ম্যাচের শুরুতেই ১০ জনের দলে পরিণত হয় রিয়াল মাদ্রিদ। সরাসরি লাল কার্ডে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন রাউল অ্যাসেন্সিও। স্বাভাবিকভাবেই এরপরের সময়টায় লস ব্লাঙ্কোসদের ওপর আক্রমণের ছড়ি ঘুরিয়েছে প্রতিপক্ষ পাচুকা। কিন্তু রিয়ালের গোলবারে ছিলেন থিবো কর্তোয়া। ক্লাব বিশ্বকাপের রেকর্ড ১০ সেইভ করে ম্যাচটা দলের পক্ষে এনেছেন এই বেলজিয়ান।
সঙ্গে জ্যুড বেলিংহাম, আর্দা গুলের এবং ফেদেরিক ভালভার্দের তিন গোল নিশ্চিত করেছে রিয়ালদের দারুণ এক জয়। নর্থ ক্যারোলাইনার শার্লটে রোববার ‘এইচ’ গ্রুপের ম্যাচটি ৩-১ গোলে জিতেছে রিয়াল মাদ্রিদ। পাচুকার একমাত্র গোলটি করেন এলিয়াস মন্তিয়েল।
রোববার (২২ জুন) নর্থ ক্যারোলাইনার শার্লটের ব্যাংক অব আমেরিকা স্টেডিয়ামে ‘এইচ’ গ্রুপের ম্যাচটিতে পাচুকাকে ৩-১ গোলের ব্যবধানে হারিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। জুড বেলিংহ্যাম ও আর্দা গিলের রিয়ালকে এগিয়ে নেওয়ার পর দ্বিতীয়ার্ধে তৃতীয় গোলটি করেন ফেদেরিকো ভালভের্দে। আর ম্যাচের শেষদিকে পাচুকার হয়ে একমাত্র গোলটি করেন এলিয়াস মন্তিয়েল।
সবশেষ মৌসুমে ব্যর্থ মিশন শেষে রিয়ালের ডাগআউট ছাড়েন কোচ কার্লো আনচেলত্তি। তার জায়গায় ক্লাব বিশ্বকাপের আগেই জার্মান ক্লাব বায়ার লেভারকুসেন ছেড়ে ক্লাবটির দায়িত্ব নেন আলোনসো। স্প্যানিশ এই কোচ এবার রিয়ালের কোচ হিসেবে প্রথম জয়ের স্বাদ পেলেন। আসরে নিজেদের প্রথম ম্যাচে সৌদি আরবের ক্লাব আল হিলালের সঙ্গে ১-১ ড্র করেছিল রিয়াল।
গত ডিসেম্বরে এই পাচুকাকে ৩-০ গোলে হারিয়ে ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপ জিতেছিল স্প্যানিশ জায়ান্টরা। এবারের লড়াইয়ে ম্যাচের ফলে অবশ্য ফুটে উঠছে না, আক্রমণে কতটা দাপট দেখিয়েছে পাচুকা। গোলের জন্য মোট ২৫টি শট নিয়ে ১১টি লক্ষ্যে রাখতে পারে তারা। যার ১০টিই সেভ করেন কোর্তোয়া। আর রিয়ালের ৮ শটের ৩টি লক্ষ্যে ছিল এবং সবকটিই সফল।
অসুস্থতার কারণে এই ম্যাচেও কিলিয়ান এমবাপ্পেকে পায়নি রিয়াল। তার ওপর ম্যাচের সপ্তম মিনিটে বড় এক ধাক্কা খায় তারা। বক্সের বাইরে প্রতিপক্ষের সালোমন রন্দনকে পেছনে থেকে টেনে ফেলে দিয়ে সরাসরি লাল কার্ড দেখেন সেন্টার-ব্যাক রাউল আসেন্সিও। প্রতিপক্ষে একজন কম থাকার সুযোগে চাপ বাড়ায় পাচুকা। করতে থাকে একের পর এক আক্রমণ।
অষ্টাদশ মিনিটে দুর্দান্ত ডাবল সেভে রিয়ালকে রক্ষা করেন কোর্তোয়া। কেনেদির শট ঠেকানোর পর কাছ থেকে বাতিস্তার প্রচেষ্টা এক হাতে আটকে দেন বেলজিয়ান গোলরক্ষক। শুরুর চাপ সামলে একটু একটু করে গুছিয়ে ওঠে রেয়াল। ৩৫তম মিনিটে ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের পাস ধরে বক্সের ভেতরে ঢুকে বাঁ পায়ের শটে বল জালে জড়ান ইংলিশ মিডফিল্ডার বেলিংহ্যাম।
সেই রেশ থাকতেই মিনিট সাতের পরেই ব্যবধান দ্বিগুণ করে ইউরোপের সফলতম দলটি। ডান দিক থেকে ট্রেন্ট অ্যালেকজান্ডার-আর্নল্ডের পাস বক্সে পেয়ে প্রথম স্পর্শে গন্সালো গার্সিয়া বল দেন গিলেরকে। নিচু শটে গোলটি করেন তুরস্কের তরুণ মিডফিল্ডার। তাতে এক জন কম নিয়ে খেলেও ২-০ গোলের লিড নিয়ে প্রথমার্ধের বিরতিতে যায় স্প্যানিশ জায়ান্টরা।
জোড়া পিছিয়ে পড়া পাচুকা ম্যাচে ফিরতে একের পর এক আক্রমণ চালায়। দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম ১৫ মিনিটের মধ্যে তিনটি দারুণ সুযোগও আসে তাদের সামনে। তবে চমৎকার সেভ করে দলের ব্যবধান ধরে রাখেন রিয়াল গোলকিপার কোর্তোয়া। বিশেষ করে, কেনেদির একটি শট এক হাতে ক্রসবারের ওপর দিয়ে পাঠানোর পর আরেকটি ঝাঁপিয়ে ঠেকান তিনি।
৭০তম মিনিটে স্কোরলাইন ৩-০ করে রিয়ালকে জয়ের পথে এগিয়ে নেন আগের ম্যাচে পেনাল্টি মিস করা ভালভের্দে। ভিনিসিয়ুসের পাস পেয়ে বক্সের বাইরে ব্রাহিম দিয়াসকে বল দিয়ে ভেতরে ঢুকে পড়েন তিনি। ছুটে গিয়ে সতীর্থের ক্রসে দারুণ ভলিতে বল জালে পাঠান উরুগুয়ের তারকা। ৮০তম মিনিটে পাচুকার হয়ে স্বান্তনাসূচক গোলটি করেন মন্তিয়েল।
ঘাম ঝরানোর এই জয়ে ‘এইচ’ গ্রুপের শীর্ষে উঠে এসেছে রিয়াল মাদ্রিদ। ২ ম্যাচে একটি করে জয় ও ড্রয়ে তাদের পয়েন্ট ৪। সমান ৪ পয়েন্ট নিয়ে গোল ব্যবধানে পিছিয়ে থাকায় রেড বুল সালসবুর্গ দুইয়ে, ২ পয়েন্ট নিয়ে আল হিলাল তিনে আছে। আর দুটিই হেরে বিদায় নিশ্চিত পাচুকার। গ্রুপের শীর্ষ দুই দল উঠবে শেষ ষোলোয়।