বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, গোটা জাতি আজ লন্ডনের দিকে তাকিয়ে আছে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে যে বৈঠক হবে সেটি হবে ঐতিহাসিক বৈঠক। এ বৈঠকের মাধ্যমে দেশের রাজনীতিতে সুবাতাস বইবে বলে বিশ্বাস করি।
আজ (বুধবার, ১১ জুন) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘এই বৈঠকটি হতে পারে একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। রাজনীতিতে সুবাতাস বইবে এমনটাই আমাদের প্রত্যাশা। সবাই তাকিয়ে আছে লন্ডন বৈঠকের দিকেই।’
তিনি বলেন, এরই মধ্যে ডিসেম্বরে নির্বাচনের যৌক্তিকতা তুলে ধরেছে বিএনপি। যৌক্তিক সময়েই নির্বাচন হবে বলে জাতি প্রত্যাশা করে। আলোচনার মধ্য দিয়ে নির্বাচনসহ সব সমস্যা সমাধান সম্ভব।
সংবাদ সম্মেলনে রিজভী অভিযোগ করেন, ঈদের সময় সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ছিল উদ্বেগজনক। তিনি বলেন, ‘মানুষ দেখতে চায় কার্যকর পুলিশি পদক্ষেপ। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা ছিল অত্যন্ত সীমিত।’
এসময় অর্থনীতি ভেঙে পড়েছে জানিয়ে বিদেশি বিনিয়োগ না আসার জন্য তিনি অনির্বাচিত সরকারকেই দায়ী করেন। ডিসেম্বরে নির্বাচনের বিষয় অনড় থাকবেন কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আলোচনার পর বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে।’
প্রতিবেশী রাষ্ট্রের কঠোর সমালোচনা করে রিজভী বলেন, প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশের প্রতি ভয়ঙ্কর বিদ্বেষপরায়ণ হয়ে উঠছে। বিশেষ করে শেখ হাসিনার পতনের পর তারা হিংস্র হয়ে উঠেছে। বিদেশি তকমা দিয়ে প্রতিদিন পুশ-ইন হচ্ছে। পায়ে পাড়া দিয়ে ঝগড়া লাগানোর প্রচেষ্টা করছে। সীমান্ত এলাকায় পুশ-ইনের হিড়িক লেগেছে। বাংলাদেশ কি বর্জ্য ফেলার স্থান, প্রশ্ন রাখেন তিনি?
দেশের লোককে বিদেশি বানিয়ে ভারত বাংলাদেশে পুশ-ইন করতে চাইলে প্রতিবাদের পাশাপাশি প্রতিরোধ করবে বাংলাদেশ। ভারতকে মনে রাখতে হবে অত্যাচার-নীপিড়ন করে শেখ হাসিনাও টিকে থাকতে পারেনি, বলেন রিজভী।
সম্প্রতি করোনার প্রকোপ বৃদ্ধি প্রসঙ্গে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ভারতে এরই মধ্যে ৭ হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। বাংলাদেশেও আক্রান্তের খবর পাওয়া গেছে। এরইমধ্যে একজন মারাও গেছে। এ বিষয়ে সরকারকে দ্রুত করণীয় নির্ধারণ করে প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানাই। সুরক্ষার বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য নয় বলে মন্তব্য করেন রিজভী।
পাশাপাশি ডেঙ্গুও মারাত্মক রূপ নিয়েছে, জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়ছে। এজন্য সরকারের সঙ্গে জনগণকে আরো সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানান রিজভী।
ঈদযাত্রা ঘিরে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রায় ৫৭ জন মৃত্যুর সংবাদে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, বেপরোয়া গাড়ি চালানোর কারণে এই দুর্ঘটনা বেড়েছে। এছাড়াও ঈদে সমাজবিরোধীদের দৌরাত্ম্যও ছিল। ফ্যাসিবাদমুক্ত নির্ভয়ে ঈদ উদযাপন আনন্দের ছিল। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতির অবনতি দেখা গেছে। প্রশাসন আরও তৎপর হলে তা কমানো সম্ভব হতো বলেও উল্লেখ করেন তিনি।