চীন-রাশিয়া ইস্যুতে উত্তপ্ত জি-সেভেন বৈঠক

- আপডেট সময় : ০১:৪৮:৫৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫
- / ৩৫৪ বার পড়া হয়েছে

ইরানে ইসরাইলের আগ্রাসন আর গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে একদিকে চলছে বিক্ষোভ। অন্যদিকে তথাকথিত বিশ্ব রক্ষার নামে বৈঠকে বসেছেন শিল্পোন্নত দেশগুলোর নেতারা। জি সেভেন বর্ধিত করে আগামীতে রাশিয়া এবং চীনকে যুক্ত করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র আর জাপান বাণিজ্য চুক্তিতে আসতে ব্যর্থ হয়েছে। এদিকে মধ্যপ্রাচ্য সংকট সমাধানে জি সেভেন সম্মেলনস্থল আগেই ত্যাগ করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
শিল্পোন্নত দেশগুলোর জোট জি সেভেন নেতাদের বৈঠক যখন চলছে, ঠিক সেসময় বিক্ষোভে উত্তাল কানাডার আলবার্টার ক্যালগেরি শহর। পাশের ক্যানানাসকিস শহরে সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানরা মিলিত হয়েছেন। এই আয়োজনকেও অর্থনীতির জন্য ব্যয় বহুল বলছেন অনেকে। বিশ্বে যুদ্ধ বন্ধের নাম নেই, নেই খাদ্য ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা- সেখানে এমন ঘটা করে জি সেভেন সম্মেলন মানায় না বলে দাবি তাদের।
বিক্ষোভকারীদের মধ্যে একজন বলেন, ‘আমাদের ফিলিস্তিনের পক্ষে দাঁড়াতে হবে। গাজাবাসীর পক্ষে কথা বলতে হবে, যা ইসরাইল দখল করে রেখেছে। এখন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ইসরাইল ইরানের ওপর আক্রমণ চালাচ্ছে।’
অন্য একজন বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই সাহসী হতে হবে যাতে আমরা উন্নত পৃথিবী তৈরি করতে পারি। ভয় পেলে হবে না।’
অন্যদিকে বৈঠকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার স্বভাবসুলভ আচরণেই চলমান বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন। উল্লেখ করেন, নতুন শুল্ক ব্যবস্থাই তিনি কার্যকর রাখবেন। তবে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে কানাডার সঙ্গে একটা বাণিজ্য চুক্তির অঙ্গীকারও করেন তিনি।
ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘আমাদের মধ্যে পার্থক্য আছে। আমি সবসময় শুল্ক আরোপের পক্ষের ব্যক্তি। এটা সহজ ও সুনির্দিষ্ট বিষয়। সঙ্গে কার্যকর। মার্ক কার্নির চিন্তা কঠিন, দেখি বাণিজ্য ইস্যুতে আমরা একটা কিছু তাও বের করবো।’
সম্মেলনে ইরানকে যেমন হুঁশিয়ারি দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ঠিক তেমনি রাশিয়ার ইউক্রেনে অভিযানের বিষয়ে সুর নরম করেও কথা বলেন। এছাড়া রাশিয়ার পাশাপাশি চীনকেও এই জোট যুক্ত করার আভাস দেন। তবে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথাও বলেন তিনি। তেহরান প্রসঙ্গে বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, ইরান পরমাণু চুক্তি করবে। সম্মেলনে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রো বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধবিরতি কার্যকরে ভূমিকা রাখতে পারে, ফ্রান্স এতে সমর্থন করে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘বারাক ওবামা ও জাস্টিন ট্রুডো চাননি রাশিয়া জি সেভেনে যোগ দিক। এটা একটা বড় ভুল ছিল। যুদ্ধই লাগতো না, যদি আমাদের জোটে রাশিয়া থাকতো। পাশাপাশি আমি যদি আগের মেয়াদেও প্রেসিডেন্ট থাকতাম।’
সম্মেলনে চূড়ান্ত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের বাণিজ্যচুক্তি। সম্মেলনের ফাঁকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ইরান কোনোভাবেই পরমাণু কর্মসূচিতে যেন এগোতে না পারে এই ব্যাপারে একমত তারা।
ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বলেন, ‘ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে উত্তেজনা রয়েছে। তা নিয়ে সবার উদ্বেগ। তবে এটি কীভাবে কমাতে পারি, কীভাবে নিরস্ত্রীকরণ করা যায় তাদের, তার ওপর সম্পূর্ণ মনোযোগ দিতে হবে।’
সম্মেলন চলাকালীন স্থানীয় সময় বিকেলে অতিথি হিসেবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আলবার্টায় এসে পৌঁছান। কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির সঙ্গে সাইড লাইন বৈঠকে অংশ নেবেন তিনি। আলোচনা করবেন, অটোয়া-নয়াদিল্লির বাণিজ্য সম্প্রসারণের বিষয়ে।