মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ইংরেজি ও বাংলা দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশও দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।
আজ (সোমবার, ১৬ জুন) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চে শুনানি শেষে এই আদেশ দেওয়া হয়। মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে ২৪ জুন, যেদিন এ-সংক্রান্ত চূড়ান্ত আদেশ দেওয়া হতে পারে।
এরই মধ্যে শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল করেছে প্রসিকিউশন। আজ ছিল শুনানির দ্বিতীয় দিন। শুনানির শুরুতেই প্রধান কৌঁসুলি মো. তাজুল ইসলাম ট্রাইব্যুনালকে জানান, মামলার তিন আসামির মধ্যে সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন আদালতে উপস্থিত হলেও শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানকে এখনো গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তদন্ত প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর থেকে ওই দুই আসামি আত্মগোপনে চলে যান এবং তারা বর্তমানে প্রতিবেশী কোনো দেশে অবস্থান করছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে ট্রাইব্যুনাল বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেন এবং ২৪ জুন পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়ে বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তারা হাজির না হলে, পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়া অনুযায়ী তাদের অনুপস্থিতিতেই বিচার শুরু হতে পারে।
প্রসিকিউশনের অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত দেশজুড়ে চলমান আন্দোলন দমনের সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের হাতে অন্তত ১৪০০ ছাত্র-জনতা নিহত হন। এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে শেখ হাসিনার ‘নির্দেশ, উসকানি ও প্ররোচনার’ প্রমাণ রয়েছে বলে দাবি করা হয়।
এ ছাড়া, আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার নির্দেশেই প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে বলেও অভিযোগপত্রে উল্লেখ রয়েছে।