ঢাকা ০২:০৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫, ১৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

‘প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণ না মিললে আদালত আসামিকে অব্যাহতি দিতে পারেন’

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৪:৩৪:৪৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫
  • / ৩৪৯ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ভুয়া মামলা ও মামলা বাণিজ্য বন্ধে ফৌজদারি দণ্ডবিধিতে গুরুত্বপূর্ণ সংশোধন আনা হচ্ছে। আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল জানিয়েছেন, সংশোধনের মাধ্যমে প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্টে প্রমাণ না থাকা আসামিদের বিচার শুরু হওয়ার আগেই আদালত থেকে মুক্তি দেয়া সম্ভব হবে।

রোববার (২৯ জুন) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, ‘একটা মামলা যখন তদন্তের পর্যায়ে থাকে, তখন অনেক সময় অনেকে মিথ্যা অভিযোগের কারণে বছরের পর বছর মামলা বাণিজ্যের শিকার হন। নতুন বিধানে বলা হয়েছে, পুলিশ কমিশনার বা পুলিশ সুপার যদি প্রাথমিক তদন্তে মনে করেন অভিযোগ যৌক্তিক নয়, তাহলে সেই রিপোর্ট ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জমা দিতে হবে। ম্যাজিস্ট্রেট যদি প্রমাণের অভাবে দেখেন অধিকাংশ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ নেই, তাহলে ট্রায়াল শুরুর আগেই তাদের মুক্তি দিতে পারবেন।’

আইন উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘এই সংশোধনী কার্যকর হলে আদালত ও পুলিশ প্রশাসন একসঙ্গে কাজ করে ভুয়া মামলা ও মামলা বাণিজ্য রোধে সক্ষম হবে। যদিও তদন্ত থেমে থাকবে না, তদন্ত শেষ হলে যাদের বিরুদ্ধে প্রমাণ পাওয়া যাবে তাদের নাম তদন্ত রিপোর্টে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।’

তিনি বলেন, ‘একটা হত্যা মামলা যখন দায়ের করা হয় সেটা তদন্তে দুই-চার বছর লাগে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে একধরনের মামলা বাণিজ্য থাকে। এখানে যারা আসামি হন তারা কয়েকবছর ধরে একটা আশঙ্কার মধ্যে থাকেন যে, কখন গ্রেপ্তার হবে বা মামলা বাণিজ্য হয় কিনা। সেটার থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য আমরা একটা নতুন বিধান করেছি। এই নতুন বিধানে বলা হয়েছে, পুলিশ কমিশনার, পুলিশ সুপার বা পুলিশ সুপার পদমর্যাদার কোনও পুলিশ কর্মকর্তার এখতিয়ারাধীন কোনও মামলার বিষয়ে উনার যদি মনে হয় করা যৌক্তিক, তাহলে উনি তদন্ত কর্মকর্তাকে বলতে পারেন যে মামলার তদন্তের বিষয়ে একটা প্রাথমিক রিপোর্ট দিতে। সেই প্রাথমিক রিপোর্ট যখন তদন্ত কর্মকর্তা জমা দেবেন তখন পুলিশ কমিশনার কিংবা পুলিশ সুপার তাকে বলবেন যে, এই প্রাথমিক রিপোর্ট ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জমা দিতে। জমা দেওয়ার পর ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে যদি মনে হয় মামলার মধ্যে ১০০ জনকে আসামি করা হয়েছে তার মধ্যে ৯০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগই আসলে নেই, সাক্ষ্য-প্রমাণ নেই। তাহলে ম্যাজিস্ট্রেট সঙ্গে সঙ্গে ট্রায়াল স্টেজেই ওই মামলা থেকে আসামিদের মুক্ত করে দিতে পারবেন।’

আসিফ নজরুল বলেন, ‘এই সংশোধনী কার্যকর হলে আদালত এবং পুলিশ প্রশাসন একসঙ্গে কাজ করে যেসব মামলায় গ্রেফতার বাণিজ্য বা মামলা বাণিজ্য হচ্ছে, অসংখ্য লোককে আসামি করা হচ্ছে, প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্টে যাদের বিরুদ্ধে কোনও প্রকার প্রমাণ পাওয়া যাবে না, তাদের আদালত বিচার শুরু করার আগে মুক্তি দিতে পারবে। এর ফলে ভুয়া মামলা থেকে আশা করি, রেহাই পাওয়া যাবে। তার মানে এই না যে তদন্ত থেমে থাকবে।’

তিনি বলেন, ‘তদন্ত শেষ হওয়ার স্টেজে পুলিশ যদি দেখে যাদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে তাদের কারও কারও বিরুদ্ধে আসলেই পরবর্তী সময়ে প্রমাণ পাওয়া গেছে, পুলিশ তদন্ত রিপোর্ট আদালতে জমা দেওয়ার সময় সেসব ব্যক্তির নাম অন্তর্ভুক্ত করে জমা দিতে পারবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

‘প্রাথমিক তদন্তে প্রমাণ না মিললে আদালত আসামিকে অব্যাহতি দিতে পারেন’

আপডেট সময় : ০৪:৩৪:৪৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ জুন ২০২৫

ভুয়া মামলা ও মামলা বাণিজ্য বন্ধে ফৌজদারি দণ্ডবিধিতে গুরুত্বপূর্ণ সংশোধন আনা হচ্ছে। আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল জানিয়েছেন, সংশোধনের মাধ্যমে প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্টে প্রমাণ না থাকা আসামিদের বিচার শুরু হওয়ার আগেই আদালত থেকে মুক্তি দেয়া সম্ভব হবে।

রোববার (২৯ জুন) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, ‘একটা মামলা যখন তদন্তের পর্যায়ে থাকে, তখন অনেক সময় অনেকে মিথ্যা অভিযোগের কারণে বছরের পর বছর মামলা বাণিজ্যের শিকার হন। নতুন বিধানে বলা হয়েছে, পুলিশ কমিশনার বা পুলিশ সুপার যদি প্রাথমিক তদন্তে মনে করেন অভিযোগ যৌক্তিক নয়, তাহলে সেই রিপোর্ট ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জমা দিতে হবে। ম্যাজিস্ট্রেট যদি প্রমাণের অভাবে দেখেন অধিকাংশ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ নেই, তাহলে ট্রায়াল শুরুর আগেই তাদের মুক্তি দিতে পারবেন।’

আইন উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘এই সংশোধনী কার্যকর হলে আদালত ও পুলিশ প্রশাসন একসঙ্গে কাজ করে ভুয়া মামলা ও মামলা বাণিজ্য রোধে সক্ষম হবে। যদিও তদন্ত থেমে থাকবে না, তদন্ত শেষ হলে যাদের বিরুদ্ধে প্রমাণ পাওয়া যাবে তাদের নাম তদন্ত রিপোর্টে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।’

তিনি বলেন, ‘একটা হত্যা মামলা যখন দায়ের করা হয় সেটা তদন্তে দুই-চার বছর লাগে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে একধরনের মামলা বাণিজ্য থাকে। এখানে যারা আসামি হন তারা কয়েকবছর ধরে একটা আশঙ্কার মধ্যে থাকেন যে, কখন গ্রেপ্তার হবে বা মামলা বাণিজ্য হয় কিনা। সেটার থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য আমরা একটা নতুন বিধান করেছি। এই নতুন বিধানে বলা হয়েছে, পুলিশ কমিশনার, পুলিশ সুপার বা পুলিশ সুপার পদমর্যাদার কোনও পুলিশ কর্মকর্তার এখতিয়ারাধীন কোনও মামলার বিষয়ে উনার যদি মনে হয় করা যৌক্তিক, তাহলে উনি তদন্ত কর্মকর্তাকে বলতে পারেন যে মামলার তদন্তের বিষয়ে একটা প্রাথমিক রিপোর্ট দিতে। সেই প্রাথমিক রিপোর্ট যখন তদন্ত কর্মকর্তা জমা দেবেন তখন পুলিশ কমিশনার কিংবা পুলিশ সুপার তাকে বলবেন যে, এই প্রাথমিক রিপোর্ট ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জমা দিতে। জমা দেওয়ার পর ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে যদি মনে হয় মামলার মধ্যে ১০০ জনকে আসামি করা হয়েছে তার মধ্যে ৯০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগই আসলে নেই, সাক্ষ্য-প্রমাণ নেই। তাহলে ম্যাজিস্ট্রেট সঙ্গে সঙ্গে ট্রায়াল স্টেজেই ওই মামলা থেকে আসামিদের মুক্ত করে দিতে পারবেন।’

আসিফ নজরুল বলেন, ‘এই সংশোধনী কার্যকর হলে আদালত এবং পুলিশ প্রশাসন একসঙ্গে কাজ করে যেসব মামলায় গ্রেফতার বাণিজ্য বা মামলা বাণিজ্য হচ্ছে, অসংখ্য লোককে আসামি করা হচ্ছে, প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্টে যাদের বিরুদ্ধে কোনও প্রকার প্রমাণ পাওয়া যাবে না, তাদের আদালত বিচার শুরু করার আগে মুক্তি দিতে পারবে। এর ফলে ভুয়া মামলা থেকে আশা করি, রেহাই পাওয়া যাবে। তার মানে এই না যে তদন্ত থেমে থাকবে।’

তিনি বলেন, ‘তদন্ত শেষ হওয়ার স্টেজে পুলিশ যদি দেখে যাদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে তাদের কারও কারও বিরুদ্ধে আসলেই পরবর্তী সময়ে প্রমাণ পাওয়া গেছে, পুলিশ তদন্ত রিপোর্ট আদালতে জমা দেওয়ার সময় সেসব ব্যক্তির নাম অন্তর্ভুক্ত করে জমা দিতে পারবে।