ফিলিপাইনের জনপ্রিয় খেলা মোরগের লড়াইয়ে ফিক্সিংয়ের জেরে ৩৪ জনকে হত্যা করে আগ্নেয়গিরির হ্রদে পুঁতে রাখা হয়েছে বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। আজ থেকে তিন বছর আগে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। ওই সময় এই ৩৪ জনকে অপহরণের দায়ে মামলা করা হয়েছিল। সেই মামলায় সন্দেহভাজন এক আসামি সম্প্রতি জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তিদের মেরে পুঁতে ফেলা হয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, এই তথ্য জানার পর এরই মধ্যে তদন্তে নেমেছে কর্তৃপক্ষ। জানা যায়, তিন বছর আগে মোরগ লড়াইয়ের একটি খেলাকে ঘিরে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এই ৩৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তারা এতে প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন। ম্যানিলার এই ঘটনার পর থেকেই তাদেরকে আজ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। পরে এ ঘটনায় ছয়জনকে আসামি করে অপহরণ মামলা হয়।
সেই ছয়জনের মধ্যে একজন গতকাল বৃহস্পতিবার একটি টেলিভিশন চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দাবি করেন, ওই ৩৪ জনকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর তাল হ্রদে পুঁতে ফেলা হয়। ওই হ্রদের চারপাশে রয়েছে জীবন্ত আগ্নেয়গিরি।
ফিলিপাইনে বেশ জনপ্রিয় খেলা মোরগ লড়াই। তবে এটি সাধারণ কোনো মোরগের লড়াই নয়। এতে যে মোরগ অংশ নেয়, সেগুলোর পায়ে ধারালো ব্লেড যুক্ত করে দেওয়া হয়। এটি ফিলিপাইনের একটি ঐতিহ্যবাহী খেলা হলেও বর্তমানে একে ঘিরে প্রচুর ব্যবসা হয়। বেশ আলোচিত একটি খেলায় পরিণত হয়েছে মোরগের লড়াই। এর বড় কারণ, এই খেলা নিয়ে চলে ব্যাপক জুয়া।
করোনা মহামারির সময় এই খেলায় জনতার উপস্থিতিতে নিষেধাজ্ঞা দেয় ফিলিপাইনের সরকার। তবে লাইভে এতে যুক্ত হতেন অনেকে। করোনার সময়ই বরং এই খেলা আরও জমজমাট হয়েছে দেশটিতে।
বিবিসি বলছে, করোনার সময় কেবল এই খেলার লাইসেন্স দিয়েই মাসে ১ কোটি ডলার আয় করেছে ফিলিপাইন সরকার। ২০২২ সালে দেশটির সিনেটের এক তদন্তে বেরিয়ে আসে, অনলাইনে একদিনে এই খেলায় বাজি ধরা হতো সর্বোচ্চ ৫ কোটি ডলার।
কিন্তু ওই ৩৪ জন নিখোঁজ হওয়ার পর স্থানীয়ভাবে ‘ই-সাবং’ নামে পরিচিত ‘লাইভ স্ট্রিম’ মোরগের লড়াই তদন্তের আওতায় আসে এবং তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রদ্রিগো দুতার্তে পরে এগুলো নিষিদ্ধ করেন। তবে ফিলিপাইনে এখনও ঐতিহ্যবাহী মোরগ লড়াই বৈধ।