ঢাকা ১২:১৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫, ৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

জাতিসংঘে জরুরি বৈঠকে ইসরায়েলের টুটি চেপে ধরলো ৪ শক্তিধর দেশ

আর্ন্তজাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১২:৫০:৩১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ জুন ২০২৫
  • / ৩৫৭ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

চীন, পাকিস্তান, রাশিয়া ও আলজেরিয়ার অনুরোধে শুক্রবার (২০ জুন) জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের এক জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। পুরো বৈঠকজুড়ে বর্ববর ইসরায়েলের অন্যায় তুলে ধুরে কঠোর সমালোচনা করেছে পাকিস্তান, চীন, রাশিয়া ও আলজেরিয়া।

তারা সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, এই হামলা আঞ্চলিক শান্তিকে হুমকির মুখে ফেলছে এবং পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার মাধ্যমে এক বিপজ্জনক নজির স্থাপন করছে।

বৈঠকে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘ইরানের শান্তিপূর্ণ বেসামরিক পারমাণবিক স্থাপনাগুলোকেও লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে, যা আমাদের অজানা পারমাণবিক বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিতে পারে। নিরাপত্তা পরিষদ তার দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারে না এবং পরিস্থিতি নিরপেক্ষভাবে মূল্যায়ন করতে হবে।’

জাতিসংঘকে তিনি বলেন, ‘পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলা চালানো যায় না। ইরানে হামলা ও অভিযানের কার্যক্রম বন্ধ করুক।’

পশ্চিমা দেশগুলোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানির কূটনীতিকদের বক্তব্য ইসরায়েলের আগ্রাসনকে প্রশ্রয় দিচ্ছে এবং তাদের কথাবার্তা সবচেয়ে ভয়ংকর অস্ত্রের মতোই বিপজ্জনক।’

তিনি আরও বলেন, ‘রাশিয়া মনে করে, ইরানে বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে ইসরায়েলের ধারাবাহিক হামলা সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য এবং আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।’

বৈঠকে চীনের প্রতিনিধি বলেন, ‘ইসরায়েলের এই কর্মকাণ্ড আন্তর্জাতিক আইন এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের মানদণ্ড লঙ্ঘন করেছে। ইরানের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তাকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে এবং আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে বিপন্ন করেছে।’

তিনি বলেন, এই হামলা একটি বিপজ্জনক দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে; যার ভয়াবহ পরিণতি হতে পারে। শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় আরও কার্যকর ভূমিকা নিতে।’

পাকিস্তান ইসরায়েলের ‘অন্যায্য ও অবৈধ আগ্রাসনের’ কঠোর নিন্দা জানায়। পাকিস্তানি প্রতিনিধি বলেন, ‘ইসলামাবাদ ইসরায়েলের স্পষ্ট সামরিক হামলা ও আগ্রাসনের নিরঙ্কুশ নিন্দা জানায়। ইসরায়েল পুরো অঞ্চল ও তার বাইরেও শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য মারাত্মক হুমকি।’

ইসরায়েল কর্তৃক পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। গাজা উপত্যকায় মানবিক সংকটকে ইসরায়েলের আরও বিস্তৃত অস্থিরতামূলক কর্মকাণ্ডের প্রমাণ হিসেবে তুলে ধরেন তিনি।

আলজেরিয়ার জাতিসংঘ দূত ইসরায়েলের হামলাকে উসকানিমূলক ও অন্যায্য এবং জাতিসংঘ সনদের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেন।

তিনি সতর্ক করেন, ইসরায়েল একটি সার্বভৌম সদস্য রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আগ্রাসনের জন্য যা-তা ব্যাখ্যা দিয়ে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করছে। গাজায় ইসরায়েলের বর্বরতার সঙ্গে এ হামলার সংযোগ রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘যারা (ইসরায়েল) গাজায় স্বাস্থ্যব্যবস্থার পতনের জন্য দায়ী, তারা আন্তর্জাতিক মানবিক আইন রক্ষা করছে—এমন দাবি করতে পারে না।’

বৈঠকে ব্রিটেনের প্রতিনিধি বলেন, ‘সামরিক পদক্ষেপ দিয়ে ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা বন্ধ করা যাবে না। কেবল কূটনৈতিক পথে ফিরেই এই সমস্যার দীর্ঘমেয়াদি সমাধান সম্ভব। সূত্র: বার্তা সংস্থা আনাদোলু

নিউজটি শেয়ার করুন

জাতিসংঘে জরুরি বৈঠকে ইসরায়েলের টুটি চেপে ধরলো ৪ শক্তিধর দেশ

আপডেট সময় : ১২:৫০:৩১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ জুন ২০২৫

চীন, পাকিস্তান, রাশিয়া ও আলজেরিয়ার অনুরোধে শুক্রবার (২০ জুন) জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের এক জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। পুরো বৈঠকজুড়ে বর্ববর ইসরায়েলের অন্যায় তুলে ধুরে কঠোর সমালোচনা করেছে পাকিস্তান, চীন, রাশিয়া ও আলজেরিয়া।

তারা সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, এই হামলা আঞ্চলিক শান্তিকে হুমকির মুখে ফেলছে এবং পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার মাধ্যমে এক বিপজ্জনক নজির স্থাপন করছে।

বৈঠকে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘ইরানের শান্তিপূর্ণ বেসামরিক পারমাণবিক স্থাপনাগুলোকেও লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে, যা আমাদের অজানা পারমাণবিক বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিতে পারে। নিরাপত্তা পরিষদ তার দায়িত্ব এড়িয়ে যেতে পারে না এবং পরিস্থিতি নিরপেক্ষভাবে মূল্যায়ন করতে হবে।’

জাতিসংঘকে তিনি বলেন, ‘পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলা চালানো যায় না। ইরানে হামলা ও অভিযানের কার্যক্রম বন্ধ করুক।’

পশ্চিমা দেশগুলোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানির কূটনীতিকদের বক্তব্য ইসরায়েলের আগ্রাসনকে প্রশ্রয় দিচ্ছে এবং তাদের কথাবার্তা সবচেয়ে ভয়ংকর অস্ত্রের মতোই বিপজ্জনক।’

তিনি আরও বলেন, ‘রাশিয়া মনে করে, ইরানে বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে ইসরায়েলের ধারাবাহিক হামলা সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য এবং আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।’

বৈঠকে চীনের প্রতিনিধি বলেন, ‘ইসরায়েলের এই কর্মকাণ্ড আন্তর্জাতিক আইন এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের মানদণ্ড লঙ্ঘন করেছে। ইরানের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তাকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে এবং আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে বিপন্ন করেছে।’

তিনি বলেন, এই হামলা একটি বিপজ্জনক দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে; যার ভয়াবহ পরিণতি হতে পারে। শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় আরও কার্যকর ভূমিকা নিতে।’

পাকিস্তান ইসরায়েলের ‘অন্যায্য ও অবৈধ আগ্রাসনের’ কঠোর নিন্দা জানায়। পাকিস্তানি প্রতিনিধি বলেন, ‘ইসলামাবাদ ইসরায়েলের স্পষ্ট সামরিক হামলা ও আগ্রাসনের নিরঙ্কুশ নিন্দা জানায়। ইসরায়েল পুরো অঞ্চল ও তার বাইরেও শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য মারাত্মক হুমকি।’

ইসরায়েল কর্তৃক পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। গাজা উপত্যকায় মানবিক সংকটকে ইসরায়েলের আরও বিস্তৃত অস্থিরতামূলক কর্মকাণ্ডের প্রমাণ হিসেবে তুলে ধরেন তিনি।

আলজেরিয়ার জাতিসংঘ দূত ইসরায়েলের হামলাকে উসকানিমূলক ও অন্যায্য এবং জাতিসংঘ সনদের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেন।

তিনি সতর্ক করেন, ইসরায়েল একটি সার্বভৌম সদস্য রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আগ্রাসনের জন্য যা-তা ব্যাখ্যা দিয়ে বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা করছে। গাজায় ইসরায়েলের বর্বরতার সঙ্গে এ হামলার সংযোগ রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘যারা (ইসরায়েল) গাজায় স্বাস্থ্যব্যবস্থার পতনের জন্য দায়ী, তারা আন্তর্জাতিক মানবিক আইন রক্ষা করছে—এমন দাবি করতে পারে না।’

বৈঠকে ব্রিটেনের প্রতিনিধি বলেন, ‘সামরিক পদক্ষেপ দিয়ে ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা বন্ধ করা যাবে না। কেবল কূটনৈতিক পথে ফিরেই এই সমস্যার দীর্ঘমেয়াদি সমাধান সম্ভব। সূত্র: বার্তা সংস্থা আনাদোলু