ঢাকা ০১:০০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৮ জুন ২০২৫, ২৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

নির্বাচন ঘিরে নতুন রাজনৈতিক সংকটের আশঙ্কা: বিবিসি

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৩:২৩:৪৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ জুন ২০২৫
  • / ৩৪৯ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণ বিএনপিকে ‘ক্ষুব্ধ’ করেছে এবং পাশাপাশি দলটি মনে করে ‘নির্বাচনকে বিলম্বিত করার সুযোগ তৈরির জন্যই’ এপ্রিল মাসে নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার (৬ জুন) সন্ধ্যার ওই ভাষণে মি. ইউনূস ‘শব্দ চয়নে রাজনৈতিক ভব্যতার সীমা অতিক্রম’ করেছেন এবং একটি ‘বিশেষ রাজনৈতিক গোষ্ঠীর দ্বারা প্রভাবিত হয়েছেন’- এমন অভিযোগ তুলেছে দলটির জাতীয় স্থায়ী কমিটি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, নির্বাচনের যে সময় প্রধান উপদেষ্টা দিয়েছেন সেটি ‘বাস্তবতার নিরিখেই’ তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।

“গণতন্ত্রে উত্তরণ বিলম্বিত হলে সংকট ঘনীভূত হবে। প্রধান উপদেষ্টা ও তার উপদেষ্টামণ্ডলী নিরপেক্ষ চরিত্র হারিয়েছেন। এপ্রিল কোনোভাবেই নির্বাচন আয়োজনের জন্য যথাযথ সময় নয়,” বলছিলেন তিনি।

তবে জামায়াতে ইসলামীসহ আরও কিছু রাজনৈতিক দল এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচনের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে। আবার কিছু দল মনে করছে “নির্বাচনের অন্তত একটা সময় যে সরকার জানিয়েছে” এটিই তাদের কাছে বড় স্বস্তির বিষয়।

বিশ্লেষকরা কেউ কেউ বলছেন, নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে বিএনপি ও সেনাপ্রধানের বক্তব্যের বিপরীতে ‘জামায়াতের পরামর্শ’ গ্রহণ করার মধ্য দিয়ে মি. ইউনূস বোঝাতে চেয়েছেন যে তিনি চাপের মুখে কিছু মেনে নেবেন না।

“নির্বাচনের জন্য এপ্রিলকে বেছে নেয়ার মধ্যে একটা জিদের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। ওরা চাইলো কেন, তাই দেবো না- মনে হয়ে এই ইগো থেকেই সংখ্যাগরিষ্ঠ দলগুলোর মতকে উপেক্ষা করা হয়েছে,” বিবিসি বাংলাকে বলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মোহাম্মদ সাইফুল আলম চৌধুরী।

মধ্য মার্চ পর্যন্ত রোজা, এপ্রিলে উচ্চ তাপমাত্রা, বজ্রপাত, ঘূর্ণিঝড়সহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের রেকর্ডের পাশাপাশি এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার কারণে ‘একটি উৎসবমুখর ও অংশগ্রহণমূলক’ নির্বাচনে এপ্রিল মাসকে যথাযথ নয় বলেই রাজনৈতিক দল ও বিশ্লেষকরা বলছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরই শিক্ষক মোহাম্মদ মজিবুর রহমান বলছেন, নির্বাচন কেন ডিসেম্বরের মধ্যে করা যাবে না কিংবা এপ্রিলে হলে জাতির কী কী সুবিধা হবে-সেটি প্রধান উপদেষ্টা পরিষ্কার করতে ব্যর্থ হয়েছেন।

“নির্বাচন এপ্রিলের মতো প্রতিকূল সময়ে কেন করতে হবে সে বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা তিনি দেননি। জানুয়ারির মধ্যে না হলে সেটি পরবর্তী ডিসেম্বর পর্যন্ত বিলম্বিত হতে পারে এমন ভয়ও আছে অনেকের। আর সেটি হলে নির্বাচন আদৌ হয় কি-না সেই শঙ্কাও দেখা দিতে পারে”।

তার মতে “সব মিলিয়ে আবারো একটি অনিশ্চয়তা, আশঙ্কা ও অচলাবস্থার দিকেই দেশ যাচ্ছে কি-না সেই প্রশ্নও উঠবে এখন”।

আরেকজন বিশ্লেষক সাইফুল আলম চৌধুরী বলছেন, যেসব দলের সাথে প্রধান উপদেষ্টা বৈঠক করেছিলেন তাদের বেশিরভাগই দলই ডিসেম্বরে নির্বাচন চাইলো, কিন্তু প্রধান উপদেষ্টা সেই সংখ্যাগরিষ্ঠের মতকে উপেক্ষা করেই তার সিদ্ধান্ত নিলেন।

“অথচ তিনিই আবার তার ভাষণে আশা প্রকাশ করেছেন সবচেয়ে বেশি দল, প্রার্থী ও ভোটার নির্বাচন অংশ নেবে, এটা কীভাবে হয়? সরকারের শুরু থেকেই তিনি জামায়াতের অব্যাহত সমর্থন পাচ্ছেন এবং তিনি শুনলেনও জামায়াতের পরামর্শই। স্বাভাবিকভাবে কেউ চাইলে তো দুয়ে দুয়ে চার মিলাতে পারেন,” বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন তিনি।

তার মতে দীর্ঘদিন মাঠে থাকা নিয়ে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বারবার যেসব উদ্বেগের কথা আসছে তিনি তারও কোনো ব্যাখ্যা দেননি। সূত্র: বিবিসি বাংলা

নিউজটি শেয়ার করুন

নির্বাচন ঘিরে নতুন রাজনৈতিক সংকটের আশঙ্কা: বিবিসি

আপডেট সময় : ০৩:২৩:৪৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ জুন ২০২৫

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণ বিএনপিকে ‘ক্ষুব্ধ’ করেছে এবং পাশাপাশি দলটি মনে করে ‘নির্বাচনকে বিলম্বিত করার সুযোগ তৈরির জন্যই’ এপ্রিল মাসে নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার (৬ জুন) সন্ধ্যার ওই ভাষণে মি. ইউনূস ‘শব্দ চয়নে রাজনৈতিক ভব্যতার সীমা অতিক্রম’ করেছেন এবং একটি ‘বিশেষ রাজনৈতিক গোষ্ঠীর দ্বারা প্রভাবিত হয়েছেন’- এমন অভিযোগ তুলেছে দলটির জাতীয় স্থায়ী কমিটি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, নির্বাচনের যে সময় প্রধান উপদেষ্টা দিয়েছেন সেটি ‘বাস্তবতার নিরিখেই’ তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।

“গণতন্ত্রে উত্তরণ বিলম্বিত হলে সংকট ঘনীভূত হবে। প্রধান উপদেষ্টা ও তার উপদেষ্টামণ্ডলী নিরপেক্ষ চরিত্র হারিয়েছেন। এপ্রিল কোনোভাবেই নির্বাচন আয়োজনের জন্য যথাযথ সময় নয়,” বলছিলেন তিনি।

তবে জামায়াতে ইসলামীসহ আরও কিছু রাজনৈতিক দল এপ্রিলের প্রথমার্ধে নির্বাচনের ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে। আবার কিছু দল মনে করছে “নির্বাচনের অন্তত একটা সময় যে সরকার জানিয়েছে” এটিই তাদের কাছে বড় স্বস্তির বিষয়।

বিশ্লেষকরা কেউ কেউ বলছেন, নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে বিএনপি ও সেনাপ্রধানের বক্তব্যের বিপরীতে ‘জামায়াতের পরামর্শ’ গ্রহণ করার মধ্য দিয়ে মি. ইউনূস বোঝাতে চেয়েছেন যে তিনি চাপের মুখে কিছু মেনে নেবেন না।

“নির্বাচনের জন্য এপ্রিলকে বেছে নেয়ার মধ্যে একটা জিদের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। ওরা চাইলো কেন, তাই দেবো না- মনে হয়ে এই ইগো থেকেই সংখ্যাগরিষ্ঠ দলগুলোর মতকে উপেক্ষা করা হয়েছে,” বিবিসি বাংলাকে বলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মোহাম্মদ সাইফুল আলম চৌধুরী।

মধ্য মার্চ পর্যন্ত রোজা, এপ্রিলে উচ্চ তাপমাত্রা, বজ্রপাত, ঘূর্ণিঝড়সহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের রেকর্ডের পাশাপাশি এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার কারণে ‘একটি উৎসবমুখর ও অংশগ্রহণমূলক’ নির্বাচনে এপ্রিল মাসকে যথাযথ নয় বলেই রাজনৈতিক দল ও বিশ্লেষকরা বলছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরই শিক্ষক মোহাম্মদ মজিবুর রহমান বলছেন, নির্বাচন কেন ডিসেম্বরের মধ্যে করা যাবে না কিংবা এপ্রিলে হলে জাতির কী কী সুবিধা হবে-সেটি প্রধান উপদেষ্টা পরিষ্কার করতে ব্যর্থ হয়েছেন।

“নির্বাচন এপ্রিলের মতো প্রতিকূল সময়ে কেন করতে হবে সে বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা তিনি দেননি। জানুয়ারির মধ্যে না হলে সেটি পরবর্তী ডিসেম্বর পর্যন্ত বিলম্বিত হতে পারে এমন ভয়ও আছে অনেকের। আর সেটি হলে নির্বাচন আদৌ হয় কি-না সেই শঙ্কাও দেখা দিতে পারে”।

তার মতে “সব মিলিয়ে আবারো একটি অনিশ্চয়তা, আশঙ্কা ও অচলাবস্থার দিকেই দেশ যাচ্ছে কি-না সেই প্রশ্নও উঠবে এখন”।

আরেকজন বিশ্লেষক সাইফুল আলম চৌধুরী বলছেন, যেসব দলের সাথে প্রধান উপদেষ্টা বৈঠক করেছিলেন তাদের বেশিরভাগই দলই ডিসেম্বরে নির্বাচন চাইলো, কিন্তু প্রধান উপদেষ্টা সেই সংখ্যাগরিষ্ঠের মতকে উপেক্ষা করেই তার সিদ্ধান্ত নিলেন।

“অথচ তিনিই আবার তার ভাষণে আশা প্রকাশ করেছেন সবচেয়ে বেশি দল, প্রার্থী ও ভোটার নির্বাচন অংশ নেবে, এটা কীভাবে হয়? সরকারের শুরু থেকেই তিনি জামায়াতের অব্যাহত সমর্থন পাচ্ছেন এবং তিনি শুনলেনও জামায়াতের পরামর্শই। স্বাভাবিকভাবে কেউ চাইলে তো দুয়ে দুয়ে চার মিলাতে পারেন,” বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন তিনি।

তার মতে দীর্ঘদিন মাঠে থাকা নিয়ে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বারবার যেসব উদ্বেগের কথা আসছে তিনি তারও কোনো ব্যাখ্যা দেননি। সূত্র: বিবিসি বাংলা