হোলি আর্টিজানে হামলা: ৭ জনের আমৃত্যু কারাদণ্ডের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ

- আপডেট সময় : ১২:৫৯:২৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫
- / ৩৫৪ বার পড়া হয়েছে

প্রায় ৯ বছর আগে রাজধানীর গুলশানে অবস্থিত হোলি আর্টিজান বেকারিতে সংঘটিত ভয়াবহ জঙ্গি হামলার ঘটনায় সাত আসামিকে আমৃত্যু কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দিয়ে দেওয়া হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়েছে। মঙ্গলবার (১৭ জুন) ২২৯ পৃষ্ঠার এই রায়টি সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
রায়ে বলা হয়েছে, “আলোচ্য হত্যাকাণ্ডের নির্মমতা, নৃশংসতা, ঘটনাস্থলে সন্ত্রাসীদের নিষ্ঠুর আচরণ এবং এই ঘটনার ফলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি যেভাবে ক্ষুণ্ণ হয়েছে, তা বিবেচনায় নিয়ে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে আসামিদের প্রত্যেককে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি।”
এর আগে ২০২৩ সালের ১০ অক্টোবর বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। বিচারিক আদালত ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর এই মামলায় সাত আসামিকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছিল, যা আপিলে আমৃত্যু কারাদণ্ডে পরিবর্তন করা হয়।
আমৃত্যু কারাদণ্ড পাওয়া সাত জঙ্গি হলেন:
১. রাকিবুল হাসান ওরফে রিগ্যান, ২. মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজীব গান্ধী ৩. আসলাম হোসেন ওরফে র্যাশ, ৪. হাদিসুর রহমান, ৫. আবদুস সবুর খান ওরফে সোহেল মাহফুজ, ৬. মামুনুর রশীদ ওরফে রিপন, ৭. শরিফুল ইসলাম খালেদ।
২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে সশস্ত্র জঙ্গিরা দেশি-বিদেশি অতিথিদের জিম্মি করে নির্মমভাবে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে ২২ জনকে। নিহতদের মধ্যে ছিলেন ইতালির ৯ জন, জাপানের ৭ জন, ভারতের ১ জন এবং বাংলাদেশি ৩ জন নাগরিক। সেদিন অভিযানে অংশ নিতে গিয়ে জঙ্গিদের বোমা হামলায় শহীদ হন পুলিশের দুই কর্মকর্তা।
পূর্ণাঙ্গ রায়ে আরও বলা হয়েছে, জঙ্গিদের এই হামলা পূর্বপরিকল্পিত ছিল এবং আসামিরা ষড়যন্ত্র, অর্থ ও অস্ত্র সংগ্রহ, সদস্য নিয়োগ এবং গোপন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডে প্ররোচনা দিয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় তারা হত্যাকাণ্ড সংঘটনে সক্ষম হয়েছে, যা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে পেরেছে প্রসিকিউশন।
সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ৬(২)(আ) ধারায় অভিযুক্তদের দোষী সাব্যস্ত করে হাইকোর্ট উল্লেখ করেছে—এ রায়ের মাধ্যমে দেশের মানুষ এবং আন্তর্জাতিক মহলে ন্যায়বিচারের বার্তা পৌঁছে যাবে।