ঢাকা ১০:৩৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫, ১২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

সাংবাদিক গ্রেপ্তার উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নয়: আইন উপদেষ্টা

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৫:০৬:৪০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫
  • / ৩৫৮ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

দেশের নানা জায়গায় সাংবাদিকদের গ্রেপ্তার উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নয় বলে মন্তব্য করেছেন আইন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘সরকার নয়, সাধারণ মানুষের মামলায় ১৫ সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’ তাদের জামিনের ক্ষেত্রে আইন মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ নেই বলেও দাবি করেন তিনি। একই অনুষ্ঠানে প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, শেখ হাসিনা সরকার যেসব নিয়ন্ত্রণমূলক আইন করেছিল, তা এখন আর নেই।

আজ (বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ ‘গণমাধ্যমের স্বাধীনতা: সাংবাদিকদের সুরক্ষা ও আইনি কাঠামো বিশ্লেষণ’ শীর্ষক একটি সংলাপের আয়োজন করেছে।

উঠে আসে সাংবাদিকদের সুরক্ষা, বেতন ও সমসাময়িক সময়ের মামলা বাণিজ্যের কথা। এসময় আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘২৬৬ জন সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা সরকার করেনি। মামলা করেছে সাধারণ মানুষ। সাংবাদিকতার জন্য কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।’

আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, ‘জামিন দেয়ার ক্ষেত্রে আদালতের অনেকগুলো বিষয় বিবেচ্য থাকে। সেগুলোর মধ্যে একটা হচ্ছে জামিনপ্রাপ্ত ব্যক্তি বের হয়ে একই ধরনের অপরাধ করতে পারেন কি না, পালিয়ে যেতে পারেন কি না বা মামলার তদন্তের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করতে পারেন কি না।’

তিনি বলেন, ‘এসব ক্ষেত্রে যেগুলো জামিনযোগ্য অপরাধ থাকে, সেগুলো বিচারকরা বিবেচনায় নিয়ে থাকেন। আমরা আপনাদের অনেক শক্তভাবে বলতে পারি যে, আমরা আইন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের জামিন দেয়ার ব্যাপারে কোনোরকম হস্তক্ষেপ করি না, আপনাদের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলছি।’

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘গ্রেপ্তার সাংবাদিকদের জামিনের ব্যাপারে মন্ত্রনালয় কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করে না। বিচার আইন অনুযায়ী চলছে।’

আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘গণমাধ্যমে না হলেও সোশ্যাল মিডিয়ায় আমাদের সম্পর্কে কত আজেবাজে, ভিত্তিহীন, অকল্পনীয় মিথ্যাচার করা হয়! অথচ আমরা কিন্তু একটা মামলাও করিনি।’

তিনি বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বার বার বলা হয়েছে সাবস্টেনশিয়াল এভিডেন্স ছাড়া যেন কাউকে গ্রেপ্তার করা না হয়। তারপরেও এটা হয়ে থাকতে পারে। আমাদের গাফিলতি নেই এটা বলার প্রশ্নই আসে না। তবে আমরা প্রতিনিয়ত শেখার চেষ্টা করছি।’

দেশের গণমাধ্যম পুরোপুরি স্বাধীন মন্তব্য করে প্রেস সচিব বলেন, ‘গত ১০ মাসে সরকার চেষ্টা করেছে সংবাদমাধ্যমের মুখ যেন বন্ধ না হয়। তাতে সরকার সফল। কিন্তু কেউ সেদিকে লক্ষ্য না রেখে সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যা ছড়াতে ব্যস্ত।’

প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘গণমাধ্যম স্বাধীন আছে। আমরা কারো মুখ বন্ধ করার কোনো চেষ্টা করিনি। যার যা ইচ্ছা লিখছে। তবে মিথ্যা বা ডিসইনফরমেশন ছড়িয়ে অনেকে দেশের অনেক ক্ষতি করছে। গত কয়েক মাসে সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে যেন গণমাধ্যম স্বাধীন থেকে কাজ করতে পারে।’

শেখ হাসিনার সরকার ভিন্নমতকে দমন করার জন্য আইসিটি মামলায় বহুজনকে গ্রেপ্তার করে হয়রানি করে। এদেরই একজন আলোকচিত্রী শহীদুল আলম।

আসছে নির্বাচন ও কার্যকর গণতান্ত্রিক পদক্ষেপে গণমাধ্যম বড় ভুমিকা পালন করবে বলে এ অনুষ্ঠানে আশা প্রকাশ করেন বদিউল আলম মজুমদার।

বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘গণমাধ্যমে যে অরাজকতা হয়েছে এবং ন্যক্কারজনক ঘটনাগুলো ঘটেছে, এর প্রভাব কিন্তু নির্বাচনে পড়েছে। আমাদের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ধ্বংস করার ব্যাপারে একটা বিরাট ভূমিকা রেখেছে।’

তিনি বলেন, ‘গণমাধ্যমে কিন্তু আমাদের নির্বাচনী ব্যবস্থায় আমাদের যেসব ভুলত্রুটি এবং যেখানে পক্ষপাতিত্ব আছে, বাড়াবাড়ি আছে; সেখানে অতন্দ্রপ্রহরীর ভূমিকা গণমাধ্যমকেই পালন করতে হয়।’

দেশের গণমাধ্যম খাতে কাঠামোগত সংস্কারের লক্ষ্যে জাতীয় গণমাধ্যম কমিশন অধ্যাদেশ-২০২৫ এবং সাংবাদিকতার অধিকার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫ দুটি গুরুত্বপূর্ণ খসড়া অধ্যাদেশ প্রণয়ন করেছে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন।

নিউজটি শেয়ার করুন

সাংবাদিক গ্রেপ্তার উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নয়: আইন উপদেষ্টা

আপডেট সময় : ০৫:০৬:৪০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫

দেশের নানা জায়গায় সাংবাদিকদের গ্রেপ্তার উদ্দেশ্যপ্রণোদিত নয় বলে মন্তব্য করেছেন আইন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘সরকার নয়, সাধারণ মানুষের মামলায় ১৫ সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’ তাদের জামিনের ক্ষেত্রে আইন মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ নেই বলেও দাবি করেন তিনি। একই অনুষ্ঠানে প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, শেখ হাসিনা সরকার যেসব নিয়ন্ত্রণমূলক আইন করেছিল, তা এখন আর নেই।

আজ (বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ ‘গণমাধ্যমের স্বাধীনতা: সাংবাদিকদের সুরক্ষা ও আইনি কাঠামো বিশ্লেষণ’ শীর্ষক একটি সংলাপের আয়োজন করেছে।

উঠে আসে সাংবাদিকদের সুরক্ষা, বেতন ও সমসাময়িক সময়ের মামলা বাণিজ্যের কথা। এসময় আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘২৬৬ জন সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা সরকার করেনি। মামলা করেছে সাধারণ মানুষ। সাংবাদিকতার জন্য কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।’

আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, ‘জামিন দেয়ার ক্ষেত্রে আদালতের অনেকগুলো বিষয় বিবেচ্য থাকে। সেগুলোর মধ্যে একটা হচ্ছে জামিনপ্রাপ্ত ব্যক্তি বের হয়ে একই ধরনের অপরাধ করতে পারেন কি না, পালিয়ে যেতে পারেন কি না বা মামলার তদন্তের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করতে পারেন কি না।’

তিনি বলেন, ‘এসব ক্ষেত্রে যেগুলো জামিনযোগ্য অপরাধ থাকে, সেগুলো বিচারকরা বিবেচনায় নিয়ে থাকেন। আমরা আপনাদের অনেক শক্তভাবে বলতে পারি যে, আমরা আইন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের জামিন দেয়ার ব্যাপারে কোনোরকম হস্তক্ষেপ করি না, আপনাদের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলছি।’

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘গ্রেপ্তার সাংবাদিকদের জামিনের ব্যাপারে মন্ত্রনালয় কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করে না। বিচার আইন অনুযায়ী চলছে।’

আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘গণমাধ্যমে না হলেও সোশ্যাল মিডিয়ায় আমাদের সম্পর্কে কত আজেবাজে, ভিত্তিহীন, অকল্পনীয় মিথ্যাচার করা হয়! অথচ আমরা কিন্তু একটা মামলাও করিনি।’

তিনি বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বার বার বলা হয়েছে সাবস্টেনশিয়াল এভিডেন্স ছাড়া যেন কাউকে গ্রেপ্তার করা না হয়। তারপরেও এটা হয়ে থাকতে পারে। আমাদের গাফিলতি নেই এটা বলার প্রশ্নই আসে না। তবে আমরা প্রতিনিয়ত শেখার চেষ্টা করছি।’

দেশের গণমাধ্যম পুরোপুরি স্বাধীন মন্তব্য করে প্রেস সচিব বলেন, ‘গত ১০ মাসে সরকার চেষ্টা করেছে সংবাদমাধ্যমের মুখ যেন বন্ধ না হয়। তাতে সরকার সফল। কিন্তু কেউ সেদিকে লক্ষ্য না রেখে সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যা ছড়াতে ব্যস্ত।’

প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘গণমাধ্যম স্বাধীন আছে। আমরা কারো মুখ বন্ধ করার কোনো চেষ্টা করিনি। যার যা ইচ্ছা লিখছে। তবে মিথ্যা বা ডিসইনফরমেশন ছড়িয়ে অনেকে দেশের অনেক ক্ষতি করছে। গত কয়েক মাসে সরকার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছে যেন গণমাধ্যম স্বাধীন থেকে কাজ করতে পারে।’

শেখ হাসিনার সরকার ভিন্নমতকে দমন করার জন্য আইসিটি মামলায় বহুজনকে গ্রেপ্তার করে হয়রানি করে। এদেরই একজন আলোকচিত্রী শহীদুল আলম।

আসছে নির্বাচন ও কার্যকর গণতান্ত্রিক পদক্ষেপে গণমাধ্যম বড় ভুমিকা পালন করবে বলে এ অনুষ্ঠানে আশা প্রকাশ করেন বদিউল আলম মজুমদার।

বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘গণমাধ্যমে যে অরাজকতা হয়েছে এবং ন্যক্কারজনক ঘটনাগুলো ঘটেছে, এর প্রভাব কিন্তু নির্বাচনে পড়েছে। আমাদের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ধ্বংস করার ব্যাপারে একটা বিরাট ভূমিকা রেখেছে।’

তিনি বলেন, ‘গণমাধ্যমে কিন্তু আমাদের নির্বাচনী ব্যবস্থায় আমাদের যেসব ভুলত্রুটি এবং যেখানে পক্ষপাতিত্ব আছে, বাড়াবাড়ি আছে; সেখানে অতন্দ্রপ্রহরীর ভূমিকা গণমাধ্যমকেই পালন করতে হয়।’

দেশের গণমাধ্যম খাতে কাঠামোগত সংস্কারের লক্ষ্যে জাতীয় গণমাধ্যম কমিশন অধ্যাদেশ-২০২৫ এবং সাংবাদিকতার অধিকার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫ দুটি গুরুত্বপূর্ণ খসড়া অধ্যাদেশ প্রণয়ন করেছে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন।