ঢাকা ০৯:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৭ জুন ২০২৫, ২৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো খেলার দ্বারপ্রান্তে সাত দেশ

স্পোর্টস ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৭:৫৭:২৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৭ জুন ২০২৫
  • / ৩৫৩ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

২০২৬ ফুটবল বিশ্বকাপ প্রথমবারের মতো ৪৮ দলের বিশাল আয়োজনে হতে চলেছে। এই সম্প্রসারিত ফরম্যাট বহু নতুন দেশের জন্য এনে দিয়েছে ‘স্বপ্নের মঞ্চে’ নাম লেখানোর বাস্তব সম্ভাবনা। ইতোমধ্যে উজবেকিস্তান ও জর্ডান ইতিহাস গড়ে নিশ্চিত করেছে তাদের প্রথম বিশ্বকাপ। এবার আলোচনায় এসেছে আরও সাতটি দেশ যারা প্রথমবারের মতো ফুটবলের সর্বোচ্চ আসরে অংশ নেয়ার দ্বারপ্রান্তে।

চলুন, এক নজরে দেখে নেয়া যাক ইতিহাস গড়ার সম্ভাবনায় থাকা সাত আন্ডারডগ দলকে-

কেপ ভার্দে (আফ্রিকা)
ছোট দ্বীপদেশ হলেও কেপ ভার্দে আফ্রিকার বাছাইপর্বে দেখাচ্ছে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স। ‘গ্রুপ ডি’-তে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে রয়েছে শীর্ষে। তাদের সবচেয়ে কাছাকাছি প্রতিদ্বন্দ্বী ক্যামেরুন, যাদের পয়েন্ট ১২। ঘরের মাঠে ক্যামেরুনের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচসহ বাকি চার ম্যাচ তাদের বিশ্বকাপ টিকিট নিশ্চিত করার সুবর্ণ সুযোগ এনে দিয়েছে। এমনকি গ্রুপে দ্বিতীয় হলেও প্লে-অফের সুযোগ থাকছে।

কিউরাসাও (কনকাকাফ)
ক্যারিবীয় অঞ্চলের দল কিউরাসাও ইতিমধ্যে দুই ধাপ অতিক্রম করেছে। এখন তাদের লক্ষ্য তৃতীয় এবং চূড়ান্ত রাউন্ড, যার ড্র অনুষ্ঠিত হবে ১২ জুন। সেপ্টেম্বরে শুরু হতে যাওয়া গ্রুপ ম্যাচগুলোতেই নির্ধারিত হবে তাদের বিশ্বকাপ ভাগ্য। সেরা ছয়ের মধ্যে জায়গা করে নিলেই কিউরাসাওয়ের ইতিহাস রচনা নিশ্চিত।

গুয়াতেমালা (কনকাকাফ)
গুয়াতেমালা বরাবরই মধ্য আমেরিকার প্রতিভাবান ফুটবল দল হলেও বিশ্বকাপের মূল আসর এখনও অধরা। তবে সাম্প্রতিক সময়ে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা ‘লস চাপিনেস’ এবার রয়েছে ফাইনাল রাউন্ডে। গ্রুপে শীর্ষ দুইয়ে থাকলেই প্রথমবারের মতো তাদের বিশ্বকাপে অভিষেক ঘটবে।

সুরিনাম (কনকাকাফ)
সাবেক ডাচ কলোনি সুরিনামও এগিয়ে এসেছে বিশ্বকাপের দিকে। কোয়ালিফাইং পর্বে দুটি ধাপ পেরিয়ে এখন রয়েছে গ্রুপ ড্রয়ের অপেক্ষায়। সাম্প্রতিক সময়ে ফুটবলে তাদের উন্নতি তাদের আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে।

নিকারাগুয়া (কনকাকাফ)
কনকাকাফ অঞ্চলের অন্যতম আন্ডারডগ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে নিকারাগুয়া। শক্তিতে পিছিয়ে থাকলেও, কোয়ালিফাইংয়ের প্রথম দুই রাউন্ডে নিজেদের প্রত্যাশার চেয়েও ভালো খেলেছে দলটি। ফলে, ইতিহাস গড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

ভেনেজুয়েলা (দক্ষিণ আমেরিকা)
দক্ষিণ আমেরিকার একমাত্র দল যারা এখনো বিশ্বকাপে খেলেনি। তবে এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। ১৫ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার সপ্তম স্থানে থাকা ‘লা ভিনোতিন্তো’ ইতোমধ্যেই প্লে-অফের জায়গা ধরে রেখেছে। সরাসরি জায়গা পেতে হলে তাদের টপকাতে হবে কলম্বিয়াকে (২০ পয়েন্ট)। সামনে রয়েছে চারটি ম্যাচ, যার মধ্যে বলিভিয়ার (১৪ পয়েন্ট) বিপক্ষে শুক্রবারের লড়াই হতে পারে টার্নিং পয়েন্ট।

নিউ ক্যালেডোনিয়া (ওশেনিয়া)
অকিয়ানিয়ার কম পরিচিত দল নিউ ক্যালেডোনিয়া এবারের বাছাইপর্বে রীতিমতো চমক দেখিয়েছে। সেমিফাইনালে তাহিতিকে ৩-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালে উঠলেও, নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরে সরাসরি বিশ্বকাপ টিকিট হারিয়েছে। তবে ফাইনালে ওঠার সুবাদে তারা পেয়েছে আন্তঃমহাদেশীয় প্লে-অফের সুযোগ যেখানে প্রতিপক্ষ হতে পারে ভেনেজুয়েলা বা বলিভিয়া।

চার মহাদেশের এই সাত দল এখন স্বপ্নের দৌড়ে। তাদের কেউ কেউ ইতিহাসের পাতায় নাম লেখাবে, কেউ হয়তো অপেক্ষায় থাকবে আরও চার বছর। নতুন ফরম্যাটের সৌজন্যে ফুটবল বিশ্বকাপ এখন আরও বৈচিত্র্যময়, আরও প্রতিযোগিতাপূর্ণ আর সেটিই হয়তো বদলে দিতে চলেছে বহু দেশের ফুটবল ইতিহাস।

নিউজটি শেয়ার করুন

বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো খেলার দ্বারপ্রান্তে সাত দেশ

আপডেট সময় : ০৭:৫৭:২৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৭ জুন ২০২৫

২০২৬ ফুটবল বিশ্বকাপ প্রথমবারের মতো ৪৮ দলের বিশাল আয়োজনে হতে চলেছে। এই সম্প্রসারিত ফরম্যাট বহু নতুন দেশের জন্য এনে দিয়েছে ‘স্বপ্নের মঞ্চে’ নাম লেখানোর বাস্তব সম্ভাবনা। ইতোমধ্যে উজবেকিস্তান ও জর্ডান ইতিহাস গড়ে নিশ্চিত করেছে তাদের প্রথম বিশ্বকাপ। এবার আলোচনায় এসেছে আরও সাতটি দেশ যারা প্রথমবারের মতো ফুটবলের সর্বোচ্চ আসরে অংশ নেয়ার দ্বারপ্রান্তে।

চলুন, এক নজরে দেখে নেয়া যাক ইতিহাস গড়ার সম্ভাবনায় থাকা সাত আন্ডারডগ দলকে-

কেপ ভার্দে (আফ্রিকা)
ছোট দ্বীপদেশ হলেও কেপ ভার্দে আফ্রিকার বাছাইপর্বে দেখাচ্ছে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স। ‘গ্রুপ ডি’-তে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে রয়েছে শীর্ষে। তাদের সবচেয়ে কাছাকাছি প্রতিদ্বন্দ্বী ক্যামেরুন, যাদের পয়েন্ট ১২। ঘরের মাঠে ক্যামেরুনের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচসহ বাকি চার ম্যাচ তাদের বিশ্বকাপ টিকিট নিশ্চিত করার সুবর্ণ সুযোগ এনে দিয়েছে। এমনকি গ্রুপে দ্বিতীয় হলেও প্লে-অফের সুযোগ থাকছে।

কিউরাসাও (কনকাকাফ)
ক্যারিবীয় অঞ্চলের দল কিউরাসাও ইতিমধ্যে দুই ধাপ অতিক্রম করেছে। এখন তাদের লক্ষ্য তৃতীয় এবং চূড়ান্ত রাউন্ড, যার ড্র অনুষ্ঠিত হবে ১২ জুন। সেপ্টেম্বরে শুরু হতে যাওয়া গ্রুপ ম্যাচগুলোতেই নির্ধারিত হবে তাদের বিশ্বকাপ ভাগ্য। সেরা ছয়ের মধ্যে জায়গা করে নিলেই কিউরাসাওয়ের ইতিহাস রচনা নিশ্চিত।

গুয়াতেমালা (কনকাকাফ)
গুয়াতেমালা বরাবরই মধ্য আমেরিকার প্রতিভাবান ফুটবল দল হলেও বিশ্বকাপের মূল আসর এখনও অধরা। তবে সাম্প্রতিক সময়ে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা ‘লস চাপিনেস’ এবার রয়েছে ফাইনাল রাউন্ডে। গ্রুপে শীর্ষ দুইয়ে থাকলেই প্রথমবারের মতো তাদের বিশ্বকাপে অভিষেক ঘটবে।

সুরিনাম (কনকাকাফ)
সাবেক ডাচ কলোনি সুরিনামও এগিয়ে এসেছে বিশ্বকাপের দিকে। কোয়ালিফাইং পর্বে দুটি ধাপ পেরিয়ে এখন রয়েছে গ্রুপ ড্রয়ের অপেক্ষায়। সাম্প্রতিক সময়ে ফুটবলে তাদের উন্নতি তাদের আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে।

নিকারাগুয়া (কনকাকাফ)
কনকাকাফ অঞ্চলের অন্যতম আন্ডারডগ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে নিকারাগুয়া। শক্তিতে পিছিয়ে থাকলেও, কোয়ালিফাইংয়ের প্রথম দুই রাউন্ডে নিজেদের প্রত্যাশার চেয়েও ভালো খেলেছে দলটি। ফলে, ইতিহাস গড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।

ভেনেজুয়েলা (দক্ষিণ আমেরিকা)
দক্ষিণ আমেরিকার একমাত্র দল যারা এখনো বিশ্বকাপে খেলেনি। তবে এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। ১৫ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার সপ্তম স্থানে থাকা ‘লা ভিনোতিন্তো’ ইতোমধ্যেই প্লে-অফের জায়গা ধরে রেখেছে। সরাসরি জায়গা পেতে হলে তাদের টপকাতে হবে কলম্বিয়াকে (২০ পয়েন্ট)। সামনে রয়েছে চারটি ম্যাচ, যার মধ্যে বলিভিয়ার (১৪ পয়েন্ট) বিপক্ষে শুক্রবারের লড়াই হতে পারে টার্নিং পয়েন্ট।

নিউ ক্যালেডোনিয়া (ওশেনিয়া)
অকিয়ানিয়ার কম পরিচিত দল নিউ ক্যালেডোনিয়া এবারের বাছাইপর্বে রীতিমতো চমক দেখিয়েছে। সেমিফাইনালে তাহিতিকে ৩-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালে উঠলেও, নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরে সরাসরি বিশ্বকাপ টিকিট হারিয়েছে। তবে ফাইনালে ওঠার সুবাদে তারা পেয়েছে আন্তঃমহাদেশীয় প্লে-অফের সুযোগ যেখানে প্রতিপক্ষ হতে পারে ভেনেজুয়েলা বা বলিভিয়া।

চার মহাদেশের এই সাত দল এখন স্বপ্নের দৌড়ে। তাদের কেউ কেউ ইতিহাসের পাতায় নাম লেখাবে, কেউ হয়তো অপেক্ষায় থাকবে আরও চার বছর। নতুন ফরম্যাটের সৌজন্যে ফুটবল বিশ্বকাপ এখন আরও বৈচিত্র্যময়, আরও প্রতিযোগিতাপূর্ণ আর সেটিই হয়তো বদলে দিতে চলেছে বহু দেশের ফুটবল ইতিহাস।