রেল কোচ সংযোজনের নতুন যুগে বাংলাদেশ

- আপডেট সময় : ০২:৫০:৫৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ জুলাই ২০২৫
- / ৩৫৯ বার পড়া হয়েছে

যাত্রীবাহী রেল কোচ সংযোজনের নতুন যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এরইমধ্যে দুই হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে দেশের তিনটি বড় ও তিনটি ছোট রেল কারখানা আধুনিকায়নের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সরকার। যে কারখানগুলোতে সংযোজন বা তৈরি করা হবে নতুন কোচ। এরমধ্যে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় বছরে ৫০টি কোচ সংযোজনের লক্ষ্য রয়েছে। চলছে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের কাজ। অর্থায়ন নিশ্চিত হলে দুই বছরের মধ্যেই বাংলাদেশেই তৈরি হবে বিশ্বমানের যাত্রীবাহী রেল কোচ।
১৮৭০ সালে যাত্রা শুরু সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার। আসাম বেঙ্গল রেলওয়ের যোগাযোগ নির্বিঘ্ন রাখতে সৈয়দপুরে কারখানা তৈরি করে ব্রিটিশরা, যেখানে রেল কোচ তৈরিসহ চলতো মেরামতের কাজ। এরপর পাকিস্তান আমল পর্যন্ত এই কারখানায় তৈরি হতো কাঠের কোচ।
তবে স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে কারখানার তেমন আধুনিকায়ন হয়নি। এ কারণে কোচ নির্মাণের পরিবর্তে আমদানি নির্ভর হয়ে পড়ে বাংলাদেশ রেলওয়ে। এদিকে নব্বইয়ের দশকের শুরুতে গোল্ডেন হ্যান্ডশেক এর মাধ্যমে রেলের কর্মীদের বড় অংশই চলে যায় অবসরে। বর্তমানে কারখানাটিতে দুই হাজার ৮০০ লোকবলের বিপরীতে কাজ করছে ৩০ শতাংশেরও কম কর্মকর্তা-কর্মচারী।
দেড়শ’ বছরের পুরোনো এই কারখানাটিতে অবশেষে লাগতে যাচ্ছে আধুনিকতার ছোঁয়া। দুই হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে দেশের তিনটি বড় ও তিনটি ছোট কারখানা আধুনিকায়নের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার। সৈয়দপুর কারখানা ছাড়াও পার্বতীপুর লোকোমোটিভ, চট্টগ্রামের পাহাড়তলীর দুই বড় কারখানা এবং পার্বতীপুর, ঢাকা ও চট্টগ্রামের তিনটি ছোট কারখানা আধুনিক হলে দৃশ্যপট পাল্টে যাবে খুব শিগগিরিই।
এর মাধ্যমে, কয়েক দশক বাদে আবারও কোচ সংযোজনের যুগে প্রবেশ করবে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা। নতুন একটি ক্যারেজ কন্সট্রাকশন ওয়ার্কশপ নির্মাণ করা হবে কারখানার ভেতরেই। যেখানে প্রতি বছর সংযোজন বা তৈরি হবে ৫০টি নতুন কোচ।
সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার ঊর্ধ্বতন উপ সহকারী প্রকৌশলী মোমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের রিসোর্স রয়েছে। আমাদের জ্ঞানে, মেধা, প্রজ্ঞা সবকিছুই রয়েছে। আমরা যদি একটু সাজিয়ে নিতে পারি, আমাদের লোককে আমরা ট্রেইনআপ করতে পারি তাহলে আমাদের লোক দিয়ে আমরা ট্রেন তৈরিও করতে পারবো, মেরামতও করতে পারবো। সবকিছুই সম্ভব।’
এরইমধ্যে কয়েকবার সম্ভাব্যতা যাচাই করেছে পরিদর্শক দল। আগামী বছরের জুনের মধ্যে সম্পন্ন হবে নকশা প্রণয়নের কাজ। দুবছরের মধ্যে কোচ নির্মাণ শুরু করা যাবে বলে আশাবাদী কর্মকর্তারা।
সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার বিভাগীয় তত্ত্বাবধায়ক শাহ সুফী নুর মোহাম্মদ বলেন, ‘২০২৬ সালের জুনের মধ্যে আমাদের ডিজাইন এবং স্টিমেশনের কাজটা শেষ করার লক্ষ্য। যদি সে অনুযায়ী এগোতে পারি তাহলে আশা করি ২০২৭ সালে আমরা নতুন একটা দিগন্তে পৌঁছাবো যার মাধ্যমে আমরা সৈয়দপুর কারখানায় অ্যাসেম্বিলিং কাজটা করতে সক্ষম হবো।’
কারখানাগুলো আধুনিকায়নের জন্য বিদেশি অর্থায়নের খোঁজে রয়েছে সরকার। খুব স্বল্প সময়ের মধ্যেই সেই অর্থায়ন পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী রেল বিভাগ।