চামড়া সংরক্ষণে সরকারের বিনামূল্যে দেয়া লবণ বিক্রি!

- আপডেট সময় : ১২:০৪:৫১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ জুন ২০২৫
- / ৩৭০ বার পড়া হয়েছে

কোরবানির চামড়া যেন নষ্ট না হয় সেজন্য নাটোরে দুই শতাধিক মাদ্রাসায় সরকারিভাবে বিনামূল্যে বিতরণ করা হয় লবণ। এরপরও সময়মতো আড়তে চামড়া না আনায় নষ্ট হয়েছে চামড়া। অনেক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেই বিনামূল্যের লবণ চামড়া সংরক্ষণে ব্যবহার না করে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
নাটোর শহরের কান্দিভিটা এলাকার ‘আল জামিয়াতুন নূরীয়া’ মাদ্রাসা। সাড়ে ৪ টন লবণ দিয়ে সাড়ে ৪০০ চামড়া সংরক্ষণ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। ভালো দামে চামড়া বিক্রির আশা তাদের।
নাটোরের আল জামিয়াতুন নূরীয়া মাদ্রাসার শিক্ষা সচিব মুফতি আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘দুই-তিন দিনের মধ্যে চামড়ার পানি কেটে যাবে, তখন আমরা চামড়াটা সংরক্ষণ করতে পারবো এবং ন্যায্য মূল্যে বিক্রি করতে পারবো বলে আশা করছি।’
তবে এমন উদ্যোগ মুষ্টিমেয়। অভিযোগ রয়েছে, বেশিরভাগ মাদ্রাসা চামড়া সংরক্ষণ না করে বিক্রি করছে বরাদ্দ করা লবণ। ফলে ঈদের দ্বিতীয় দিন নাটোরের চকবৈদ্যনাথ আড়তে জমা হওয়া পাঁচ শতাধিক কাঁচা চামড়ার বেশিরভাগই নষ্ট হয়ে যায়।
এদিকে, লবণ মাদ্রাসায় না দিয়ে ব্যবসায়ীদের দেয়ার দাবি করেন অনেকে। সে সাথে অভিযুক্ত মাদ্রাসাগুলোর বিরুদ্ধে শাস্তির দাবিও জানান তারা।
নাটোর জেলা চামড়া ব্যবসায়ী সমিতি গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হালিম বলেন, ‘লবণ যারা সরকারের কাছ থেকে বিনামূল্যে নিয়েছেন, তারা সেগুলো ব্যবহার করতে পারেননি। তারা চামড়াটা আমাদের কাছে অসময়ে নিয়ে আসছেন। তাই চামড়া নষ্ট হওয়ার জন্য তারাই দায়ী। সরকারের প্রতি আমার অনুরোধ থাকবে যে, তাদের বিরুদ্ধে যেন ব্যবস্থা নেয়া হয়।’
মৌসুমি ও ফড়িয়া ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি ৯০ শতাংশ চামড়া সংগ্রহ করে মাদ্রাসাগুলো। সে কারণে কাঁচা চামড়া সংরক্ষণে জেলার দুই শতাধিক মাদ্রাসা ও লিল্লাহ বোর্ডিং এ বিনামূল্যে লবণ বিতরণ করেছে জেলা প্রশাসন। তবে যারা লবণ বিক্রি করেছে, তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানায় স্থানীয় প্রশাসন।
নাটোর সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার আখতার জাহান সাথী বলেন, ‘আমরা যখন লবণ বিতরণ করি তখন কিন্তু বারবার করে বলেছি যে, আপনারা চামড়ায় লবণ সঠিকভাবে দিলে সে চামড়ার ন্যায্যমূল্য পাবেন। তারপরেও হয়তো মাদ্রাসাগুলো চিন্তা করেছে যে তারা তাৎক্ষণিকভাবে সেগুলো বিক্রি করে দিলে তাদের কাছ থেকে ঝামেলাটা চলে যায়। এরপরও আমরা যেহেতু তাদের থেকে প্রত্যয়ন নিয়েছি, আমরা সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’
নাটোরে গরুর চামড়ার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ থেকে ৫ লাখ পিস। কিন্তু এখন পর্যন্ত এসেছে মাত্র ২৫ থেকে ৩০ হাজার। খাসি ও বকরির চামড়াও লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় অনেক কম। আগামী শুক্রবার (১৩ জুন) থেকে লবণযুক্ত চামড়া কিনবেন ব্যবসায়ীরা।