গুম করে নির্যাতন–হত্যা: সবচেয়ে বেশি অভিযোগ র্যাবের বিরুদ্ধে

- আপডেট সময় : ০১:০৭:৪৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ জুন ২০২৫
- / ৩৬০ বার পড়া হয়েছে

‘যখন শক দেওয়া হলো, পুরো শরীরটা ফুটবলের মতো গোল হয়ে গেল। এরকম ৮ থেকে ১০ বার আমাকে শক দেওয়া হয়েছে’—এই কথাগুলো আয়নাঘরে নির্যাতনের শিকার ভুক্তভোগীর।
শুধু একজনই না। এমন অনেকের নির্যাতনের চিত্র উঠে এসেছে গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশনের দ্বিতীয় প্রতিবেদনে। প্রায় দেড় হাজার অভিযোগ যাচাই-বাছাই শেষে দেওয়া প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, গুম করে নির্যাতন ও হত্যার ৬৭ শতাংশের বেশি ঘটনার জন্য দায়ী পুলিশ, র্যাব, ডিবি ও সিটিটিসি। সবচেয়ে বেশি অভিযোগ র্যাবের বিরুদ্ধে। এ পর্যন্ত যাচাই করা ঘটনাগুলো ঘটেছে ৩৬টি জেলায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, নির্যাতনের পর আটক ব্যক্তিদের অনেককেই বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা করা হয়। যাদের হত্যা করা হতো না তাদের আটক রেখে নির্যাতন করত বাহিনীগুলো।
কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকা সেনানিবাসের ভেতরে যৌথ জিজ্ঞাসাবাদ কেন্দ্র ছিল ডিজিএফআইয়ের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো–সিটিআইবি। এটিই মূলত আয়নাঘর নামে পরিচিত। এটি সবচেয়ে কুখ্যাত আটক কেন্দ্রগুলোর অন্যতম, যেখানে ব্যাপক নির্যাতন এবং দীর্ঘদিন আটক রাখা হতো। অপহরণ করার জন্য মাঝেমধ্যেই র্যাবের গোয়েন্দা বিভাগ সহায়তা করতো। এই র্যাবের বিরুদ্ধেই সবচেয়ে বেশি গুমের অভিযোগ।
গুমের সঙ্গে জড়িতদের বিচার নিশ্চিতে বিশেষ আদালত গঠনের আহবান মানবাধিকার কর্মীদের। মানবাধিকার কর্মী অ্যাডভোকেট এলিনা খান বলেন, ‘দেশে বিচারব্যবস্থার যে অবকাঠামো আছে, সেখানে খুবই দীর্ঘসূত্রিতা। গুরুত্বপূর্ণ লাখ লাখ মামলা পড়ে আছে। এই গুম-খুনের মামলার বিচার করতে হলে, একটা কোর্ট নির্দিষ্ট করে দিতে হবে, যারা শুধু এই মামলাগুলোর কাজই করবে।’
২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত গুমের ঘটনা তদন্তে ২৭ আগস্ট কমিশন গঠন করে সরকার। ৪ জুন প্রধান উপদেষ্টার কাছে দ্বিতীয় প্রতিবেদন জমা দেয় কমিশন।