সক্রিয় মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগরে বায়ু চাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা ও সমুদ্র বন্দরসমূহের উপর দিয়ে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
রোববার (৬ জুলাই) সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তর এক বিশেষ সতর্ক বার্তায় আরও জানায়, সক্রিয় মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে উত্তাল হয়ে উঠতে পারে সাগর, উপকূলীয় এলাকা ও সমুদ্রপথ। এমন পরিস্থিতিতে দেশের চারটি সমুদ্রবন্দর— চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রাকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
এ সময় উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
এদিকে দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্যও আবহাওয়ার সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে। খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলের নদীবন্দরগুলোতে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এসব এলাকায় বৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গে দমকা হাওয়া বইতে পারে বলেও পূর্বাভাসে উল্লেখ করা হয়েছে।
খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের অনেক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
সেইসঙ্গে খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে বলেও জানানো হয়। এ ছাড়া এ পূর্বাভাসে বলা হয়, সারা দেশে দিনের এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
আবহাওয়ার সিনপটিক অবস্থা সম্পর্কে বলা হয়েছে, মৌসুমী বায়ুর অক্ষের বর্ধিতাংশ রাজস্থান, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।
এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে। আগামী ১২ ঘণ্টার মধ্যে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক জানিয়েছেন, দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু সক্রিয়তার কারণে রোববার সকাল ১০টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের কোথাও কোথাও ভারি (৪৪-৮৮ মি.মি./২৪ ঘণ্টা) থেকে অতি ভারি (৮৮ মি.মি./২৪ ঘণ্টা) বর্ষণ হতে পারে।
এছাড়াও অতি ভারি বর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধসের সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সঙ্গে ভারি বর্ষণজনিত কারণে চট্টগ্রাম মহানগরীর কোথাও কোথাও অস্থায়ীভাবে জলাবদ্ধতা তৈরি হতে পারে বলেও জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।