ঢাকা ০৬:১৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫, ১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी
ব্রেকিং নিউজ ::
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ইরানের বন্দর আব্বাসের গ্যাস স্থাপনা, ইস্পাহানের পারমাণবিক স্থাপনা এবং তেহরানের অন্যান্য লক্ষ্যবস্তুতে বড় ধরনের হামলা চালিয়েছে: ইসরায়েলি মিডিয়া :::: ইরানের রাজধানী তেহরান, হরমোজগান, কেরমানশাহ, পশ্চিম আজারবাইজান, লোরেস্তান ও খুজেস্তানসহ ইরানের বেশ কয়েকটি অঞ্চলে নতুন করে তীব্র হামলা চালিয়েছে ইসরাইল :::: ইরানের ওপর ইসরায়েলি হামলার নিন্দা জানিয়ে চীনের শীর্ষ কূটনীতিক বলেছেন, কূটনৈতিক উপায় 'এখনো শেষ হয়ে যায়নি' :::: ইসরায়েল-ইরান সংঘাত নিয়ে আলোচনা করলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান ও সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট শারা :::: ইসরাইলি হামলায় ইরানের এসফাহান পরমাণু স্থাপনার চারটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে: আইএইএ :::: ইরানে ইসরায়েলি হামলাকে 'অসহনীয়' বলল জাপান :::: ইরানের প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ানের সঙ্গে কথা বললেন ফরাসী প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ :::: ইরানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ফোনালাপে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা জানিয়েছেন কাতারের শেখ তামিম :::: ইরানের সামরিক বাহিনী বলছে, দেশের বিভিন্ন এলাকায় ইসরায়েলের ১০টি বিমান ভূপাতিত করা হয়েছে :::: ইরানের গ্যাসক্ষেত্রে বেসামরিক অবকাঠামোতে ইসরাইলি হামলা ::: তেহরানে অ্যাপার্টমেন্ট ব্লক হামলায় নিহত ৪০

ইউক্রেনে চরম প্রতিশোধের প্রস্তুতি নিচ্ছে রাশিয়া

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১০:৩৮:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ জুন ২০২৫
  • / ৩৬৫ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে এক অদ্ভুত দ্বিমুখী কৌশলে হাঁটছে রাশিয়া। একদিকে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন শান্তি আলোচনার সম্ভাবনার কথা বললেও, অন্যদিকে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ভয়াবহ সামরিক অভিযান চালাতে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিচ্ছে রুশ সেনাবাহিনী। বন্দি বিনিময়, শান্তি আলোচনার রোডম্যাপ ও কূটনৈতিক তৎপরতার আড়ালে রাশিয়ার এই যুদ্ধ প্রস্তুতির তথ্য উঠে এসেছে সম্প্রতি ইয়াহু নিউজ প্রকাশিত এক বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদনে।

প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, যুক্তরাষ্ট্র ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিলেও রাশিয়া তা প্রত্যাখ্যান করে সীমান্তে নতুন করে হাজার হাজার সেনা মোতায়েন করেছে। ইউক্রেনের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার বরাতে বলা হয়, আসন্ন গ্রীষ্মে রাশিয়া একটি বড় ধরনের হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে, যার চূড়ান্ত লক্ষ্য ডনবাস অঞ্চল।

২০২৫ সালের মে মাসে রুশ বাহিনী গড়ে প্রতিদিন ৫.৫ বর্গমাইল ইউক্রেনীয় ভূখণ্ড দখল করেছে- যা এপ্রিলের তুলনায় দ্বিগুণ। এখন রাশিয়ার প্রধান লক্ষ্য ডনবাস অঞ্চল। এর মধ্যে লুহানস্কের ৯৯ শতাংশ ও ডোনেৎস্কের ৭৭ শতাংশ অংশ ইতোমধ্যেই রুশ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

বিশেষভাবে টার্গেটে রয়েছে কোস্তিয়ানতিনিভকা শহর- একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও রেল জংশন। এটি দখলে গেলে ইউক্রেনের রসদ সরবরাহ মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হবে। একইসঙ্গে কৌশলগত শহর ক্রামাতরস্ক রুশ রকেটের সরাসরি পাল্লায় চলে আসবে।

এই যুদ্ধে বড় ট্যাঙ্কের সজ্জা এখন অতীত। রুশ বাহিনী এখন ছোট ছোট ইউনিটে হামলা চালাচ্ছে, তিন থেকে পাঁচজনের দল খচ্চর ব্যবহার করে রসদ বহন করছে

আধুনিক কৌশলে পাল্টে যাচ্ছে যুদ্ধের চেহারা
ইউক্রেন যুদ্ধের ধরনও পরিবর্তিত হচ্ছে। বিশাল ট্যাঙ্ক কনভয়ের বদলে এখন ছোট ছোট হামলা ইউনিট গঠন করছে রুশ সেনারা। তারা তিন থেকে পাঁচজনের দলে ভাগ হয়ে খচ্চর ব্যবহার করে রসদ বহন করছে। এই কৌশল ইউক্রেনীয় প্রতিরোধকে বিভ্রান্ত করছে।

সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো রাশিয়ার ড্রোন সক্ষমতা। ইরানের শাহেদ ড্রোন থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে রাশিয়া তৈরি করেছে নিজস্ব গেরান-২ ড্রোন, যার দৈনিক উৎপাদন সংখ্যা ইতোমধ্যেই ১০০ ছাড়িয়ে গেছে। এ ছাড়া ‘ফাইবার-অপটিক এফপিভি ড্রোন’, যা রেডিও ছাড়াই পরিচালিত হয়, ইউক্রেনীয় সেনাদের কাছে ‘অদৃশ্য ঘাতক’ হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছে।

যুদ্ধের চাপ সামাল দিতে বড় অঙ্কের বোনাস ও বেতনের মাধ্যমে নতুন সৈন্য নিয়োগ দিচ্ছে রাশিয়া। বর্তমানে রুশ সেনাবাহিনীর আকার ৬ লাখ ২০ হাজার ছাড়িয়েছে। যদিও ২০২৪ সালেই দেশটি ৪ লাখের বেশি সৈন্য হারিয়েছে বলে পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর দাবি।

বিশ্লেষকরা বলছেন, রাশিয়া সাময়িকভাবে এগিয়ে থাকলেও যুদ্ধ দীর্ঘ হলে পাল্টা চাপে পড়বে তারাই। কারণ যুদ্ধের কারণে দেশটির অর্থনীতি ইতোমধ্যে নড়বড়ে হয়ে উঠেছে। মুদ্রাস্ফীতি বেড়েছে, সুদের হার ২১ শতাংশ, নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে এবং জাতীয় অর্থ তহবিল নিঃশেষের পথে। বিশ্বব্যাংকের মতে, এই অর্থনৈতিক মডেল টেকসই নয়।

সবমিলিয়ে, এই যুদ্ধ আর শুধু কামান-বন্দুকের নয়; এটি প্রযুক্তি, মনোবল ও অর্থনৈতিক শক্তির এক জটিল লড়াই। সামনের গ্রীষ্মেই হয়তো নির্ধারিত হবে কার ঘাড়ে চাপে যুদ্ধের আসল বোঝা। সূত্র: ইয়াহু নিউজ

নিউজটি শেয়ার করুন

ইউক্রেনে চরম প্রতিশোধের প্রস্তুতি নিচ্ছে রাশিয়া

আপডেট সময় : ১০:৩৮:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ জুন ২০২৫

ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে এক অদ্ভুত দ্বিমুখী কৌশলে হাঁটছে রাশিয়া। একদিকে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন শান্তি আলোচনার সম্ভাবনার কথা বললেও, অন্যদিকে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে ভয়াবহ সামরিক অভিযান চালাতে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিচ্ছে রুশ সেনাবাহিনী। বন্দি বিনিময়, শান্তি আলোচনার রোডম্যাপ ও কূটনৈতিক তৎপরতার আড়ালে রাশিয়ার এই যুদ্ধ প্রস্তুতির তথ্য উঠে এসেছে সম্প্রতি ইয়াহু নিউজ প্রকাশিত এক বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদনে।

প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, যুক্তরাষ্ট্র ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিলেও রাশিয়া তা প্রত্যাখ্যান করে সীমান্তে নতুন করে হাজার হাজার সেনা মোতায়েন করেছে। ইউক্রেনের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার বরাতে বলা হয়, আসন্ন গ্রীষ্মে রাশিয়া একটি বড় ধরনের হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে, যার চূড়ান্ত লক্ষ্য ডনবাস অঞ্চল।

২০২৫ সালের মে মাসে রুশ বাহিনী গড়ে প্রতিদিন ৫.৫ বর্গমাইল ইউক্রেনীয় ভূখণ্ড দখল করেছে- যা এপ্রিলের তুলনায় দ্বিগুণ। এখন রাশিয়ার প্রধান লক্ষ্য ডনবাস অঞ্চল। এর মধ্যে লুহানস্কের ৯৯ শতাংশ ও ডোনেৎস্কের ৭৭ শতাংশ অংশ ইতোমধ্যেই রুশ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

বিশেষভাবে টার্গেটে রয়েছে কোস্তিয়ানতিনিভকা শহর- একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও রেল জংশন। এটি দখলে গেলে ইউক্রেনের রসদ সরবরাহ মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হবে। একইসঙ্গে কৌশলগত শহর ক্রামাতরস্ক রুশ রকেটের সরাসরি পাল্লায় চলে আসবে।

এই যুদ্ধে বড় ট্যাঙ্কের সজ্জা এখন অতীত। রুশ বাহিনী এখন ছোট ছোট ইউনিটে হামলা চালাচ্ছে, তিন থেকে পাঁচজনের দল খচ্চর ব্যবহার করে রসদ বহন করছে

আধুনিক কৌশলে পাল্টে যাচ্ছে যুদ্ধের চেহারা
ইউক্রেন যুদ্ধের ধরনও পরিবর্তিত হচ্ছে। বিশাল ট্যাঙ্ক কনভয়ের বদলে এখন ছোট ছোট হামলা ইউনিট গঠন করছে রুশ সেনারা। তারা তিন থেকে পাঁচজনের দলে ভাগ হয়ে খচ্চর ব্যবহার করে রসদ বহন করছে। এই কৌশল ইউক্রেনীয় প্রতিরোধকে বিভ্রান্ত করছে।

সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো রাশিয়ার ড্রোন সক্ষমতা। ইরানের শাহেদ ড্রোন থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে রাশিয়া তৈরি করেছে নিজস্ব গেরান-২ ড্রোন, যার দৈনিক উৎপাদন সংখ্যা ইতোমধ্যেই ১০০ ছাড়িয়ে গেছে। এ ছাড়া ‘ফাইবার-অপটিক এফপিভি ড্রোন’, যা রেডিও ছাড়াই পরিচালিত হয়, ইউক্রেনীয় সেনাদের কাছে ‘অদৃশ্য ঘাতক’ হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছে।

যুদ্ধের চাপ সামাল দিতে বড় অঙ্কের বোনাস ও বেতনের মাধ্যমে নতুন সৈন্য নিয়োগ দিচ্ছে রাশিয়া। বর্তমানে রুশ সেনাবাহিনীর আকার ৬ লাখ ২০ হাজার ছাড়িয়েছে। যদিও ২০২৪ সালেই দেশটি ৪ লাখের বেশি সৈন্য হারিয়েছে বলে পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর দাবি।

বিশ্লেষকরা বলছেন, রাশিয়া সাময়িকভাবে এগিয়ে থাকলেও যুদ্ধ দীর্ঘ হলে পাল্টা চাপে পড়বে তারাই। কারণ যুদ্ধের কারণে দেশটির অর্থনীতি ইতোমধ্যে নড়বড়ে হয়ে উঠেছে। মুদ্রাস্ফীতি বেড়েছে, সুদের হার ২১ শতাংশ, নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে এবং জাতীয় অর্থ তহবিল নিঃশেষের পথে। বিশ্বব্যাংকের মতে, এই অর্থনৈতিক মডেল টেকসই নয়।

সবমিলিয়ে, এই যুদ্ধ আর শুধু কামান-বন্দুকের নয়; এটি প্রযুক্তি, মনোবল ও অর্থনৈতিক শক্তির এক জটিল লড়াই। সামনের গ্রীষ্মেই হয়তো নির্ধারিত হবে কার ঘাড়ে চাপে যুদ্ধের আসল বোঝা। সূত্র: ইয়াহু নিউজ