ঢাকা ০৫:৩৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ২৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাংলা বাংলা English English हिन्दी हिन्दी

রাষ্ট্রপতির জরুরি অবস্থা জারির বিধান পরিবর্তনে দলগুলো একমত

অনলাইন ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ১১:৪৬:৫৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ জুলাই ২০২৫
  • / ৩৫১ বার পড়া হয়েছে
৭১ নিউজ বিডির সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রপতির জরুরি অবস্থা ঘোষণার ক্ষমতা ব্যবহৃত হতে পারে, তাই সংবিধানের ১৪১ অনুচ্ছেদে পরিবর্তন আনার বিষয়ে একমত রাজনৈতিক দলগুলো। এছাড়া প্রান্তিক পর্যায়ে বিচারপ্রত্যাশীদের ভোগান্তি কমিয়ে আনতে আদালত বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে উপজেলা পর্যায়ে নিম্ন আদালতের সম্প্রসারণ নিয়ে সংবিধান সংশোধনের বিষয়েও একমত হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো।

বিচারপ্রাপ্তির আশায় যারা আদালতের দ্বারস্থ হন, তাদের পদে পদে দুর্ভোগ, ভোগান্তি ও হয়রানির খবর প্রায়ই শিরোনাম হয় গণমাধ্যমে। বিচার নিয়ে জনদুর্ভোগ কমিয়ে আনতে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দশম দিনের আলোচনায় নিম্ন আদালতের বিকেন্দ্রীকরণের অংশ হিসেবে উপজেলা পর্যায়ে আদালত সম্প্রসারণের বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করে প্রায় সব রাজনৈতিক দল।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘যে স্থায়ী আদালতগুলো করা হবে সেগুলোর পূর্ণাঙ্গ অবকাঠামো যেন নির্মাণ করা হয় এবং বিচারপ্রাপ্তির সব সুযোগ-সুবিধা যেন সেখানে নিশ্চিত করা হয়।’

মধ্যাহ্নভোজের বিরতির পর আলোচনা শুরু হয় জরুরি অবস্থা নিয়ে। বিদ্যমান সংবিধানে ১৪১ অনুচ্ছেদে বলা আছে, রাষ্ট্রপতি দেশ বহিঃশত্রুর আক্রমণের শিকারে কিংবা অভ্যন্তরীণ গোলযোগে ভূ-খন্ডের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে মনে করলে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে পারবেন। এখানে এটিও বলা হয়েছে জরুরি অবস্থা চলাকালে সংবিধানের তৃতীয় ভাগে উল্লেখিত মৌলিক অধিকার রহিত করা হবে।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এএইচএম হামিদুর রহমান আজাদ বলেন, ‘বিচার কার্যক্রম-ধর্মীয় অধিকারসহ কিছু বিষয় থাকে, সেগুলো বহাল রেখে জরুরি অবস্থা ঘোষণার যে মূল উদ্দেশ্য সেটা ঠিক রাখার জন্য যতটুকু স্থগিত করা যায়, সেক্ষেত্রে আলোচনার ভিত্তিতে বা ঐকমত্যের ভিত্তিতে এটা নির্ধারিত হতে পারে।’

রাষ্ট্রপতির এমন জরুরি অবস্থা ঘোষণার ক্ষমতা যাতে কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হতে না পারে সেজন্য এ বিধান পরিবর্তনের বিষয়ে একমত হয়েছে সব রাজনৈতিক দল।

তবে জরুরি অবস্থাচলাকালে মৌলিক অধিকার যেন অক্ষুণ্ন থাকে সে বিষয়েও নীতিগতভাবে একমত হয়েছে প্রায় সব দল।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘প্রয়োজনের বিবেচনায় জেলা সদর থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে যদি কোনো উপজেলা থাকে সেখানে অবশ্যই উপজেলা আদালত স্থাপন করতে হবে, সেটাতে নীতিগত ভাবে একমত।’

বৈঠক শেষে কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বৈঠককে ফলপ্রসূ উল্লেখ করে বলেন, জরুরি অবস্থা নিয়ে সংবিধানের বিদ্যমান বিধান পরিবর্ত ও উপজেলা পর্যায়ে নিম্ন আদালত সম্প্রসারণের বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করেছে দলগুলো।

ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘কমিশনের পক্ষ থেকে আমি সুস্পষ্টভাবে বলেছি যে, কমিশন কিছু চাপিয়ে দিচ্ছে না। সব বিষয়ে একমত হওয়ারও কোনো বিষয় নেই। আমি বারবার বলেছি যে সব বিষয়ে আমরা একমত হবো না। এগুলো বাদ দিয়ে যেগুলোতে আমরা একমত হতে পারি সে জায়গুলো নিয়ে কাজ করার চেষ্টাটা আমাদের থাকতে হবে।’

কমিশন দলগুলোর আকাঙ্খা ধারণে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে বলে জানান অধ্যাপক আলী রীয়াজ। বলেন, ঐকমত্যে পৌঁছানো না পর্যন্ত সংস্কার আলোচনার ইতিবাচক এ ধারা অব্যাহত থাকবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

রাষ্ট্রপতির জরুরি অবস্থা জারির বিধান পরিবর্তনে দলগুলো একমত

আপডেট সময় : ১১:৪৬:৫৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ জুলাই ২০২৫

রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে রাষ্ট্রপতির জরুরি অবস্থা ঘোষণার ক্ষমতা ব্যবহৃত হতে পারে, তাই সংবিধানের ১৪১ অনুচ্ছেদে পরিবর্তন আনার বিষয়ে একমত রাজনৈতিক দলগুলো। এছাড়া প্রান্তিক পর্যায়ে বিচারপ্রত্যাশীদের ভোগান্তি কমিয়ে আনতে আদালত বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে উপজেলা পর্যায়ে নিম্ন আদালতের সম্প্রসারণ নিয়ে সংবিধান সংশোধনের বিষয়েও একমত হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো।

বিচারপ্রাপ্তির আশায় যারা আদালতের দ্বারস্থ হন, তাদের পদে পদে দুর্ভোগ, ভোগান্তি ও হয়রানির খবর প্রায়ই শিরোনাম হয় গণমাধ্যমে। বিচার নিয়ে জনদুর্ভোগ কমিয়ে আনতে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দশম দিনের আলোচনায় নিম্ন আদালতের বিকেন্দ্রীকরণের অংশ হিসেবে উপজেলা পর্যায়ে আদালত সম্প্রসারণের বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করে প্রায় সব রাজনৈতিক দল।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘যে স্থায়ী আদালতগুলো করা হবে সেগুলোর পূর্ণাঙ্গ অবকাঠামো যেন নির্মাণ করা হয় এবং বিচারপ্রাপ্তির সব সুযোগ-সুবিধা যেন সেখানে নিশ্চিত করা হয়।’

মধ্যাহ্নভোজের বিরতির পর আলোচনা শুরু হয় জরুরি অবস্থা নিয়ে। বিদ্যমান সংবিধানে ১৪১ অনুচ্ছেদে বলা আছে, রাষ্ট্রপতি দেশ বহিঃশত্রুর আক্রমণের শিকারে কিংবা অভ্যন্তরীণ গোলযোগে ভূ-খন্ডের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে মনে করলে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে পারবেন। এখানে এটিও বলা হয়েছে জরুরি অবস্থা চলাকালে সংবিধানের তৃতীয় ভাগে উল্লেখিত মৌলিক অধিকার রহিত করা হবে।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এএইচএম হামিদুর রহমান আজাদ বলেন, ‘বিচার কার্যক্রম-ধর্মীয় অধিকারসহ কিছু বিষয় থাকে, সেগুলো বহাল রেখে জরুরি অবস্থা ঘোষণার যে মূল উদ্দেশ্য সেটা ঠিক রাখার জন্য যতটুকু স্থগিত করা যায়, সেক্ষেত্রে আলোচনার ভিত্তিতে বা ঐকমত্যের ভিত্তিতে এটা নির্ধারিত হতে পারে।’

রাষ্ট্রপতির এমন জরুরি অবস্থা ঘোষণার ক্ষমতা যাতে কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হতে না পারে সেজন্য এ বিধান পরিবর্তনের বিষয়ে একমত হয়েছে সব রাজনৈতিক দল।

তবে জরুরি অবস্থাচলাকালে মৌলিক অধিকার যেন অক্ষুণ্ন থাকে সে বিষয়েও নীতিগতভাবে একমত হয়েছে প্রায় সব দল।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘প্রয়োজনের বিবেচনায় জেলা সদর থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে যদি কোনো উপজেলা থাকে সেখানে অবশ্যই উপজেলা আদালত স্থাপন করতে হবে, সেটাতে নীতিগত ভাবে একমত।’

বৈঠক শেষে কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বৈঠককে ফলপ্রসূ উল্লেখ করে বলেন, জরুরি অবস্থা নিয়ে সংবিধানের বিদ্যমান বিধান পরিবর্ত ও উপজেলা পর্যায়ে নিম্ন আদালত সম্প্রসারণের বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করেছে দলগুলো।

ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘কমিশনের পক্ষ থেকে আমি সুস্পষ্টভাবে বলেছি যে, কমিশন কিছু চাপিয়ে দিচ্ছে না। সব বিষয়ে একমত হওয়ারও কোনো বিষয় নেই। আমি বারবার বলেছি যে সব বিষয়ে আমরা একমত হবো না। এগুলো বাদ দিয়ে যেগুলোতে আমরা একমত হতে পারি সে জায়গুলো নিয়ে কাজ করার চেষ্টাটা আমাদের থাকতে হবে।’

কমিশন দলগুলোর আকাঙ্খা ধারণে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে বলে জানান অধ্যাপক আলী রীয়াজ। বলেন, ঐকমত্যে পৌঁছানো না পর্যন্ত সংস্কার আলোচনার ইতিবাচক এ ধারা অব্যাহত থাকবে।