ঢাকা ১২:১১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৮ জুন ২০২৫, ২৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

বৈরী আবহাওয়ায় চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজজট, রপ্তানিতে ধাক্কা

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০২:৩১:৪৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ জুন ২০২৫
  • / ৩৪৪ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

কাস্টম কর্মকর্তাদের আন্দোলনের পর বৈরী আবহাওয়ায় চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে দেখা দিয়েছে জাহাজের জট। বৃষ্টিতে খাদ্যশস্য ও খোলা পণ্য খালাসে ব্যাহত হওয়ায় সময়মতো জেটিতে ভিড়তে পারছে না জাহাজ। বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে রপ্তানিখাত। ঈদের আগে বাড়তি চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে ডিপো ও বন্দর কর্তৃপক্ষ। পরিবহন ভাড়া বেড়েছে চার থেকে পাঁচ গুণ। যদিও ছুটিতে কার্যক্রম সচল রাখতে বিশেষ টাস্কফোর্স গঠনসহ খোলা হয়েছে হটলাইন।

গেল ১৫ মে শ্রমিক নেতাকে মারধরের প্রতিবাদে কনটেইনারবাহী পরিবহন শ্রমিকদের কর্মবিরতি। এরপর রাজস্ব বোর্ড বিভক্তির প্রতিবাদের কাস্টমস কর্মকর্তাদের কলমবিরতি। এসব ধকল কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টার মধ্যে এবার বৈরী আবহাওয়ায় গেল সপ্তাহে দুদিন জেটিতে ভিড়তে পারেনি কোনো জাহাজ।

সেই সঙ্গে টানা এক সপ্তাহের বেশি সময় চট্টগ্রামে ভারি থেকে মাঝারি বর্ষণের কারণে ব্যাহত হচ্ছে আমদানি পণ্য খালাস কার্যক্রম। এতে নির্ধারিত সময়ে বন্দরের জেটিতে ভিড়তে পারছে না জাহাজগুলো। ফলে রপ্তানি পণ্য জাহাজীকরণে দেরি হচ্ছে। এর মধ্যে ঈদের আগে অতিরিক্ত রপ্তানি পণ্যের চাপে হিমশিম অবস্থা ডিপোগুলোর। এক লাখ টিইইউএস ধারণক্ষমতার বিপরীতে ডিপোগুলোতে বর্তমানে কনটেইনার আছে ৮০ হাজার।

বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপোটস অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব রুহুল আমিন শিকদার বলেন, ‘এই পরিমাণ জাহাজ কিন্তু চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়ছে না যে, রপ্তানি পণ্যবাহী কনটেইনারগুলো নিয়ে যাবে। যার ফলে রপ্তানি পণ্যবাহী কনটেইনারগুলোর একটা বিশার জট লেগে আছে। আমরা মনে করি যে, ঈদের পর থেকে এটা ধীরে ধীরে কেটে যাবে।’

চট্টগ্রাম কাস্টমস এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এস এম সাইফুল আলম বলেন, ‘ঘটনা হচ্ছে এখানে ডিপোর সক্ষমতার বিষয়। রপ্তানির কনটেইনারগুলো তারা রিসিভ করতে পারছে না। জায়গার সংকুলান আছে, রাস্তায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে।’

ডিপোগুলোতে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় রপ্তানিপণ্য নিয়ে বাইরেই দাঁড়িয়ে আছে প্রায় সাত হাজার ট্রাক। এতে কারখানা থেকে ডিপোতে পণ্য পরিবহনের ভাড়া বেড়ে ঠেকেছে ৫ থেকে ২০ হাজার টাকায়। আর ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে পরিবহন ভাড়া ২০ হাজার থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬০ হাজার টাকায়।

গার্মেন্টস অ্যাক্সেসরিজ এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের উপদেষ্টা লতিফুর রহমান আজিম বলেন, ‘ডিপোগুলোতে ধারণক্ষমতার বাইরে অনেক পণ্য চলে আসছে যার জন্য কাভার্ড ভ্যানগুলো রাস্তায় দিনের পর দিন অপেক্ষমাণ। কিন্তু পণ্য আনলোড করতে পারছে না। আর আনলেডা করতে না পারলে রপ্তানিও সময়মতো হবে না। সময়মতো না হলে এটার খেসারত রপ্তানিকারকদেরই দিতে হবে।’

বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে কিছুটা সংকট হলেও জেটি খালি হওয়া মাত্রই জাহাজগুলোকে ভেড়ার জন্য সিরিয়াল দেয়া হচ্ছে। পণ্য ডেলিভারি বাড়ায় দ্রুত সংকট কেটে যাওয়ার আশা তাদের।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার ও মেরিন সদস্য ক্যাপ্টেন আহমেদ আমিন আব্দুল্লাহ বলেন, ‘যে সমস্ত জাহাজ আউটারেজ থেকে লাইটারেজ করছে তাদের কিন্তু সমস্যা হচ্ছে না। যারা কনসার্নে আছে, যারা নিয়ে আসছে তারা যদি আমাদের কাছে আবেদন করে তাহলে আমরা তাদের সুবিধাজনক বাল্ক পর্যন্ত বাল্ক খালাস করার জন্য অনুমতি দিচ্ছি।’

চট্টগ্রাম বন্দরে সচল জেটি রয়েছে ১৬টি। বহির্নোঙরে অপেক্ষায় আছে বর্তমানে ২৩টির মতো জাহাজ।

নিউজটি শেয়ার করুন

বৈরী আবহাওয়ায় চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজজট, রপ্তানিতে ধাক্কা

আপডেট সময় : ০২:৩১:৪৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ জুন ২০২৫

কাস্টম কর্মকর্তাদের আন্দোলনের পর বৈরী আবহাওয়ায় চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে দেখা দিয়েছে জাহাজের জট। বৃষ্টিতে খাদ্যশস্য ও খোলা পণ্য খালাসে ব্যাহত হওয়ায় সময়মতো জেটিতে ভিড়তে পারছে না জাহাজ। বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে রপ্তানিখাত। ঈদের আগে বাড়তি চাপ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে ডিপো ও বন্দর কর্তৃপক্ষ। পরিবহন ভাড়া বেড়েছে চার থেকে পাঁচ গুণ। যদিও ছুটিতে কার্যক্রম সচল রাখতে বিশেষ টাস্কফোর্স গঠনসহ খোলা হয়েছে হটলাইন।

গেল ১৫ মে শ্রমিক নেতাকে মারধরের প্রতিবাদে কনটেইনারবাহী পরিবহন শ্রমিকদের কর্মবিরতি। এরপর রাজস্ব বোর্ড বিভক্তির প্রতিবাদের কাস্টমস কর্মকর্তাদের কলমবিরতি। এসব ধকল কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টার মধ্যে এবার বৈরী আবহাওয়ায় গেল সপ্তাহে দুদিন জেটিতে ভিড়তে পারেনি কোনো জাহাজ।

সেই সঙ্গে টানা এক সপ্তাহের বেশি সময় চট্টগ্রামে ভারি থেকে মাঝারি বর্ষণের কারণে ব্যাহত হচ্ছে আমদানি পণ্য খালাস কার্যক্রম। এতে নির্ধারিত সময়ে বন্দরের জেটিতে ভিড়তে পারছে না জাহাজগুলো। ফলে রপ্তানি পণ্য জাহাজীকরণে দেরি হচ্ছে। এর মধ্যে ঈদের আগে অতিরিক্ত রপ্তানি পণ্যের চাপে হিমশিম অবস্থা ডিপোগুলোর। এক লাখ টিইইউএস ধারণক্ষমতার বিপরীতে ডিপোগুলোতে বর্তমানে কনটেইনার আছে ৮০ হাজার।

বাংলাদেশ ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপোটস অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব রুহুল আমিন শিকদার বলেন, ‘এই পরিমাণ জাহাজ কিন্তু চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়ছে না যে, রপ্তানি পণ্যবাহী কনটেইনারগুলো নিয়ে যাবে। যার ফলে রপ্তানি পণ্যবাহী কনটেইনারগুলোর একটা বিশার জট লেগে আছে। আমরা মনে করি যে, ঈদের পর থেকে এটা ধীরে ধীরে কেটে যাবে।’

চট্টগ্রাম কাস্টমস এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এস এম সাইফুল আলম বলেন, ‘ঘটনা হচ্ছে এখানে ডিপোর সক্ষমতার বিষয়। রপ্তানির কনটেইনারগুলো তারা রিসিভ করতে পারছে না। জায়গার সংকুলান আছে, রাস্তায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে।’

ডিপোগুলোতে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় রপ্তানিপণ্য নিয়ে বাইরেই দাঁড়িয়ে আছে প্রায় সাত হাজার ট্রাক। এতে কারখানা থেকে ডিপোতে পণ্য পরিবহনের ভাড়া বেড়ে ঠেকেছে ৫ থেকে ২০ হাজার টাকায়। আর ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে পরিবহন ভাড়া ২০ হাজার থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬০ হাজার টাকায়।

গার্মেন্টস অ্যাক্সেসরিজ এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের উপদেষ্টা লতিফুর রহমান আজিম বলেন, ‘ডিপোগুলোতে ধারণক্ষমতার বাইরে অনেক পণ্য চলে আসছে যার জন্য কাভার্ড ভ্যানগুলো রাস্তায় দিনের পর দিন অপেক্ষমাণ। কিন্তু পণ্য আনলোড করতে পারছে না। আর আনলেডা করতে না পারলে রপ্তানিও সময়মতো হবে না। সময়মতো না হলে এটার খেসারত রপ্তানিকারকদেরই দিতে হবে।’

বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে কিছুটা সংকট হলেও জেটি খালি হওয়া মাত্রই জাহাজগুলোকে ভেড়ার জন্য সিরিয়াল দেয়া হচ্ছে। পণ্য ডেলিভারি বাড়ায় দ্রুত সংকট কেটে যাওয়ার আশা তাদের।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার ও মেরিন সদস্য ক্যাপ্টেন আহমেদ আমিন আব্দুল্লাহ বলেন, ‘যে সমস্ত জাহাজ আউটারেজ থেকে লাইটারেজ করছে তাদের কিন্তু সমস্যা হচ্ছে না। যারা কনসার্নে আছে, যারা নিয়ে আসছে তারা যদি আমাদের কাছে আবেদন করে তাহলে আমরা তাদের সুবিধাজনক বাল্ক পর্যন্ত বাল্ক খালাস করার জন্য অনুমতি দিচ্ছি।’

চট্টগ্রাম বন্দরে সচল জেটি রয়েছে ১৬টি। বহির্নোঙরে অপেক্ষায় আছে বর্তমানে ২৩টির মতো জাহাজ।