আজ শুরু হচ্ছে পবিত্র হজ। মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে বড় বার্ষিক মিলনমেলা। এ বছর কতো মানুষ হজ পালন করছেন জানা না গেলেও, সংখ্যাটি ২০ লাখ ছাড়িয়ে যেতে পারে- তেমন প্রস্তুতি কর্তৃপক্ষের। এর মধ্যেই গরমে অসুস্থ হয়েছেন অর্ধশত মুসল্লি। তীব্র গরমে নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং অতিরিক্ত ভিড় এড়াতে অননুমোদিত হজ ঠেকাতে এ বছর কঠোর সৌদি সরকার।

ইসলাম ধর্মের পাঁচটি স্তম্ভের একটি পবিত্র হজ। আজ (বুধবার, ৪ জুন) শুরু হচ্ছে এর আনুষ্ঠানিকতা । আল্লাহর ঘর খ্যাত কাবা শরীফ সাতবার তাওয়াফের মধ্য দিয়ে শুরু হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা।

কাবা তাওয়াফ শেষে পবিত্রভূমি মক্কা থেকে আট কিলোমিটার দূরে মরুর উপত্যকা মিনার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করবেন মুসল্লিরা। দিনভর চলবে এ প্রক্রিয়া, ইবাদত-বন্দেগিতে তাদের রাত কাটবে তাঁবুতে।

মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে বড় বার্ষিক মিলনমেলায় এ বছর কতো মানুষ অংশ নিচ্ছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে হজ শুরুর তিনদিন আগেই মক্কায় বিধি মেনে প্রবেশ করেছেন দেশবিদেশের ১৪ লাখের বেশি মুসল্লি। সংখ্যাটি ২০ লাখ ছাড়িয়ে যেতে পারে- তেমন প্রস্তুতি হজ কর্তৃপক্ষের।

ইসলামিক বর্ষপঞ্জির শেষ মাস জ্বিলহজের অষ্টম দিন থেকে হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। চান্দ্র বা সৌরবর্ষ নয় বলে গ্রেগরিয়ান বর্ষপঞ্জিতে হজের সময় প্রতি বছর একটু করে এগিয়ে আসে।

ধীরে ধীরে শীতের দিকে এগিয়ে যেতে থাকলেও এ বছরও হজের সময় পড়েছে গ্রীষ্মের শুরুতে, গেল বছরের মতোই প্রখর রোদ ও গরমের মধ্যে। সৌদি সরকারের আনুষ্ঠানিক তথ্যমতে, গেল বছর দেশটিতে হজ পালনের সময় প্রাণ গেছে প্রায় ১ হাজার ৩০০ মানুষের।

সামর্থ্যবান মুসলিমদের জন্য জীবনে অন্তত একবার হজ পালন বাধ্যতামূলক। দিনে দিনে হজের সুযোগ যেমন সহজলভ্য হয়েছে ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের জন্য, তেমনি অতিরিক্ত ভিড় থেকে শুরু করে জলবায়ুসহ নানা চ্যালেঞ্জও বেড়েছে হাজি ও হজ কর্তৃপক্ষের জন্য।

গেল বছরের অভিজ্ঞতা সম্বল করে তাই এ বছর তীব্র গরমে নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং অতিরিক্ত ভিড় ঠেকাতে অননুমোদিত হজ ঠেকাতে এ বছর কঠোর সৌদি সরকার।

স্বস্তিতে হজ পালন এবং অতিরিক্ত ভিড় ঠেকাতে ১৯৮৭ সাল থেকে মক্কায় প্রত্যাশীদের জন্য কোটা ব্যবস্থা চালু করে সৌদি সরকার। প্রত্যেক দেশ থেকে মোট জনসংখ্যার শূন্য দশমিক এক শতাংশ মানুষ প্রতি বছর হজ পালনের সুযোগ পান।

২০১৯ সালের সরকারি তথ্য অনুযায়ী, হজ ও ওমরাহ থেকে বছরে এক হাজার ২০০ কোটি ডলারের রাজস্ব আয় করে সৌদি আরব। খনিজ তেলের মজুত আবিষ্কার ও রপ্তানির আগ পর্যন্ত হজই ছিল সৌদি আরবের অর্থনীতিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাত।

তেলের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে ২০৩০ সালের মধ্যে বছরে তিন কোটি হজ ও ওমরাহ পালনকারীদের স্বাগত জানানোর প্রস্তুতি নিয়ে এগোচ্ছে সৌদি সরকার।