ডিজায়ার ডু ও উসমান দেম্বেলের গোলে বায়ার্ন মিউনিখকে ২-০ গোলে হারিয়ে ক্লাব বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠেছে প্যারিস সেইন্ট জার্মেই (পিএসজি)।

ফরাসি ট্রেবল জয়ী উইলিয়ান পাচো এবং লুকাস হার্নান্দেজকে শেষ পর্যায়ে বিদায় করা হয়েছিল তবে আটলান্টায় জার্মান জায়ান্টদের পরাজিত করতে সক্ষম হয়েছিল।

গোড়ালির ইনজুরিতে হাফটাইমের ঠিক আগে জামাল মুসিয়ালাকে হারানো বুন্দেসলিগা চ্যাম্পিয়ন বায়ার্ন প্যারিসিয়ানদের সাথে তীব্র এবং এমনকি লড়াই ভাগ করে নিয়েছিল।

গত নভেম্বরে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ১-০ গোলে জয়সহ শেষ চার ম্যাচে পিএসজির বিপক্ষে টানা চার ম্যাচ জিতেছিল বায়ার্ন।

লিভারপুল ফরোয়ার্ড দিয়োগো জোটা এবং তার ভাই আন্দ্রে সিলভার সম্মানে খেলোয়াড় এবং প্রায় ৬৭ হাজার দর্শক এক মিনিট নীরবতা পালন করেন।

বিশেষ করে শুরুর দুই পর্তুগিজ খেলোয়াড় ভিতিনহা, জোয়াও নেভেস ও নুনো মেন্দেসসহ পাঁচজন পর্তুগিজ খেলোয়াড় নিয়ে পিএসজি দলের জন্য এটি একটি আবেগময় মুহূর্ত ছিল।

লুইস এনরিকে ব্যালন ডি’অর প্রার্থী ডেম্বেলেকে বেঞ্চে রেখে শুরু করেছিলেন, কারণ তিনি কোয়াড্রিসেপসের চোট থেকে ফিরে আসার জন্য অব্যাহত রেখেছিলেন, তবে বায়ার্ন প্লেমেকার মুসিয়ালা কাফ ইনজুরির পরে শুরু করার জন্য ফিট ছিলেন।

এটি এখন পর্যন্ত ফিফার প্রসারিত টুর্নামেন্টের সবচেয়ে বড় হেভিওয়েট লড়াই ছিল এবং বায়ার্ন কোচ ভিনসেন্ট কোম্পানি ম্যাচের প্রাক্কালে বলেছিলেন যে তিনি এমন একটি ম্যাচ দেখার জন্য অর্থ প্রদান করবেন যা তিনি “নিখুঁত ঝড়” হিসাবে বর্ণনা করেছেন, কারণ দলগুলির একই রকম হাই-প্রেসিং, আক্রমণাত্মক শৈলীর কারণে।

শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত মার্সিডিজ-বেঞ্জ স্টেডিয়ামটি একটি স্পন্দনশীল খেলার জন্য নিখুঁত শর্তও তৈরি করেছিল, উভয় পক্ষের দুর্দান্ত প্রতিভাবান ড্রিবলার পাশাপাশি জিয়ানলুইজি দোন্নারুম্মা এবং ম্যানুয়েল নয়্যারের দুই অভিজাত গোলরক্ষক দ্বারা আলোকিত হয়েছিল।

ডিজায়ার ডু সংকীর্ণ প্রশস্ত গুলি চালানোর সাথে সাথে উভয় পক্ষই প্রাথমিক আঘাত বিনিময় করেছিল এবং ডোন্নারুম্মা মাইকেল ওলিসের কম প্রচেষ্টা বাঁচিয়েছিল।

খভিচা কোয়ারাতস্কেলিয়া পিএসজির পাল্টা আক্রমণের পর সাইড নেটে আঘাত করার পর দোন্নারুম্মা দারুণ সেভ করে ওলিসের আরেকটি প্রচেষ্টা রুখে দেন।

বাঁ দিক থেকে ব্র্যাডলি বারকোলার বাড়ানো বল খুব কাছ থেকে ঠেকিয়ে দেন জর্জিয়ার আন্তর্জাতিক কাভারাতস্কেলিয়া নয়্যার।

দোন্নারুম্মাকে ডাকা হয়েছিল যখন আলেকজান্ডার পাভলোভিচের নিচু ক্রসটি মুসিয়ালার জন্য এড়িয়ে গিয়েছিল এবং প্রায় নীচের কর্নারটি খুঁজে পেয়েছিল, তবে ইতালিয়ানদের দ্রুত প্রতিক্রিয়ার জন্য।

প্রথমার্ধের স্টপেজ টাইমে ওলিসের ফ্রি-কিক থেকে দায়োত উপামেকানোর হেডার গোলরক্ষক কিছুই করতে পারেননি, কিন্তু ফরাসি ডিফেন্ডার অফসাইডে চলে যাওয়ায় তা বাতিল হয়ে যায়।

ইংলিশ অধিনায়ক হ্যারি কেনও কিংসলে কোমানের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পরে একটি হেডার দিয়ে বায়ার্নের পক্ষে কাছাকাছি এসেছিলেন।

মুসিয়ালা আতঙ্কের আঘাত

দুর্ভাগ্যবশত দোন্নারুম্মার সাথে সংঘর্ষের পরে পড়ে যাওয়ার সময় হাফটাইমের আগে মুসিয়ালা গোড়ালিতে মারাত্মক চোট পেয়েছিলেন, গোলরক্ষককে পরে বিরক্ত দেখাচ্ছিল।

বায়ার্নের ৩৯ বছর বয়সী স্টপার নয়্যার দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে বারকোলাকে ঠেকানোর জন্য একটি উত্তেজনাপূর্ণ সেভ করেছিলেন, যখন ফরাসি উইঙ্গার গোলে দৌড়ে গিয়ে বলটি দূরের কোণে বাঁকানোর চেষ্টা করেছিলেন।

২০ মিনিট বাকি থাকতে লুইস এনরিকে ডেম্বেলেকে ব্যবধান গড়ে দিতে এবং অতিরিক্ত সময় এড়ানোর চেষ্টা করতে পাঠান, যা একটি কঠোর মৌসুম শেষে কোনও পক্ষেরই প্রয়োজন ছিল না।

ডেম্বেলে ঠিক সেই কাজটি থেকে কয়েক ইঞ্চি দূরে চলে এসেছিলেন যখন নয়্যার তার অঞ্চলের বাইরে বল দিয়েছিলেন এবং ফরাসি ফরোয়ার্ড ফাঁকা জালে গড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন, তবে এটি পোস্টের ঠিক বাইরে চলে যায়।

শেষ পর্যন্ত ২০ বছর বয়সী ডউ কেইনকে বল ছেড়ে দিলে পিএসজি সংখ্যায় আক্রমণ করে।

পিএসজির চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের দৌড়ে লাইমলাইটে ফেটে পড়া ডু বক্সের প্রান্তে কিছুটা জায়গা করে কাছের পোস্টে নিচু শটে লক্ষ্যভেদ করেন।

৮৩ মিনিটের মাথায় পিএসজি ডিফেন্ডার পাচো লিওন গোরেৎজকাকে উঁচু ট্যাকল করলে সমতা ফেরানোর আশা জাগিয়েছিল বায়ার্নকে।

পিএসজির বদলি খেলোয়াড় হার্নান্দেজ কনুইয়ের কারণে আউট হওয়ার আগে অফসাইড পজিশন থেকে হেড করেন কেইন।

বিরতির সময় লুইস এনরিকের দল ক্রসবারে আঘাত করলে ফরাসি ফরোয়ার্ড আচরাফ হাকিমির দৌড়ে এসে জোতার প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

বুধবার নিউ জার্সির মেটলাইফ স্টেডিয়ামে সেমিফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদ অথবা বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের মুখোমুখি হবে পিএসজি।