জাসদের মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীদের অর্ধেকই নির্বাচনে নেই
- আপডেট সময় : ০৬:৪৭:১১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১ ডিসেম্বর ২০২৩
- / ৪২০ বার পড়া হয়েছে
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৮১ জন প্রার্থীকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দিয়েছিল জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)। দলটি জানিয়েছে, নির্বাচনে তাদের ৯০ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার জাসদের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জাসদ মনোনীত ৯০ জন প্রার্থী নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকার রিটার্নিং অফিসার/সহকারী রিটার্নিং অফিসারের নিকট তাদের মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। আজ শুত্রবার থেকে দল মনোনীত প্রার্থীদের দলীয় প্রতীক মশাল বরাদ্দের চিঠি প্রদান করা শুরু হবে।
এরমধ্যে জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু কুষ্টিয়া-২ আসনে আর ফেনী-১ থেকে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার।
জাসদ আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের অন্যতম শরিকদল। জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভায় তথ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। শিরীন আখতারও ১৪ দলের প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীক নিয়ে আগে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। কুষ্টিয়া–২ এ আওয়ামী লীগ কোনো প্রার্থী না দিলেও ফেনী–১ আসনে দলটির প্রার্থী আলাউদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী।
বর্তমানে ভোটের মাঠে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সবচেয়ে পুরোনো জোট বলা যেতে পারে ১৪ দলীয় জোটকে। বিএনপি-জামায়াতকে প্রতিহত করতে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের কয়েকটি রাজনৈতিক দল নিয়ে ২০০৪ সালে গঠিত হয় রাজনৈতিক জোট কেন্দ্রীয় ১৪ দল। জোটের প্রধান শরিক আওয়ামী লীগ। শুরু থেকেই এই জোটের সমন্বয়ক ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা মোহাম্মদ নাসিম। তাঁর মৃত্যুর পর এ দায়িত্ব পান আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু।
মূলত তিনটি বিষয় মাথায় রেখে গঠন হয় ১৪ দল। এগুলো হলো—জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে অবস্থান; উন্নয়নমূলক কাজের ভিশন এবং সাংবিধানিক ধারা অব্যাহত রাখার ব্যাপারে দৃঢ় অবস্থান।
২০০৯ সালে এক–তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বৃহত্তর জোট মহাজোট ক্ষমতায় আসে। এ সময় ১৪ দলের শরিক দলগুলোর কয়েকজন নেতা মন্ত্রিসভায়ও স্থান পান। ২০১৪ সালের নির্বাচনেও এ ধারা অব্যাহত ছিল। টানা দুই মেয়াদে মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু এবং জাতীয় পার্টির (জেপি) সভাপতি আনোয়ার হোসেন মঞ্জু।
তবে ২০১৮ সালের নির্বাচনে টানা তৃতীয় মেয়াদে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর শরিক দলের কোনো নেতাই মন্ত্রিসভায় স্থান পাননি। একাদশ সংসদে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ১৭৫ জন। জোট শরিকদের মধ্যে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির ৭ জন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) ৬ জন, তরীকত ফেডারেশনের ২ জন, জাতীয় পার্টির (জেপি) ২ জন এবং বিএনএফের আছেন ১ জন সংসদ সদস্য।
এ নিয়ে জোটনেতাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের মতবিরোধ তৈরি হয়। জোটের অনেক নেতাই প্রকাশ্যে ক্ষমতাসীনদের সমালোচনাও করেন। অবশ্য বরফ গলতেও সময় লাগেনি। গত জুলাইয়ে জোটনেতারা আবার ঐক্যবদ্ধ হয়ে নির্বাচনে আসার ঘোষণা দেন। আগের মতো এবারও আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নিয়ে ভোটের মাঠে নামার ঘোষণা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ১৪ দলের নেতারা।
গত রোববার আওয়ামী লীগ ২৯৮ টি আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করার ঘোষণা দেয়। আগের নির্বাচনগুলোতে জোট শরিকদের জন্য আসন ছাড়া হলেও এবার তেমনটা দেখা যায়নি।
অবশ্য প্রার্থী ঘোষণার পর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানিয়েছিলেন, প্রয়োজনে জোটসঙ্গীদের আসন ছাড়া হবে।
গত ১৫ নভেম্বর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। তফসিল অনুযায়ী, প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১৭ ডিসেম্বর। আর ভোট হবে ৭ জানুয়ারি।