩ জন নিহত হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় সাড়ে ৫ মানুষ।
এসব রাজ্য ছাড়াও ভারী বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে নয়াদিল্লি, মুম্বাই ও বেঙ্গালুরু শহর। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমের আগে ভারতের বড় একটা অংশ পানিতে তলিয়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে অপরিকল্পিত নগরায়ণ ও জলবায়ু বিপর্যয়কে দায়ী করছেন দেশটির নগরবিদরা।
ভারী বৃষ্টি, ভূমিধস ও আকস্মিক বন্যায় কবলে ভারতে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলো। আসাম, মণিপুর, ত্রিপুরা, সিকিম ও অরুণাচলের পরিস্থিতি সবচেয়ে ভয়াবহ। গেল কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে পানিতে তলিয়েছে এসব রাজ্যের বেশিরভাগ জেলা। হতাহত হয়েছে বেশ কয়েকজন।
আসামের পরিস্থিতি সবচেয়ে ভয়াবহ। রাজ্যটির ২২ টি জেলা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। ব্যহত হচ্ছে এসব জেলা রেল ও সড়ক যোগাযোগ। ডিব্রুগড়, নিমাতিঘাটসহ বেশ কয়েকটি পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। এ পরিস্থিতি রাজ্যটির লক্ষ্মীপুর জেলা পরিদর্শন করেছেন রাজ্যের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হিমান্ত বিশ্ব শর্মা। সেসময় ক্ষতিগ্রস্তদের সর্বোচ্চ সহায়তার আশ্বাস দেন তিনি।
মণিপুরে আকস্মিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় অর্ধলাখ মানুষ। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ১০ হাজার বাড়িঘর। তাদের সহায়তায় খোলা হয়েছে প্রায় ৬০ টি আশ্রয়কেন্দ্র।
সিকিমে এখনও আটকা পড়েছে আছেন প্রায় ১ হাজার ২০০ পর্যটক। আবহাওয়ার বৈরীতায় তাদের উদ্ধার করা কঠিন হচ্ছে বলে জানান দমকলকর্মীরা।
উত্তর-পূর্বাঞ্চল ছাড়াও ভারী বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি, গুরুত্বপূর্ণ শহর মুম্বাই ও হাই-টেক বেঙ্গালুরু। বর্ষা মৌসুমের আগেই পানির নিচে ভারতের বড় একটা অংশ প্লাবিত হচ্ছে পানিতে।
এমনকি, মেট্রোরেল স্টেশনগুলোতে হরহামেশাই পানি ঢুকে পড়েছে। শহর ও নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতায় আটকা পড়েছে হাজার হাজার মানুষ। ব্যাহত হচ্ছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। প্রায় প্রতিবছরই ভারতের বন্যার পরিস্থিতির এ চিত্র দেখে হতাশ ভারতবাসী।
ভারতের বন্যার কারণ নিয়ে মুম্বাইয়ের অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণের নাগরিক সংগঠন বৃহন্মুম্বাই মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন বিবিসিকে জানায়, শহরের নির্মাণসামগ্রীসহ বিভিন্ন ময়লা-আবর্জনার কারণে পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে। আর এতেই পানি আটকে তৈরি হচ্ছে জলাবদ্ধতা।
মুম্বাই, নয়াদিল্লি ও বেঙ্গালুরুর বন্যার জন্য অপরিকল্পিত নগরায়ণ ও দীর্ঘদিন ধরে পরিবেশবিরোধী কার্যকলাপকে দুষছেন বিশেষজ্ঞরা। এ ছাড়াও বসবাসের অযোগ্য এসব শহরে বন্যার ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো কঠিন হয়ে পড়েছে বলে মনে করেন তারা।
ভারতে মোট বৃষ্টির ৮০ শতাংশই সাধারণত জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হয়ে থাকে। তবে জলবায়ু বিপর্যয়ের কারণে মৌসুমের আগেই বৃষ্টিপাত শুরু হয়ে যায়। আর এতে কৃষিখাতেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে ভারতের।