ঢাকা ০৬:৫১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫, ৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी
ব্রেকিং নিউজ ::
ইসরায়েল ও ইরানের সংঘাত: বাংলাদেশিদের জন্য হটলাইন সেবা চালু করেছে দুতাবাস। ইরানে বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিকদের + ৯৮৯908577368 ও + ৯৮৯১22065745 নম্বরে (হোয়াটসঅ্যাপ সহ) যোগাযোগ করতে বলেছে দূতাবাস কর্তৃপক্ষ।

মশার উপদ্রব, ডেঙ্গু নিয়ে উদ্বিগ্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০২:০৭:৩১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫
  • / ৩৫৩ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

দেশজুড়ে ডেঙ্গু পরিস্থিতির অবনতির মধ্যেই প্রথম ধাপে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ক্লাস শুরু হয়েছে। প্রাথমিক-মাধ্যমিক, কারিগরি প্রতিষ্ঠানগুলো খুলবে আগামী ২২ জুন। অথচ ঈদের দীর্ঘ ছুটিতে ক্যাম্পাসগুলো পরিণত হয়েছে মশার উর্বর ভূমিতে। এ নিয়ে উদ্বিগ্ন অভিভাবকসহ কলেজ কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) থেকে নানা নির্দেশনা দেয়া হলেও তা মানা হচ্ছে না।

ড্রেনে জমে আছে স্বচ্ছ পানি। যেখানে মশার লার্ভার জলকেলি। পরিপক্ব মশার উপস্থিতিতিও স্পষ্ট। এমন দৃশ্য ঢাকা কলেজ আঙ্গিনার। ঈদের দীর্ঘ ছুটি শেষে ক্লাস শুরু হলেও অপ্রস্তুত ক্যাম্পাস।

শিক্ষার্থীদের মধ্যে একজন বলেন, ‘এই মশার কারণে আমরা দিনের বেলাও ঘুমাতে পারি না। আবর্জনার বিষয়ে হল প্রোভোস্টকে যখন জানানো হয় তখন একজন বললেন মশার কামড়ে এখন পর্যন্ত কেউ মারা যায়নি।’

ঢাকা কলেজের সহযোগী অধ্যাপক মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘পুরো ক্যাম্পাস এক সপ্তাহের মধ্যেই একেবারে পরিষ্কার করার একটা কার্যক্রম আমরা হাতে নিয়েছি।’

কলেজ অধ্যক্ষও জানালেন, পর্যায়ক্রমে পরিচ্ছন্নতা অভিযান করা হবে।

ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক এ কে এম ইলিয়াস বলেন, ‘আমাদের পর্যাপ্ত লোক নেই। ছাত্রদের আরও একটু সচেতন থাকতে হবে যেন যত্রতত্র তারা ময়লা না ফেলে। মশক নিধন ও পরিচ্ছন্নতা কর্যক্রম আমরা করে থাকি। এবার ক্যাম্পাস খোলার দিনই মশার ওষুধ দেয়া হয়েছে একবার।’

আজিমপুর গভর্নমেন্ট গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ দেখা যায় শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি। ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের মধ্যেই ২২ জুন শুরু হচ্ছে স্কুল পর্যায়ের ক্লাস। যা নিয়ে উদ্বিগ্ন খোদ কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. ছালাহ্ ইদ্দীন।

তিনি বলেন, ‘এ সময়টা প্রতিবছরই খারাপ যায়। সিটি করপোরেশনকে আমরা অনুরোধ করেছি তারা যেন এ ব্যাপারে আমাদের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়। বিশেষ করে মশক নিধনে তাদের যে সুযোগ আছে সেটা যেন ব্যবহার করে।’

এরইমধ্যে দেশজুড়ে ডেঙ্গু পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা জোরদার করতে বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছে মাউশি। ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইনসহ করোনা প্রতিরোধে পাঁচটি স্বাস্থ্যবিধি মানার নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে।

বছরের সবচেয়ে উষ্ণ মাস এপ্রিল হলেও চলতি বছরের এপ্রিলে থেমে থেমে বৃষ্টি ছিল। অন্যদিকে মে মাসে বৃষ্টি হয়েছে স্বাভাবিকের চেয়ে ৬৩ শতাংশ বেশি। জুনে তাপপ্রবাহ থাকলেও অনেক স্থানেই বৃষ্টি হচ্ছে। যা এডিসের বিস্তারে সহায়ক বলছেন গবেষকরা।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ববিদ ও অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার বলেন, ‘দীর্ঘ ঈদ ছুটির কারণে অনেক জায়গাতেই এখন বাড়িতে মানুষজন কম থাকার কারণে এডিস মশারর প্রজনন আমরা অনেক বেশি পাচ্ছি। এ বছর এডিশ মশার কারণে ডেঙ্গু এবং চিকনগুনিয়া বাড়ার একটা সম্ভাবনা আছে।’

চলতি জুন মাসের প্রথম ১৫ দিন যত রোগী মশাবাহিত এ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন, তা আগের মাসের আক্রান্তের প্রায় সমান। হাসপাতালে ভর্তি ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের দেখা যাচ্ছে নতুন নতুন উপসর্গও।

ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড হাসপাতালের ট্রায়াজ এমও ডা. মো. শাকুর আহম্মেদ বলেন, ‘অনেকেই আছে দেখা যাচ্ছে যে শরীরে র‌্যাশ হচ্ছে কিন্তু গায়ে লাগাচ্ছে না। পরে দেখা যায় যে তার ব্লিডিং ম্যানিফেস্টেশন হতে পারে। তার নাক দিয়ে রক্ত পড়তে পারে, তার কালো পায়খানা হতে পারে। এগুলো তাদের জন্য অ্যালার্মিং সাইন।’

দেশে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মোট আক্রান্তের ২৩ শতাংশ ঢাকার দুই সিটিতে। বাকি আক্রান্তরা ঢাকার বাইরের।

নিউজটি শেয়ার করুন

মশার উপদ্রব, ডেঙ্গু নিয়ে উদ্বিগ্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

আপডেট সময় : ০২:০৭:৩১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫

দেশজুড়ে ডেঙ্গু পরিস্থিতির অবনতির মধ্যেই প্রথম ধাপে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ক্লাস শুরু হয়েছে। প্রাথমিক-মাধ্যমিক, কারিগরি প্রতিষ্ঠানগুলো খুলবে আগামী ২২ জুন। অথচ ঈদের দীর্ঘ ছুটিতে ক্যাম্পাসগুলো পরিণত হয়েছে মশার উর্বর ভূমিতে। এ নিয়ে উদ্বিগ্ন অভিভাবকসহ কলেজ কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) থেকে নানা নির্দেশনা দেয়া হলেও তা মানা হচ্ছে না।

ড্রেনে জমে আছে স্বচ্ছ পানি। যেখানে মশার লার্ভার জলকেলি। পরিপক্ব মশার উপস্থিতিতিও স্পষ্ট। এমন দৃশ্য ঢাকা কলেজ আঙ্গিনার। ঈদের দীর্ঘ ছুটি শেষে ক্লাস শুরু হলেও অপ্রস্তুত ক্যাম্পাস।

শিক্ষার্থীদের মধ্যে একজন বলেন, ‘এই মশার কারণে আমরা দিনের বেলাও ঘুমাতে পারি না। আবর্জনার বিষয়ে হল প্রোভোস্টকে যখন জানানো হয় তখন একজন বললেন মশার কামড়ে এখন পর্যন্ত কেউ মারা যায়নি।’

ঢাকা কলেজের সহযোগী অধ্যাপক মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘পুরো ক্যাম্পাস এক সপ্তাহের মধ্যেই একেবারে পরিষ্কার করার একটা কার্যক্রম আমরা হাতে নিয়েছি।’

কলেজ অধ্যক্ষও জানালেন, পর্যায়ক্রমে পরিচ্ছন্নতা অভিযান করা হবে।

ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক এ কে এম ইলিয়াস বলেন, ‘আমাদের পর্যাপ্ত লোক নেই। ছাত্রদের আরও একটু সচেতন থাকতে হবে যেন যত্রতত্র তারা ময়লা না ফেলে। মশক নিধন ও পরিচ্ছন্নতা কর্যক্রম আমরা করে থাকি। এবার ক্যাম্পাস খোলার দিনই মশার ওষুধ দেয়া হয়েছে একবার।’

আজিমপুর গভর্নমেন্ট গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ দেখা যায় শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি। ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের মধ্যেই ২২ জুন শুরু হচ্ছে স্কুল পর্যায়ের ক্লাস। যা নিয়ে উদ্বিগ্ন খোদ কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. ছালাহ্ ইদ্দীন।

তিনি বলেন, ‘এ সময়টা প্রতিবছরই খারাপ যায়। সিটি করপোরেশনকে আমরা অনুরোধ করেছি তারা যেন এ ব্যাপারে আমাদের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়। বিশেষ করে মশক নিধনে তাদের যে সুযোগ আছে সেটা যেন ব্যবহার করে।’

এরইমধ্যে দেশজুড়ে ডেঙ্গু পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা জোরদার করতে বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছে মাউশি। ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইনসহ করোনা প্রতিরোধে পাঁচটি স্বাস্থ্যবিধি মানার নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে।

বছরের সবচেয়ে উষ্ণ মাস এপ্রিল হলেও চলতি বছরের এপ্রিলে থেমে থেমে বৃষ্টি ছিল। অন্যদিকে মে মাসে বৃষ্টি হয়েছে স্বাভাবিকের চেয়ে ৬৩ শতাংশ বেশি। জুনে তাপপ্রবাহ থাকলেও অনেক স্থানেই বৃষ্টি হচ্ছে। যা এডিসের বিস্তারে সহায়ক বলছেন গবেষকরা।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ববিদ ও অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার বলেন, ‘দীর্ঘ ঈদ ছুটির কারণে অনেক জায়গাতেই এখন বাড়িতে মানুষজন কম থাকার কারণে এডিস মশারর প্রজনন আমরা অনেক বেশি পাচ্ছি। এ বছর এডিশ মশার কারণে ডেঙ্গু এবং চিকনগুনিয়া বাড়ার একটা সম্ভাবনা আছে।’

চলতি জুন মাসের প্রথম ১৫ দিন যত রোগী মশাবাহিত এ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন, তা আগের মাসের আক্রান্তের প্রায় সমান। হাসপাতালে ভর্তি ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের দেখা যাচ্ছে নতুন নতুন উপসর্গও।

ডিএনসিসি ডেডিকেটেড কোভিড হাসপাতালের ট্রায়াজ এমও ডা. মো. শাকুর আহম্মেদ বলেন, ‘অনেকেই আছে দেখা যাচ্ছে যে শরীরে র‌্যাশ হচ্ছে কিন্তু গায়ে লাগাচ্ছে না। পরে দেখা যায় যে তার ব্লিডিং ম্যানিফেস্টেশন হতে পারে। তার নাক দিয়ে রক্ত পড়তে পারে, তার কালো পায়খানা হতে পারে। এগুলো তাদের জন্য অ্যালার্মিং সাইন।’

দেশে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মোট আক্রান্তের ২৩ শতাংশ ঢাকার দুই সিটিতে। বাকি আক্রান্তরা ঢাকার বাইরের।