২০৩০ সালের মধ্যে ঈশ্বরদী বিমানবন্দর চালুর পরিকল্পনা

- আপডেট সময় : ০৪:২২:৪৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ জুন ২০২৫
- / ৩৫৩ বার পড়া হয়েছে

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, ইপিজেডসহ অতি গুরুত্বপূর্ণ নানা প্রকল্প থাকায় ২০৩০ সালের মধ্যে ঈশ্বরদী বিমানবন্দর চালু করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। অভ্যন্তরীণ যাত্রী পরিবহনের পাশাপাশি কার্গো বিমান চলাচলে গতি আসবে দেশের অর্থনীতিতেও। তবে দ্রুত রানওয়ে সম্প্রসারণ, টার্মিনাল ভবনসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণের তাগিদ দিচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় পাবনার ঈশ্বরদীতে বিমানবন্দর নির্মাণ করা হয়। ১৯৮৯ সালে এখান থেকে ঢাকায় নিয়মিত ফ্লাইট পরিচালনা করতো বিমান বাংলাদেশ। তবে নানা কারণে দফায় দফায় চালু ও বন্ধ হয় এই বিমানবন্দর। সবশেষ ২০১৩ সালে ঈশ্বরদী থেকে বেসরকারি ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স তাদের ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করে। বছর খানেক পর যা আবারও বন্ধ হয়ে যায়।
বিমানবন্দরের জন্য মোট ৪৩৬ দশমিক ৬৫ একর জমি অধিগ্রহণ হলেও বর্তমানে রয়েছে ১৪৫ দশমিক ৯১ একর জায়গা। ৪ হাজার ৭০০ ফুট রানওয়ে, টার্মিনাল বিল্ডিং, ভিআইপি লাউঞ্জ, যাত্রী কক্ষ, সংযোগ সরঞ্জাম, অফিসারদের আবাসিক এলাকা থাকলেও এর বেশিরই ব্যবহার অনুপযোগী।
ঈশ্বরদী বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক দিলারা পারভিন বলেন, ‘বর্তমানে রানওয়ের দৈর্ঘ্য হচ্ছে ৪ হাজার ৭০০ ফিট। সেখান ৬ হাজার ফিট রানওয়ে দরকার। আমাদের টার্মিনাল বিল্ডিং, ফায়ারের গাড়ি দরকার। এছাড়া এখানে জনবল দরকার।’
বিমানবন্দর থেকে মাত্র ১০কিলোমিটার দূরে ঈশ্বরদী রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল। যেখানে দেশি-বিদেশি অন্তত ২৪টি শিল্প প্রতিষ্ঠান বছরে ২ হাজার মিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করে। এসব প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন ৮৫ বিদেশিসহ প্রায় ২০ হাজার শ্রমিক।
বিমানবন্দর থেকে মাত্র ১৩ কিলোমিটার দূরে গড়ে উঠেছে দেশের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎ উন্নয়ন প্রকল্প রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। যা ঘিরে এলাকাটিতে ১০ হাজারের বেশি রাশিয়ানের বসবাস।
এছাড়া জেলায় ৫টি সরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান, পদ্মার বিশাল চর জুড়ে কৃষি পণ্য উৎপাদনসহ রয়েছে ছোট-বড় নানা শিল্প প্রতিষ্ঠান। এরপরও সড়কপথে যোগাযোগ ব্যবস্থা সময় সাপেক্ষ ও ঝামেলাপূর্ণ হওয়ায় অনেকেই এ অঞ্চলে বিনিয়োগে আগ্রহ পান না। এমন অবস্থায় আবারও ঈশ্বরদী বিমানবন্দর চালুর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
ঈশ্বরদী ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক এবিএম শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ঈশ্বরদী বিমানবন্দর চালু হয় তাহলে খুব দ্রুতই বিনিয়োগকারিরা আসবে। এর ফলে বিমানবন্দরে আসলে সেখান থেকে বিদেশি বায়াররা, বিনিয়োগকারিরা সহজেই মাত্র ১০ মিনিটে ইপিজেডে চলে আসবে। ফলে তাদের উৎপাদিত পণ্য দ্রুত বিদেশে রপ্তানি করতে পারবে।’
বিমানবন্দরটি চালু হলে পাবনা, নাটোর ও কুষ্টিয়া অঞ্চলে সহজ যোগাযোগের পাশাপাশি বাড়বে অর্থনৈতিক তৎপরতা।
প্রায় একযুগ বন্ধের পর আবারও ঈশ্বরদী বিমানবন্দরটি চালুর উদ্যোগ নিয়েছে সিভিল এভিয়েশন অব অথরিটি। বগুড়ার পর দ্বিতীয় বিমানবন্দর হিসেবে ২০৩০ সালের মধ্যে অভ্যন্তরীণ যাত্রী পরিবহনে সক্ষম হবে এটি।
তবে রান ওয়ের সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রয়োজনীয় অবকাঠামো বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। তবে বিমানবন্দরটি চালু দেশের ঢাকার সঙ্গে বাড়বে উত্তর এবং দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা। সে সাথে ব্যবসা-বাণিজ্যি ও পর্য়টনখাতে আসবে নতুন গতি।