বাবাকে ভালোবাসা ও সম্মান জানানোর দিন আজ

- আপডেট সময় : ০৪:০৪:২২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫
- / ৩৪৭ বার পড়া হয়েছে

আমাদের জীবনের প্রথম দিকের অনেক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে একজন মানুষ নীরবে পাশে থাকেন, তিনি বাবা। প্রথম হাঁটতে শেখা, স্কুলে প্রথম দিন, জীবনের প্রথম ভুল, সব কিছুর পেছনে থাকেন একজন শক্ত ভরসার দেয়াল। অনেক সময় বাবারা বলেন না কিছুই, চুপচাপ করেই যান। কিন্তু সেই চুপচাপ ভালোবাসাই সবচেয়ে গভীর।
বাবা শব্দটা যত সহজ, এর গভীরতা ঠিক ততটাই বেশি। অনেক সময় মুখে কিছু বলেন না, কিন্তু তাঁর কাজ আর উপস্থিতি জীবনের প্রতিটি ধাপে পড়ে থাকে ছাপ রেখে। সাইকেল চালানো শেখানো হোক কিংবা জীবনের কঠিন সময়ে নীরবে পাশে থাকা, বাবারা থাকেন সবসময়। কিন্তু একটু আড়ালে, একটু নিরবে। তাদের ভালোবাসা ও অবদানের কথা মনে করিয়ে দিতে প্রতিবছর জুন মাসের তৃতীয় রোববার বিশ্বজুড়ে পালিত হয় বাবা দিবস।
বাবা দিবসের সূচনা হয়েছিল আমেরিকার ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ায়, ১৯০৮ সালে। সেবার একটি বড় কয়লাখনির দুর্ঘটনায় মারা যান ৩৬১ জন পুরুষ। যার প্রায় সবাই ছিলেন বাবা। এরপর ১৯১০ সালে ওয়াশিংটনের সোনোরা স্মার্ট ডড তার বাবার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ‘বাব দিবস’ পালনের প্রস্তাব দেন। তার বাবা, একজন গৃহযুদ্ধের সৈনিক, স্ত্রী মারা যাওয়ার পর একাই ছয় সন্তানকে বড় করেছেন। সোনোরা প্রথমে ৫ জুন (বাবার জন্মদিন) দিনটি নির্ধারণ করতে চাইলেও কিছু সমস্যার কারণে ১৯ জুন দিনটি বেছে নেওয়া হয়।
এই ছোট উদ্যোগ থেকেই ধীরে ধীরে দিনটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। আর ১৯৭২ সালে প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন বাবা দিবসকে যুক্তরাষ্ট্রে জাতীয় দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেন।
আজকের দিন শুধু বাবাদেরই নয়, যারা বাবার মতো ভূমিকা পালন করেন তাদের জন্যও এই দিনটি। যেমন, দাদা, চাচা, মামা, বড় ভাই, শিক্ষক, এমনকি একাই সন্তান লালন-পালন করা মা, সবাই বাবা দিবসের অন্তর্ভুক্ত। কারণ, বাবা মানে শুধুই রক্তের সম্পর্ক নয়, দায়িত্ব আর ভালোবাসার বন্ধনও।
বাবা দিবস মানেই দামি উপহার বা রেস্তোরাঁয় খাওয়া নয়। অনেক সময় একটি চিঠি, বাবার প্রিয় খাবার রান্না বা একসঙ্গে পুরোনো কোনো সিনেমা দেখা। এই ছোট ছোট মুহূর্তগুলোই হয়ে ওঠে সবচেয়ে বড় উপহার।
এই দিনে আপনি যা করতে পারেন-
বাবাকে ফোন করে বলুন ‘তোমাকে ভালোবাসি’।
বাবার পছন্দের কোনো বই বা গান উপহার দিন।
ছোট্ট একটি কার্ড বা চিঠি লিখে দিন।
তার সঙ্গে বসে গল্প করুন, স্মৃতিচারণ করুন।
আজকাল বাবা দিবস ঘিরে বাজারে নানা অফার, ছাড় আর উপহার থাকে। তবে এই দিনটির মূল মানে ব্যক্তিগত অনুভব। যারা বাবাকে হারিয়েছেন, তাদের জন্য এই দিনটি স্মৃতির। যারা বাবার সঙ্গে দূরে, তাদের জন্য এটি সংযোগের সুযোগ। আবার যারা বাবার সঙ্গে সম্পর্ক জটিল, তাদের জন্য এটি ক্ষমা বা বোঝাপড়ার দিন হতে পারে।
সব সময় সামনে না থাকলেও, বাবারা সব সময় পাশে থাকেন। এই এক দিনের ‘ধন্যবাদ’ হয়তো বছর ঘুরে আসে, কিন্তু তা ভুলে যাওয়া ভালোবাসাকে আবার সামনে নিয়ে আসে। বাবা দিবস তাই শুধু একটি দিন নয়। এটি মন থেকে বলার একটা সুযোগ, ‘তুমি ছিলে, বলেই আমি পারি।’