ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে নামানো হয় মালয়েশিয়ার বিমান, দোষী সাব্যস্ত রাশিয়া

- আপডেট সময় : ০৩:০১:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫
- / ৩৫৪ বার পড়া হয়েছে

একদশক আগের মামলায় ইউরোপের শীর্ষ মানবাধিকার আদালতে ধাক্কা খেল রাশিয়া। আদালত জানিয়ে দিল, যাত্রীসমেত মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের MH17 বিমানটিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে নামিয়েছিল রাশিয়া। আর তাতেই বিমানটি ভেঙে পড়ে, মারা যান ২৮৩ জন যাত্রী, ১৫ জন বিমানকর্মী। রাশিয়ার বিরুদ্ধে মোট চারটি মামলা নিয়ে হাজির হয়েছিল ইউক্রেন এবং নেদারল্যান্ডস। সেই মামলাতেই রাশিয়ার বিরুদ্ধে রায় শোনাল আদালত। (MH17 Shot Down)
ইউরোপিয়ান কোর্ট অফ হিউম্যান রাইটস রাশিয়ার বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করেছে। ২০১৪ সালের ১৭ জুলাই অ্যামস্টারডাম থেকে কুয়ালালামপুর যাওয়ার পথে ভেঙে পড়ে মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের বোয়িং ৭৭৭ বিমানটি। তদন্তে নেমে দেখা যায়, পূর্ব ইউক্রেনে বিচ্ছিন্নতাকামীদের দখলে থাকা এলাকা থেকে রাশিয়ার তৈরি Buk ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে নামানো হয় বিমানটিকে। ওই বিচ্ছিন্নতাকামীরা রাশিয়ার সমর্থক। তাই বিমান ভেঙে পড়ার জন্য রাশিয়ার ভূমিকা নিয়ে চর্চা হচ্ছিল গোড়া থেকে। কিন্তু মস্কো অভিযোগ অস্বীকার করে আসছিল এযাবৎ। (European Human Rights Court)
কিন্তু ইউরোপের মানবাধিকার আদালতের ৫০১ পাতার রায় বলছে, সমস্ত তথ্যপ্রমাণ বলছে, ইচ্ছাকৃত ভাবে MH17 বিমানটিকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়। হতেই পারে সামরিক বিমান ভেবে ভুল করা হয়েছিল। কিন্তু রাশিয়া যেভাবে আগাগোড়া দায় অস্বীকার করে আসছিল, তা আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী বলে মত বিচারপতিদের। আদালত জানিয়েছে, সঠিক তদন্ত করতে ব্য়র্থ হয় রাশিয়া, যা মৃতদের পরিবার-পরিজনদের যন্ত্রণা আরও বৃদ্ধি করে।
এর আগে, রাষ্ট্রপুঞ্জের বিমান সংস্থার তদন্তেও বিমান দুর্ঘটনার দায় রাশিয়ার কাঁধে চাপানো হয়। ইউরোপের মানবাধিকার আদালত আরও তিনটি মামলায় রাশিয়াকে দোষী সাব্য়স্ত করেছে, যার মধ্যে ইউক্রেনে খুন, অত্যাচার, ধর্ষণ, ধ্বংসলীলা চালানোর অভিযোগ রয়েছে। ইউক্রেনীয় শিশুদের অপহরণের অভিযোগও ছিল। ইউক্রেনের সাধারণ নাগরিকের মনে ভয় সঞ্চার করা, হাজার হাজার আহত নাগরিককে খুন করে রাশিয়া আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘন করেছে বলে জানান বিচারপতিরা। যুদ্ধক্ষেত্রে ধর্ষণ যখন যুদ্ধের হাতিয়ার হয়ে ওঠে, তা চরম নৃশংসতা বলে জানানো হয়।
ইউরোপের শীর্ষ মানবাধিকার আদালতের এই রায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইউক্রেনে হামলা চালালে, ২০২২ সালেই রাশিয়াকে তারা বহিষ্কার করে। তবে একাধিক অভিযোগের শুনানি অব্যাহত রাখা হয়। রাশিয়া সেই শুনানিতে উপস্থিত থাকতেও বাধ্য। নিহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া নিয়ে এখনও নির্দেশ আসা বাকি রয়েছে। যদিও ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভের দাবি, এই রায়ে অন্তঃসারশূন্য। তাঁরা মানতে বাধ্য নন। মানবাধিকার আদালতের রায়কে স্বাগত জানিয়েছে ইউক্রেন।