ডেঙ্গুতে নাকাল বরগুনা: আক্রান্ত ছাড়ালো ২ হাজার

- আপডেট সময় : ০৪:২৬:১৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৮ জুন ২০২৫
- / ৩৫৭ বার পড়া হয়েছে

ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা থামছেই না দেশের ডেঙ্গু হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত বরগুনায়। এ পর্যন্ত বরগুনায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২ হাজারের বেশি। এই সুযোগে ডায়াগনস্টিক সেন্টারে বাড়তি অর্থ আদায়সহ ভুল পরীক্ষা-নিরীক্ষার অভিযোগ করছেন রোগী ও স্বজনরা। এদিকে, ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ায় সুযোগ নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরাও। বাড়িয়েছেন মশা তাড়ানোর কয়েলের দাম। এতে বিপাকে জেলার নিম্ন আয়ের মানুষ।
বরগুনার হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত গৌরিচন্না ইউনিয়নের বাসিন্দা তাহমিনা আক্তার। ডেঙ্গু আক্রান্ত ১৩ বছরের সন্তান মুসাকে নিয়ে দুঃচিন্তায় দিন পার করছেন সদর হাসপাতালে। গত ১৬ জুন ২-৩ ঘণ্টার ব্যবধানে অ্যাপোলো ডায়াগনস্টিক, উপকূল ডায়গনস্টিক ও সদর হাসপাতালে ডেঙ্গু পরীক্ষা করান। তবে একেক প্রতিষ্ঠানের আলাদা আলাদা রিপোর্টে হতাশ তাহমিনা।
তাহমিনা জানান, একেক জায়গায় একেক রকম রিপোর্ট আসে। কিভাবে বুঝবো কোনটা সঠিক।
জেলায় ১২০টির বেশি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে। যাদের বেশিরভাগই নেই সরকারি অনুমোদন। মানহীন এসব ডায়াগনস্টিকের বিরুদ্ধে রয়েছে বাড়তি অর্থ নেয়ার অভিযোগ।
ভুক্তভোগীরা জানান, এক জায়গায় পরীক্ষা করিয়ে এক হাজার টাকা নিয়েছে, আরেক জায়গায় পরীক্ষা করাতে এক হাজার চার শ’ টাকা নিয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, চাপ বেড়ে যাওয়ায় ডেঙ্গু পরীক্ষা নিরীক্ষার ক্ষেত্রে বেড়েছে বাড়তি চাপ।
বরগুনা সদর হাসপাতালের আবাসিক কর্মকর্তা ডা. তাজকিয়া সিদ্দিকাহ বলেন, ‘এই রকম মহামারিতে এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ব্যবসা করা এইটা তো প্রতারণা। এটার ব্যাপারে আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে।’
বরগুনা প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আবুল হাসান বলেন, ‘ডায়াগনস্টিক সমিতির একটা মূল্য তালিকা আছে। এই মূল্য তালিকার বাইরে যদি কেউ নেয় তাহলে তার বিরুদ্ধে সমিতি থেকে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
প্রতিনিয়ত বেড়েই চলছে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা। বেড়েছে মৃত্যুও। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে ব্যবসায়ীরা বাড়িয়েছেন মশার কয়েল ও মশা তাড়ানোর সরঞ্জামের দাম। এতে বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ।
ভুক্তভোগীরা জানান, ছোট ছোট বাচ্চাদের মশারি দিয়েও রাখা যাচ্ছে না। অনেক সমস্যা হচ্ছে। এক প্যাকেট কয়েল কিনতে গেলে ৮০ টাকা বা ১০০ টাকা লাগে। স্প্রের দাম ৭০০ টাকা। এত টাকা দিয়ে এসব কেনার সামর্থ্য তো কারোর নেই।
অসাধু ব্যবসায়ী ও মানহীন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিকের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের আশ্বাস পৌর প্রশাসক ও সিভিল সার্জনের।
বরগুনা পৌর প্রশাসক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক অনিমেষ বিশ্বাস বলেন, ‘অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক যেগুলো আছে, যাদের বিরুদ্ধে মানহীন রিপোর্ট দেয়ার অভিযোগ আছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ আবুল ফাত্তাহ বলেন, ‘আমাদের কাছে যদি অভিযোগ আসে মানহীন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিকের বিরুদ্ধে তাহলে আমরা জেলা প্রশাসকের সাহায্যে জেলা বিচার বিভাগের সাহায্যে ওইগুলো বন্ধ করে দেব।’