সার্কের বিকল্প জোট: চীন-পাকিস্তানের উদ্যোগে রয়েছে বাংলাদেশও

- আপডেট সময় : ০৪:২১:১৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫
- / ৩৬৬ বার পড়া হয়েছে

দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলে একটি নতুন আঞ্চলিক জোট গঠনের পরিকল্পনায় একসঙ্গে কাজ করছে চীন ও পাকিস্তান। ধারণা করা হচ্ছে, সম্ভাব্য এই জোটটি দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থার (সার্ক) বিকল্প হয়ে উঠতে পারে। এই উদ্যোগে বাংলাদেশও সম্পৃক্ত রয়েছে বলে জানা গেছে।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস ট্রিবিউন আজ সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
সংবাদমাধ্যমটি জানায়, সম্প্রতি চীনের কুনমিং শহরে অনুষ্ঠিত এক ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে চীন, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের শীর্ষ কূটনীতিকেরা অংশ নেন। মূলত এই বৈঠকই সম্ভাব্য নতুন আঞ্চলিক জোটের অংশ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, দক্ষিণ এশিয়ায় বাণিজ্য, যোগাযোগ এবং আঞ্চলিক সংহতি বাড়াতে ইসলামাবাদ ও বেইজিং বেশ কিছু মাস ধরে যৌথভাবে এই পরিকল্পনা এগিয়ে নিচ্ছে। নতুন এই ফোরামের মাধ্যমে সার্কের কার্যকারিতা হারানো অবস্থা থেকে একটি কার্যকর বিকল্প তৈরি করাই তাদের লক্ষ্য।
ত্রিপাক্ষিক বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয় ১৯ জুন, যা ভারতের নজরে আসে এবং কিছুটা উদ্বেগও তৈরি করে। এই বৈঠকের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল সার্কভুক্ত অন্যান্য দেশগুলোকে নতুন জোটে অন্তর্ভুক্ত করতে আহ্বান জানানো।
সূত্রের বরাতে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ভারতকেও নতুন এই উদ্যোগে আমন্ত্রণ জানানো হতে পারে। তবে ভারতের ভূরাজনৈতিক অবস্থান ও স্বার্থ অন্যদের তুলনায় আলাদা হওয়ায়, দিল্লির পক্ষ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া কঠিন বলেই মনে করা হচ্ছে। অন্যদিকে শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, আফগানিস্তানসহ অন্যান্য দেশ এই উদ্যোগে যোগ দিতে পারে বলে আভাস পাওয়া গেছে।
জোটের লক্ষ্য হবে বর্ধিত বাণিজ্য, আঞ্চলিক সংযুক্তি এবং মতাদর্শগতভাবে ঘনিষ্ঠ দেশগুলোর মধ্যে গভীর সম্পর্ক গড়ে তোলা।
সার্ক একসময় ‘দক্ষিণ এশিয়ার ইউরোপীয় ইউনিয়ন’ হিসেবে বিবেচিত হলেও, ভারত-পাকিস্তান বিরোধের কারণে গত এক দশক ধরে এটি কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। সর্বশেষ সার্ক সম্মেলনের আয়োজন হওয়ার কথা ছিল ২০১৬ সালে ইসলামাবাদে, তবে ভারতের বয়কট এবং বাংলাদেশের অনুপস্থিতির কারণে তা বাতিল হয়ে যায়।
এরপর থেকে সার্কের কার্যক্রম একপ্রকার স্থবির হয়ে পড়েছে। বরং সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারত সার্কের ব্যবসায়িক সুবিধাও সীমিত করেছে। এর প্রেক্ষাপটে চীন ও পাকিস্তান একটি নতুন আঞ্চলিক কাঠামো গঠনে উদ্যোগ নিয়েছে, যেখানে পারস্পরিক সহযোগিতা ও আস্থা প্রাধান্য পাবে।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, ভারত এখন সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা (এসসিও)-তে আগ্রহ হারাচ্ছে বলেই এই ধরনের বিকল্প উদ্যোগ আরও জোরালো হয়ে উঠছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গত দুইটি এসসিও সম্মেলনে অংশ নেননি। চীন, রাশিয়া, পাকিস্তানসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ এসসিও-র সদস্য হলেও, ভারতের পশ্চিমঘেঁষা নীতি সেখানে একধরনের অমিল তৈরি করছে।